<p>যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ফিলিস্তিনপন্থিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতের আগে। সহিংসতা চলাকালে পুলিশ সময়মতো উপস্থিত না হওয়ায় সমালোচনা করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের দপ্তর।</p> <p>ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের শিবির স্থাপন করে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘অবৈধ সমাবেশ’ ঘোষণা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামলার ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, রয়টার্সের এমন জিজ্ঞাসার জবাব লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ দেয়নি বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি। নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের হস্তক্ষেপের কয়েক ঘণ্টা পর লস অ্যাঞ্জলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার এ ঘটনা ঘটে। ফিলিস্তিনপন্থিদের মধ্যে অনেক ইহুদি শিক্ষার্থীও ছিল</p> <p>ক্যাম্পাসে পুলিশ কর্মকর্তাদের ডাকার আগে মুখোশদারী ইসরায়েলপন্থি একটি দল ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। গভর্নর গ্যাভিন নিউজমের মুখপাত্র বলেছেন, ‍‘সঠিক সময়ের পুলিশ উপস্থিত না হওয়া অগ্রহণযোগ্য।’ দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলার পর গতকাল বুধবার ভোরে শতাধিক পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। ক্যাম্পাসে পুলিশকে ডাকার আগেই সেখানে মুখোশ পরিহিত ইসরায়েলপন্থী একটি গ্রুপ ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের তাবুতে হামলা চালায়। </p> <p>ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার রাতে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ডিকসন প্লাজার তাঁবু শিবিরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। কিন্তু সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন বলেছেন, আইন প্রয়োগকারীরা যথেষ্ট দ্রুত কাজ করেনি। আইন প্রয়োগকারীরা কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিল।</p> <p>আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস জানিয়েছে, ঘটনার সময় অল্প কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা থাকায় এবং তাদের সংখ্যা সংঘর্ষে জড়ানোদের চেয়ে অনেক কম হওয়ায় তারা পিছিয়ে আসে।  </p> <p>অনলাইনে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, কালো পোশাক এবং সাদা মুখোশ পরিহিত বিশাল ইসরায়েলপন্থী একটি দল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। পুলিশদের ডেকে নিয়ে আসার আগে ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য তাদের চারপাশে রাখা কাঠের বোর্ডের অস্থায়ী ব্যারিকেডগুলো ইসরায়েলপন্থি হামলাকারীরা ভাংচুর করছে।  একজন ফিলিস্তিনিপন্থী ছাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ‘আজ রাতে তারা বেশি বাড়াবাড়ি করেছে এবং সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে।’ ইসরায়েলপন্থি আক্রমণকারীরা চড়াও হওয়ার পর ফিলিস্তিনপন্থিরা তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।</p> <p>ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর জিন ব্লক জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত করবে। ফলে গ্রেপ্তার, বরখাস্ত ও বহিষ্কারের ঘটনা ঘটতে পারে।  </p> <p>এদিকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ বাড়লেও নিশ্চুপ বাইডেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই প্রথম এত বড় আকারের আন্দোলন শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে বাইডেনের প্রতিক্রিয়া জানতে চায়েছিলেন। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘যারা প্রতিবাদের নামে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন, আমি তাদের নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই বিদ্বেষ মোকাবিলা করার জন্য ইতোমধ্যে সরকার কিছু কর্মসূচিও নিয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি নিন্দা জানাচ্ছি তাদের প্রতিও, যারা বুঝতে চাইছে না যে বর্তমানে ফিলিস্তিনিরা কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।’</p> <p>সূত্র: রয়টার্স, আলঅ্যারাবিয়া</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>