বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম সজল। আন্দোলনে তাঁর বাঁ হাতের কবজিতে গুলি লাগে। এ ঘটনায় প্রথমে তিনি আশুলিয়া থানায়, পরে ধামরাই থানায় পৃথক দুটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। মামলা দুটিতে ঘটনাস্থল, সময় ও বিবরণে গরমিল থাকলেও কবজিতে গুলির তথ্যে মিল রয়েছে।
গুলি লাগে এক কবজিতে, দুই থানায় পৃথক দুই মামলা!
মাসুদ রানা

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী ইশরাত হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘একই ঘটনায় পৃথক দুটি থানায় মামলা করা আইনত সংগত নয়। কারণ এতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে। যদি প্রমাণিত হয় যে বাদী ইচ্ছা করে বিভ্রান্ত করতে একই ঘটনায় একাধিক মামলা করেছেন, তাহলে এটি ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২১১ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা অভিযোগ হিসেবে গণ্য হবে।
গত বছর ২০ অক্টোবর বাদী শরিফুল ইসলাম সজল শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। ওই মামলায় আরো দু-তিন শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আশুলিয়া থানায় করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছর ৫ আগস্ট সকাল ১১টায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের পক্ষে মিছিল করার জন্য আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইল বাজার এলাকায় যান শরিফুল ইসলাম সজল। তখন বাইপাইল মোড় ও আশপাশের সড়কে সাত-আট হাজার বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারী অবস্থান করছিল। তখন শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের হুকুমে অন্য আসামিদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, হকিস্টিক, লোহার পাইপ, রড, লাঠিসোঁটা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে।
ধামরাই থানায় করা মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আহত শরিফুল ইসলাম সজল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমর্থক। গত বছর ৫ আগস্ট সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে তিনিসহ আরো অনেক ছাত্র-জনতা ধামরাইয়ের থানা রোড তিন রাস্তার মোড়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উত্তর পাশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। তখন শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের হুকুমে ও নির্দেশনায় অন্য ৩৪৬ আসামিসহ অজ্ঞাতনামা অন্যরা বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক মারণাস্ত্র, রাইফেল, রিভলভার, ককটেল, ধারালো রামদা, ছুরি, চাপাতি, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তাদের ওপর এলোপাতাড়ি ককটেল নিক্ষেপ ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে তাঁর বাঁ হাতের কবজির ওপরে গুলি লাগে। তিনি মারাত্মক জখম অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকেন। পরে ছাত্র-জনতা তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মামলায় উল্লেখ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দুটি মামলায় বাদীর নাম, ঠিকানা, বয়স ও জাতীয় পরিচয়পত্রের হুবহু মিল রয়েছে। তবে এক মামলায় পিতা-মাতা দুজনের নাম উল্লেখ করলেও অন্য মামলায় শুধু পিতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে বাদী শরিফুল ইসলাম সজল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ২৮ মার্চ আমি ধামরাই থানায় একটি মামলা করেছি। তবে আশুলিয়া থানায় কোনো মামলা করিনি। অন্য কেউ প্রতারণা করে মামলাটি করেছে। আশা করছি, বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।’
সম্পর্কিত খবর

রাস্তা থেকে মাটি সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা


কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
- চার জেলায় ৪ লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এ ছাড়া বাগেরহাটে যুবদল নেতাকে হত্যার অভিযোগসহ পাঁচ জেলায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ভূন্দুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন আনোয়ার হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৪০), গোলাম শহিদের ছেলে বলু মিয়া (৫৫) ও ফুলবাবু (৫০)। তাঁরা সবাই জমি নিয়ে বিরোধে থাকা শাহাজাহান মিয়ার পক্ষের লোক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুদিন ধরে ওই এলাকার শাহাজাহান মিয়া ও রাজু মিয়ার মধ্যে ৫০ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্য কয়েকটি জেলায়ও পৃথক ঘটনায় আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাটে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরে সোহাগ সরদার (২৭) নামের যুবদলের এক নেতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিয়ের মাত্র ছয় দিনের মাথায় এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রূপা (১৮) তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী দাবি করেছেন, রূপা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় যমুনা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানকিদাহ এলাকায় নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে টাঙ্গন নদী থেকে। মৃত ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম।

বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ২৮৭ যাত্রী নিয়ে নিরাপদে চট্টগ্রামে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় উড্ডয়নের পরপরই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইট বিজি ১৪৮ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৮৭ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিল। এটি ৮টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফ্লাইটটি পুনরায় ফিরে এসে ৮টা ৫৮ মিনিটে শাহ আমানত বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, বিমানটি বিমানবন্দরের বে নম্বর-৮-এ অবস্থান করছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্য একটি ফ্লাইট বিজি ১২২-এ অনবোর্ড সম্পন্ন হয়। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুবাই থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, বিমানের ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন।

রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ৫০ আরোহীর সবাই নিহত
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাশিয়ায় ৫০ আরোহী নিয়ে একটি অ্যান-২৪ যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানানো হয়েছে, কেউই বেঁচে নেই। সিভিল ডিফেন্স, জরুরি ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছে, অ্যান-২৪ বিমানটি পরিচালনা করছিল সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা। প্রথমে বিমানটি রাডার থেকে হারিয়ে যায়।
ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি বলেছে, চীনের কাছাকাছি আমুর অঞ্চলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মতো দৃষ্টিসীমা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসে। এ কারণে বিমানটি অবতরণের চেষ্টা করে থাকতে পারেন ক্রু।
স্থানীয় জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানটি গন্তব্যের কাছাকাছি থাকাকালে হঠাৎ করে রাডারের বাইরে চলে যায়। গভর্নর অরলোভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে বিমানে ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন।
উড়োজাহাজটিতে পাঁচ শিশুসহ ৪৩ যাত্রী ও ছয় ক্রু ছিলেন বলে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ আগেই জানিয়েছিলেন। যেখানে উড়োজাহাজটি ‘রাডার থেকে হারিয়ে যায়’, সেটি রাশিয়ার তাইগা বনভূমি অঞ্চলে পড়েছে।
১৯৫০-এর দশকে নির্মিত আন্তোনভ আন-২৪ উড়োজাহাজ সাধারণত যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এখন পর্যন্ত এই মডেলের হাজারের বেশি উড়োজাহাজ তৈরি হয়েছে। রাশিয়ায় এখন সীমিত পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের উড়োজাহাজ ব্যবহৃত হয় বলে জানিয়েছে আরটি।
সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অবতরণের সময় পাইলটের ভুল এবং খারাপ দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সূত্র : রয়টার্স