ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ মহররম ১৪৪৭

তরুণদের বিশ্বনেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
তরুণদের বিশ্বনেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস

চুরাশিতেও টগবগে তারুণ্যে ভরপুর তিনি। এখনো প্রাণবন্ত, কর্মমুখর। বয়সের ভারে ন্যুব্জ না হয়ে বরং তিনি তারুণ্যকে অবগাহন করেছেন। তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাসী বলেই এখনো তিনি নিজেই একজন টগবগে তরুণ।

এ জন্যই সৃজনশীলতা আর উদ্ভাবনীতে ভরপুর তিনি। সারাক্ষণ পৃথিবীর কল্যাণ নিয়ে ভাবেন। এখন তিনি বাংলাদেশের দায়িত্বে। তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুধু বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নন, তিনি বিশ্ব তারুণ্যের আইকন। তরুণদের বিশ্বনেতা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দর্শনের মূল ভিত্তি হলোতারুণ্যের অফুরন্ত শক্তিকে কাজে লাগানো। তিনি বিশ্বাস করেন, তরুণদের মেধা, চিন্তা, সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগালেই বিশ্ব বিকশিত হবে।
যুদ্ধ, হানাহানি, জলবায়ুর ঝুঁকি, দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে দরকার তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি, তাঁদের নীতিনির্ধারণে যুক্ত করা। তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা জীবন কাজ করে যাচ্ছেন ড. ইউনূস। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যা কিছু করেছেন, যা কিছু ভেবেছেন, সব কিছু তারুণ্যের স্বপ্নকে ঘিরে। আর এখন দেশ পরিচালনায় তরুণদের সামনে এনে সারা বিশ্বের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এই প্রাজ্ঞজন। আগামী দিনে বিশ্ব বদলের মডেল হবে বাংলাদেশ।

