ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
নারী উদ্যোক্তা

নিলুফার ইয়াসমিনের তৈরি সুপারি খোলের তৈজস

রফিকুল ইসলাম, কাউখালী থেকে ফিরে
রফিকুল ইসলাম, কাউখালী থেকে ফিরে
শেয়ার
নিলুফার ইয়াসমিনের তৈরি সুপারি খোলের তৈজস
সুপারিগাছের পরিত্যক্ত খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব তৈজস তৈরি হচ্ছে নিলুফার ইয়াসমিনের ন্যাচারাল বিউটি নামের কারখানায়। পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার নাঙ্গুলী গ্রামে। ছবি : কালের কণ্ঠ

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় সুপারিগাছের পরিত্যক্ত খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব তৈজস তৈরি হচ্ছে, যা প্লাস্টিকের একবার ব্যবহারযোগ্য থালা-বাটির বিকল্প হিসেবে ঢাকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করা হচ্ছে।

এক বছরের বেশি সময় আগে নারী উদ্যোক্তা নিলুফার ইয়াসমিন এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন। কাউখালী সদর ইউনিয়নের নাঙ্গুলী গ্রামে তিনি গড়ে তুলেছেন ন্যাচারাল বিউটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। অর্ধশত শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে এখানে।

তাঁর এই উদ্যোগ স্বল্প দিনের হলেও এরই মধ্যে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আভাস মিলেছে।

নিলুফার জানান, খোলের ভরা মৌসুম অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এসব তৈজস বিক্রি করে তাঁর মাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আসে। অন্য সময় মাসে গড়ে ৮০ হাজার টাকা করে পান। বৃষ্টির সময় গাছ ভেজা থাকায় খোল সংগ্রহ করা ও শুকানো কঠিন হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, তাঁর বাজার মূলত ঢাকায়। বনানী ও ধানমণ্ডির ১০টির বেশি নামকরা চেইন শপ ও রেস্তোরাঁয় তাঁদের পণ্য নিয়মিত ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁরা সুপারির খোল দিয়ে প্লেট, খাবারের বক্স, নাশতার প্লেট, চায়ের কাপ, চামচসহ ১৩ ধরনের পণ্য তৈরি করছেন।

উপকূলীয় এলাকার সুপারিগাছ ঝড় থেকে ঘরবাড়ি রক্ষা করে।

তাই পিরোজপুরে প্রচুর সুপারিগাছ। বিশেষ করে কাউখালী, নাজিরপুর ও স্বরূপকাঠি উপজেলায়।

যেভাবে শুরু : নিলুফার ইয়াসমিনের জন্ম ১৯৮৮ সালে, নাঙ্গুলী গ্রামের পাশের গ্রাম কেউন্দিয়ায়। ২০০৭ সালে তিনি বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। একই বছর হাফিজুর রহমান জুয়েলকে বিয়ে করেন।

স্বামীর চাকরি সূত্রে তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ঢাকায় থাকেন নিলুফার। পরে শ্বশুরবাড়ি বরিশাল চলে আসেন। এর মধ্যে তিনি তিন সন্তানের মা হয়েছেন।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিলুফার খোল থেকে তৈজস তৈরির উদ্যোগ নেন। কাউখালীর নাঙ্গুলীতে কারখানা স্থাপন করেন। স্বামীর সহযোগিতায় চারটি মেশিন কিনে আনেন। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে তাঁর প্রায় ২৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গত বছর জুনে তিনি নারী উদ্যোক্তা হিসেবে স্বল্প সুদে সোনালী ব্যাংক কাউখালী শাখা থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন।

নিলুফার থাকেন বরিশালে, চাকরি সূত্রে তাঁর স্বামী থাকেন ঢাকায়। কারখানা পরিচালনা করেন নিলুফারের মামা ফরিদুল ইসলাম। প্রতি শুক্রবার নিলুফার স্বামীকে নিয়ে কারখানায় আসেন। নিলুফারের এক ভাই ঢাকায় বিভিন্ন দোকানে পণ্যের ফরমায়েশ নেন। সে অনুযায়ী ফরিদুল প্রতি সপ্তাহে সড়কপথে ঢাকায় পণ্য পাঠান। বর্তমানে প্রতি মাসে অন্তত ২৫ হাজার পিস পণ্য তাঁরা ঢাকায় সরবরাহ করেন। তবে আয়-ব্যয় মিলিয়ে এখনো সমান সমান বলে জানান নিলুফার। বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকলে, মেশিন ঠিকমতো চালাতে পারলে এবং পণ্যের চাহিদা বাড়লে তাঁরা লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন।   

