<p>‘মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লাভস পরে সামাজিক দূরত্ব মেনে নিয়মিত ট্রাফিক চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছি। শুনেছি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ট্রাফিক বিভাগের একজনসহ ছয় পুলিশ সদস্য এরই মধ্যে মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়ে অনেকেই এখন হাসপাতালে। তাতে কি, ভয় পাই না। এখনো মনমানসিকতা চাঙ্গা আছে। নিজেকে সেফ করে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। করোনাভাইরাসের এই ভয়ংকর দুর্যোগের মধ্যেও মাঠে আছি আমিসহ আমার অনেক সহকর্মী।’</p> <p>গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার বাড্ডা এলাকায় মূল সড়কের ট্রাফিক সিগন্যালে দায়িত্ব পালনের সময় এসব কথা বলেন ট্রাফিক কনস্টেবল নিরঞ্জন কুমার সরকার। এ সড়কে তাঁর মতো ট্রাফিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছিলেন সার্জেন্ট মো. নুরুল, সার্জেন্ট সাগর কুমার ঘোষসহ অনেক পুলিশ সদস্য। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা সামাজিক দূরত্ব মেনে নিয়মিত ট্রাফিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছেন। যারা অহেতুক গাড়ি নিয়ে ঘোরাঘুরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা দিচ্ছেন। এ ছাড়া মহানগরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একাধিক টিম তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।</p> <p>জানতে চাইলে ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, যারা সামাজিক দূরত্ব না মেনে, অহেতুক সড়কে গাড়ি নিয়ে ঘোরাফরা করছে, ট্রাফিক আইন মেনে চলছে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ।</p> <p>পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশেই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে মানুষের পাশে আছেন। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে অকারণে ঘোরাফেরা করাসহ সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণে গত এক মাসে সারা দেশে এক হাজার ৬৬ জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। একজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০৮টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর পরও আইন না মানার প্রবণতা রয়েছে অনেক মানুষের মধ্যে।</p> <p>ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জনসমাগম ঠেকাতে রাজধানীতে পুলিশের শতাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল থামিয়ে জনগণকে বাড়ি থেকে বের হতে নিরুৎসাহ করছে পুলিশ। তবে অধিকাংশ গাড়ির যাত্রীই হাসপাতালে যাচ্ছি, রোগী আছে—এমন কথা বলছে বা অজুহাত দেখাচ্ছে। এ কারণে দায়িত্ব পালনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।</p> <p>ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানায়, ট্রাফিক ব্যারাকে কারো সামান্য জ্বরও ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে এবং তার দুই পাশের দুই সিটের সদস্যকে আইসোলেশনে রাখা হয়। প্রত্যেক ব্যারাকেই সামাজিক দূরত্ব মেনে সদস্যদের রাখা হয়। ব্যারাকে প্রবেশ করার আগে হাত ধোয়া থেকে শুরু করে প্রতিদিন দুইবার করে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। প্রধান গেটেও তাপমাত্রা মাপা হয়। ব্যারাকের প্রতিটি ফ্লোরে সিসিটিভি আছে। কেউ সামাজিক দূরত্ব ভাঙছে কি না তাও মনিটর করা হয়। কেউ ভাঙলে তাকে ব্রিফ করা হয়।</p>