যখন বাংলাদেশ এক কঠিন সময়ে, স্বৈরাচারের জগদ্দল পাথরের পৃষ্ঠে দেশের জনগণ, মুক্তির পথ খুঁজে না পাওয়ায় হতাশা সবার মধ্যে, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের তারুণ্যের এক অভূতপূর্ব জাগরণ হলো। জুলাই বিপ্লব আসলে তারুণ্যের বিপ্লব, তাদের সম্মিলিত বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। প্রচলিত ঘুনে ধরা ব্যবস্থা, দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা আর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে তারুণ্যের প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদের ভাষা, তরুণদের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা অনেকেই বুঝতে পারেননি, এখনো পারছেন না অনেকে। কিন্তু বুঝতে পেরেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এ কারণেই তিনি তরুণদের এই আন্দোলনকে মনে-প্রাণে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তিনি জানতেন, তরুণরাই পারবেন বাংলাদেশের বুক থেকে পাথর নামাতে। অবশেষে তরুণরা যখন সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের মতো চেপে থাকা ফ্যাসিবাদের কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেন, তখন তাঁরা একজন নেতা খুঁজছিলেন, যে নেতা তরুণদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে। তরুণদের ভাবতে সময় লাগেনি। মুহূর্তের মধ্যে তাঁরা ঠিক করেন ড. ইউনূসই হবেন তাঁদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই মানুষটি নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকা স্বভাবের, প্রচার বিমুখ। তিনি নিজের কাজ নিয়ে মেতে থাকতে পছন্দ করেন। মানবতার কল্যাণে, বিশ্ব কল্যাণের জন্য তিনি আত্মোৎসর্গকারী এক প্রাণ। এ ধরনের রাজনীতির ডামাডোলের মধ্যে নিজেকে জড়াবেন? এর আগেও ২০০৭ সালে তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তৎকালীন সেনা কর্মকর্তারা। কিন্তু সেই অনুরোধ তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি সাফ বলে দিয়েছিলেন, রাজনীতি আমার কাজ নয়, আমার কাজ যেটা মানুষের কল্যাণ, সেটা আমি করছি। কিন্তু এবার তিনি মুখ ফিরিয়ে নিতে পারলেন না। না বলতে পারলেন না। এর প্রধান কারণ হলোতারুণ্যের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং তারুণ্যের প্রতি তাঁর বিশ্বাস। আর তরুণদের এই বিজয়কে চূড়ান্ত বন্দরে নেওয়ার জন্য অভিভাবকের দায়িত্ব নিলেন তিনি। ৮ আগস্ট বিমানবন্দরে নেমেই তিনি সরাসরি বললেন, তরুণদের মতামত নিতে হবে এবং সব কর্মকাণ্ডে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রে থাকবে তরুণরা। মূলত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগ্রহের কারণেই উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তরুণদের। এ নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন বটে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রে তারুণ্যর অবস্থান বিশ্বের জন্য এক অনন্য উদাহরণ। এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হঠাৎ করে কোনো সিদ্ধান্ত নয়, বরং সারা জীবন তিনি যে বিশ্বাস এবং চিন্তাকে লালন করেছেন, তারই প্রায়োগিক রূপ। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সারা জীবন তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাস করেছেন। তরুণদের ওপর নির্ভর করতে চেয়েছেন। তিনি তাঁর বক্তৃতাগুলোতে বলেছেন, তরুণরা এই পৃথিবীকে বদলে দেবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি কথা সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি সব সময় বলে থাকেন, আমাদের চিন্তা-ভাবনাগুলো সেকেলে প্রচলিত, কিন্তু তরুণরা নতুন ভাবনা নিয়ে আসে, নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসে এবং সেটি পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কর্মযজ্ঞে তরুণদের প্রতি রয়েছে এক ধরনের নির্ভরতা এবং অগাধ বিশ্বাস। তিনি তরুণদের সম্মান দেন। তাঁদের চিন্তা-ভাবনাগুলো অনুধাবন করেন। তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। একটি নতুন চিন্তাকে স্বাগত জানান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে রেখেছেন তরুণদের। তিনি সব সময় বিশ্বাস করেন, তরুণরাই পারেন, তরুণরাই পারবেন। আর এ কারণেই তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্ব তারুণ্যের কণ্ঠস্বর। কারণ তিনি তরুণদের ভাষা পড়তে পারেন, তাঁদের চিন্তাকে মূল্যায়ন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণরা জ্ঞানী, গুণী, বিজ্ঞজন এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনতে চান নানা উপলক্ষে। আর সেই আগ্রহের তালিকায় সবার ওপরে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বের ৬০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সামাজিক ব্যবসা ক্লাব রয়েছে। বিশ্বের এমন কোনো প্রান্ত নেই, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য দেননি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে আচার্য পদে সম্মানিত করা হয়েছে। বেশ কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি ভিজিটিং প্রফেসর। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে তরুণদের আইকন, বিশ্ব তরুণদের নেতা, তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিশ্বে চার হাজারেরও বেশি সামাজিক ব্যবসার ল্যাব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে, যা তরুণদের দ্বারাই পরিচালিত। মূলত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম থেকে সামাজিক ব্যবসা, সামাজিক ব্যবসা থেকে তিন শূন্য তত্ত্ব সবই তরুণদের ঘিরে।

১৯৭৪ সালে যখন তিনি ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম শুরু করেছিলেন, তখন তিনি তরুণ ছিলেন এবং নিজের ওপর আস্থা রেখেছিলেন। আমরা যদি গ্রামীণ ব্যাংকের কাঠামো বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, এখানে তারুণ্যের উদ্দীপনা এবং তারুণ্যের স্ফুরণ। তরুণরাই সৃজনশীল, তাঁরা নতুন ভাবনা ভাবতে পারেন, তাঁরা বৃত্তের বাইরে গিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন। সমাজ ও রাষ্ট্রের জঞ্জাল, আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারেন। এ জন্যই তরুণদের রাষ্ট্র পরিচালনার নেতৃত্বে আনার পক্ষে ড. ইউনূস।