ফেলনা থেকে আয় : কাউখালীর সাহাপুরার বাগান মালিক ইমাম হোসেন বলেন, সুপারিগাছের খোলগুলো ভিটেবাড়ির আশপাশে পড়ে থাকত। এগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার হতো বাড়ির আঙিনার বেড়া হিসেবে। এ ছাড়া রান্নাবান্নার কাজেও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হতো। এখন বিভিন্ন পণ্য তৈরির জন্য এসব কিনে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। আমরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।

লাঙ্গুলী গ্রামের গৃহবধু কল্পনা মজুমদার বলেন, সুপারির খোল বিক্রি করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে পারছি।

কারখানার শ্রমিক মিতা বড়াল বলেন, ঘর সামলানোর পর এখন কারখানায় এসে কাজ করি। এতে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ টাকা আয় হয়। যেদিন কাজ থাকে না, সেদিন বাড়ি বাড়ি সুপারিবাগানে গিয়ে খোল সংগ্রহ করি। কারখানায় গিয়ে তা বিক্রি করি।

পরিবেশকর্মী আরিফুর রহমান বলেন, সাগরসৈকত কুয়াকাটায় শীত মৌসুমে পর্যটকের বেশ আনাগোনা থাকে। তারা অনেকে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করে সৈকতে ফেলে দেয়। এতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি বলেন, সুপারির খোলে তৈরি তৈজসের বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। এসব পণ্য রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

উদ্যোক্তার স্বপ্ন ও প্রত্যাশা : নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, একটা সুপারি খোল বাগান থেকে সংগ্রহ করতে খরচ পড়ে এক টাকা। পরিবহনভাড়া, পরিষ্কার করা, শুকানো এবং কারখানা পর্যন্ত পৌঁছাতে খরচ পড়ে ছয় টাকা করে। একটি খোল দিয়ে তিনটি পণ্য তৈরি সম্ভব। একটি খোল থেকে আয় ১২ টাকা। কিন্তু প্লাস্টিকের ওয়ান টাইম পণ্যের দাম অনেক কম। তাই পরিবেশবান্ধব এই পণ্য কিছুটা কোণঠাসা।

সুপারিগাছের পণ্যের ক্রোকারিজ তৈরিকে একটি খাত হিসেবে গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেছেন এই উদ্যোক্তা।

নিলুফার বলেন, এই খাতে উদ্যোক্তা তৈরি এবং বিনিয়োগ বাড়াতে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থাসহ বিল কমিয়ে দিতে হবে। সোলারের ব্যবস্থা করা গেলে উৎপাদনে ঘাটতি হতো না। তা ছাড়া পণ্য রপ্তানিতে বিশেষ প্রণোদনা প্রয়োজন। তা না হলে প্লাস্টিকের কাছে টিকতে পারবে না এই শিল্প।

পরিবেশবান্ধব এসব পণ্যের প্রচার-প্রসারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপব্যবস্থাপক এইচ এম ফাইজুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই উনার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিক ও সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

শেয়ার
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক-বাঘাইহাই সড়ক থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

    চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।

কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

ওই জমিতে সেচ দিতে গেলে রাজু মিয়ার লোকজন বাধা দেয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান।

রৌমারী থানার ওসি লুত্ফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।

এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে।

এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে খুলনায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ বলছে, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যাময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।

ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্তব্য

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

চট্টগ্রামে অবতরণের পর ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এরপর হঠাত্ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

মন্তব্য

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

এরপর তা খুঁজে বের করতে জরুরি তল্লাশি অভিযান চলছিল বলে জানান আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলোভ। কিন্তু পরে জানানো হয়, এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। তারা বিমানের ফিউজলেজের সন্ধান পেয়েছে।

ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

এমআই-৮ হেলিকপ্টার বিমানটির ফিউজলেজ দেখতে পেয়েছে। এই হেলিকপ্টারটি পরিচালনা করে রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়াতসিয়া।

বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।

এটা হতে পারে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার একটি কারণ। সাইবেরিয়াভিত্তিক আঙ্গারা এয়ারলাইনস পরিচালিত বিমানটি চীনের সীমানা লাগোয়া আমুর অঞ্চলের তিন্দা শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এমন সময় এটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।

স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাত্ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।

তার মধ্যে পাঁচজন শিশু। তাদের সঙ্গে ছয়জন ক্রু সদস্যও ছিলেন। তিনি বলেন, বিমান অনুসন্ধানে সব প্রয়োজনীয় বাহিনী ও সরঞ্জাম মোতায়েন করা হয়।

উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।

১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহূত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহূত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।

সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