<p>তরুণ কৃষকদের অনেকে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। লাভজনক হওয়ায় গত এক বছরে মৌলভীবাজারে সূর্যমুখী চাষ বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে এ বছর সূর্যমুখী চাষ হয়েছে ৫৬৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর হয়েছিল ৫৮ হেক্টর জমিতে। সাত উপজেলায় তিনটি ভেরাইটি হাইসান-৩৩, হাইসান-৩৬, নতুন বীজ আরডিএস-২৭৫ হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী চাষ হয়েছে।</p> <p>কুলাউড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর কুলাউড়ায় মোট আট হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছিল। এ বছর হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মোট ৮৭ হেক্টর জমিতে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।</p> <p>কুলাউড়ায় ভাটেরা ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় দুই বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী চাষ করেছেন কান্তি মালাকার এবং ভূকশিমইল ইউনিয়নের দক্ষিণ চক এলাকায় দুই বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন মো. বেলাল মিয়া।</p> <p>তিনি বলেন, ‘আমার পতিত দুই বিঘা কৃষিজমিতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সূর্যমুখী চাষ করেছি। আশা করছি ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফসল তুলতে পারব। সূর্যমুখী চাষে আমার মাত্র দুই হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বীজ ও সার কৃষি বিভাগ দিয়েছে। ২৫-৩০ হাজার টাকার বীজ বিক্রি করতে পারব বলে আশাবাদী।’</p> <p>সূর্যমুখী চাষি সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগে অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান তোলার পর এই জমিগুলো পতিত থাকত। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে আমরা গত বছর থেকে সূর্যমুখী চাষ করছি।’</p> <p>সূর্যমুখী চাষি এস এম উমেদ আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত বছর বীজের মূল্য কম ছিল। বাজারে প্রতি কেজি সূর্যমুখী বীজের মূল্য ছিল ৫০-৫২ টাকা। ওই সময়ে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা মূল্যে সরিষার বীজ বিক্রি হতো। কিন্তু এই অঞ্চলে সরিষার তেল ১৫০ টাকা ও সূর্যমুখীর তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এ বছর ৯০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’</p> <p>কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, এ বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। উপজেলায় প্রায় ১১০ জন কৃষককে নিয়ে প্রদর্শনী করা হয়েছে।</p> <p>মৌলভীবাজার সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ফরহাদুল হক বলেন, ফসল অনেক ভালো হয়েছে। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যাবে। প্রতি হেক্টরে দুই টন বা প্রতি বিঘায় আট মণ সূর্যমুখী বীজ পাওয়া যাবে।</p> <p>কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক কাজী লুত্ফুল বারী বলেন, অনেকেই বলছেন, তাঁরা আরো বেশি জায়গায় এই সূর্যমুখী ও সরিষা চাষ করবেন।</p>