ড. ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা কার্যক্রম মূলত তরুণনির্ভর। একটি কথা শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ সব সময় বলেন, তা হলো—‘তরুণরা চাকরি খুঁজবে না, তারা চাকরি দেবে। তারা একেকজন উদ্যোক্তা হবে। এই উদ্যোক্তা হওয়ার তত্ত্ব এবং উদ্যোক্তার মাধ্যমে সামাজিক ব্যবসার বিকাশই যে বিশ্বের অর্থনীতিকে বদলে দিতে পারে তা আজ সবাই স্বীকার করছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চিন্তা-ভাবনা সুদূরপ্রসারী, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। যার জন্য সাদা চোখে এই ভাবনাগুলো বোঝা যায় না। ড. ইউনূস বিশ্বাস করেন, তারুণ্যের কর্মশক্তি, তাঁদের উদ্দীপনা, তাঁদের সাহস এবং প্রবীণদের অভিজ্ঞতা মিলেমিশে একটি সুন্দর পৃথিবী বিনির্মাণ সম্ভব। সেই সুন্দর পৃথিবীর জন্য তিনি স্বপ্ন দেখেন এবং সেই স্বপ্ন যাত্রায় তিনি একজন বীর লড়াকু যোদ্ধা। এই লড়াইয়ে তিনি অনেক বিজয় অর্জন করেছেন। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের তরুণসমাজ এখন নানাভাবে হতাশাগ্রস্ত।

কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেন এ ব্যাপারে অনবদ্য সুযোগ পেয়েছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর বারবার তরুণদের উদ্দীপ্ত করছেন, তরুণদের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের মতামতকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্ত করেছেন। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী জায়গায় এনেছেন তরুণদের। আমরা এখন অনেক কিছুই নতুন দেখছি। নতুনকে গ্রহণ করতে আমাদের এক ধরনের অনভ্যস্ততা থাকে, থাকে অনীহা। কিন্তু এটিই হবে আগামীর বাংলাদেশের ভিত্তি। অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের সৃজনশীলতার মেলবন্ধনই নতুন করে বাংলাদেশ বিনির্মাণ হচ্ছে সবার অলক্ষ্যে। এর ফল আমরা পাব আরো পরে।

ড. ইউনূসের নিজের কোনো রাজনৈতিক অভিপ্রায় নেই। কিন্তু তিনি মনে করেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে গেলে তারুণ্যের সৃষ্টি সুখের উল্লাস প্রয়োজন। আর এ কারণেই তরুণদের রাজনৈতিক দলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। বয়সের ব্যারিকেড উপড়ে ফেলে তরুণদের অনুধাবন করা এবং তরুণদের হৃদস্পন্দন বুঝতে পারা একটি অনন্য যোগ্যতা। নতুন চিন্তা, নতুন পরিকল্পনাকে যাঁরা স্বাগত জানাতে পারেন, পরিবর্তনে যাঁরা ভয় পান না, তাঁরাই আধুনিক অগ্রসর মানুষ। ড. ইউনূস তেমনি একজন অগ্রসর মানুষ। তিনি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে সব সময় আগ্রহী। তরুণরা সব সময় পথ দেখান। আমরা যদি বাংলাদেশের ইতিহাস বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন এবং চব্বিশের বিপ্লবসবই তারুণ্যের জয়গাথা। কাজেই তরুণরা যে পারেন সেটি নতুন করে পরীক্ষার কিছুই নেই। বিশ্বকে বদলে দিতে পারেন তরুণরা। কিন্তু তাঁদের দিতে হবে সেই সুযোগ। সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার এক পথপ্রদর্শক হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এ কারণেই সারা বিশ্বে তরুণরা যখন এক আদর্শ হাতড়ে বেড়ান, তাঁদেরকে যখন কেউ আশাবাদী করে না, ভরসা দেয় না, তাঁদের দমিয়ে রাখতে চায়, ঠিক সে সময় একটি মুখের প্রতিছব্বি তাঁদের উদ্বেলিত করে। আর তিনি হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যিনি জীবনভর তারুণ্যের অর্গল মুক্তির গান গেয়ে যাচ্ছেন। তরুণদের মেধা, চিন্তা ও কর্মশক্তিতে যাঁর আস্থা সব সময়। আর সে কারণেই তিনি এখন বিশ্ব তারুণ্যের কণ্ঠস্বর, তারুণ্যের বিশ্বনেতা। বাংলাদেশে তরুণরা আজ চালকের আসনে। সামনে এটিই হবে বিশ্ব মডেল।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে

