<p>ভাগাভাগি হচ্ছে ভারতীয় বহুজাতিক গোষ্ঠী গোদরেজ। ১২৭ বছরের পুরনো এই ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠীর ছাতার নিচে এত দিন একসঙ্গে কাজ করত গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপ এবং গোদরেজ এন্টারপ্রাইজ গ্রুপের বহু সংস্থা। একটি বিবৃতি দিয়ে গোদরেজ গোষ্ঠী জানিয়েছে, এসব সংস্থাকে নিজেদের মধ্যে দুটি ভাগে ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।</p> <p>প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালা থেকে শুরু করে সাবান, ফ্রিজ, আলমারি, গৃহসজ্জার জিনিসপত্র, রান্না-স্নানঘরে কাজে লাগার জিনিস থেকে নির্মাণ ব্যবসাও রয়েছে গোদরেজের। টাটা গোষ্ঠীর মতো গোদরেজও ভারতীয় পরিবার নিয়ন্ত্রিত পারিবারিক ব্যবসাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সংস্থাটি শুরু হয়েছিল ১৮৯৭ সালে উকিল থেকে ব্যবসায়ী হওয়া আর্দেশির গোদরেজের হাত ধরে। পরে এই গোষ্ঠীর দায়িত্ব নেন আর্দেশিরের ভাই পিরোজশা ও তাঁর সন্তানরা। বংশানুক্রমে অধুনা গোদরেজের মালিকানা ছিল পিরোজশার নাতি আদি ও নাদির গোদরেজ (পিরোজশার ছেলে বুর্জর গোদরেজের সন্তান) এবং জামশিদ ও স্মিতা গোদরেজ ক্রিশনার (ছোট ছেলে নাভাল গোদরেজের সন্তান) হাতে। গোদরেজ গোষ্ঠীর সংস্থাগুলোকে এই চারজনের মধ্যেই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।</p> <p>আদির বয়স এখন ৮২। নাদিরের বয়স ৭৩। জামশিদ ও স্মিতার বয়স যথাক্রমে ৭৫ ও ৭৪। গোদরেজ গোষ্ঠীতে এখন তাদের পরবর্তী প্রজন্ম আদির ছেলে পিরোজশা গোদরেজ (৪২) এবং স্মিতার মেয়ে নিরিকা হোলকারও (৪২) দায়িত্ব সামলাতে শুরু করেছেন।</p> <p>নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপের অধীনে থাকা পাঁচটি লিস্টেড সংস্থা (অর্থাৎ যে সংস্থাগুলো শেয়ারবাজারে নথিভুক্ত) থাকছে আদি ও নাদিরের হাতে। এই সংস্থাগুলো হলো গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ, গোদরেজ কনজিউমার প্রডাক্টস, গোদরেজ প্রপার্টিজ, গোদরেজ অ্যাক্রোভেট এবং অ্যাজটেক লাইফসায়েন্সেস। এই সংস্থাগুলোর চেয়ারপারসন হিসেবে থাকবেন নাদির। এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারপারসন হবেন আদির ছেলে পিরোজশা। ২০২৬ সালের আগস্টে তিনিই নাদিরের উত্তরসূরি হবেন।</p> <p>অন্যদিকে গোদরেজ এন্টারপ্রাইজ গ্রুপের অধীনে থাকা আনলিস্টেড সংস্থা (যে সংস্থাগুলো শেয়ারবাজারে নথিভুক্ত নয়) গোদরেজ অ্যান্ড বয়েজের অধীনে রয়েছে অনেকগুলো ছোট ছোট সংস্থা। বিমান পরিবহন থেকে শুরু করে এয়ারোস্পেস, প্রতিরক্ষা, আসবাব, তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পে উপস্থিতি রয়েছে এদের। এই সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকবে জামশিদ গোদরেজের হাতে। তিনিই হবেন এই সংস্থাগুলোর চেয়ারপারসন ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর। এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে থাকবেন নিরিকা। জামশিদ ও স্মিতার হাতে থাকবে মুম্বাই শহরের মূল অংশে তিন হাজার ৪০০ একর জমিও।</p> <p>মালিকানার এই বদলসংক্রান্ত গোদরেজ গোষ্ঠীর বিবৃতি বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে পারিবারিকভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, গোদরেজ পরিবারের সদস্যদের ব্যাবসায়িক দর্শন ও দূরদর্শিতাকে গুরুত্ব ও মান্যতা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। আর এতে শেয়ারহোল্ডারদের সুবিধা হবে বলেও ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে গোদরেজ গোষ্ঠী।</p>