প্রায় দুই দশক পর জাতীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আগামীকাল শনিবার ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশ হবে। বৃহৎ পরিসরে আয়োজিত এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত দলটির নেতাকর্মীরা।

সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জামায়াত।

এতে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এতে দেশে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে, যা জনগণ মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মৌলিক সংস্কার জরুরি। কোনো ষড়যন্ত্র যেন এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। অংশ নেবেন ইসলামী দলগুলোর নেতারা, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা, জুলাই আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিরা।

গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরে আমাদের দল নানা নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার কিছুটা ফিরে এসেছে।

তিনি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে ফ্যাসিবাদী হামলায় নিহত ব্যক্তিদের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি চান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াত। দলটির পক্ষ থেকে এ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

জুলাই মাসে নিহত ও আহতদের পুনর্বাসন এখনো সম্পূর্ণ হয়নি বলেও দাবি করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল।

তিনি বলেন, বিষয়টি জাতীয় সমাবেশে জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে।

তিনি জানান, সমাবেশ সফল করতে একটি বাস্তবায়ন কমিটিসহ আটটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ মাইক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে সমাবেশের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

সমাবেশে থাকবে ২০টি পয়েন্টে প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক। ঢাকার আশপাশ থেকে আগতদের জন্য ১৫টি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

সমাবেশস্থলের ভেতরে ও বাইরে ১৫টি মেডিক্যাল বুথ থাকবে, প্রতিটিতে থাকবেন দুজন করে চিকিৎসক, জরুরি ওষুধ এবং অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা থাকবে।

ড্রোন ও ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ ও সরাসরি সম্প্র্রচারেরও আয়োজন থাকবেএলইডি স্ক্রিন ছাড়াও ফেসবুক ও ইউটিউবেও সম্প্রচার করা হবে।

সমাবেশের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান গোলাম পরওয়ার।

সংবাদ সম্মেলন শেষে তিনি বলেন, সারা দেশ থেকে মানুষ রেল, সড়ক ও নৌপথে সমাবেশে অংশ নিতে আসবে। এতে নগরবাসীর কিছুটা দুর্ভোগ হতে পারে। আমরা তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। তিনি জানান, সমাবেশ শুরু হবে দুপুর ২টায়। তবে সকাল ১০টা থেকেই সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলবে।

এ সময় গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনারও নিন্দা জানান গোলাম পরওয়ার। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ব্যর্থতার অভিযোগও করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সাত দফা দাবিও তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলোঅবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ; সব গণহত্যার বিচার; মৌলিক রাষ্ট্রীয় সংস্কার; জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন; জুলাই শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন; পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং এক কোটির বেশি প্রবাসী ভোটারের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মতিউর রহমান আকন্দ, নূরুল ইসলাম বুলবুল, মো. সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

মন্তব্য

তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সুযোগ

ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এর মাধ্যমে নির্বাচনের তফসিল  ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সুযোগ পাবেন যোগ্য নাগরিকরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার  প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং সিনিয়র সহকারী  প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহম্মদ বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে যাঁরা ভোটার হওয়ার উপযোগী হন, অর্থাৎ যাঁদের বয়স ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৮ বছর হয়, তাঁরা পরবর্তী জানুয়ারি মাসের হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। নির্বাচন কমিশন প্রতিবছরের ২ জানুয়ারি ওই খসড়া ভোটার তালিকা এবং  ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, পরবর্তী নির্বাচনের আগে যেসব নাগরিকের বয়স ১৮ বছর হয়, অর্থাৎ ভোটার হওয়ার জন্য যোগ্য হন, তাঁরা ওই নির্বাচনে ভোটাধিকারের সুযোগ পান না।

তাঁদের পরবর্তী নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

ফয়েজ আহম্মদ আরো বলেন, এই বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন ভোটের তফসিল ঘোষণার আগে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে যাঁরা ভোটার হওয়ার উপযোগী হন, তাঁদের ভোটার তালিকায় নিয়ে আসাকে যৌক্তিক মনে করে। এ বিষয়ে উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ধরুন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। তার সর্বোচ্চ দুই মাস আগে তফসিল ঘোষিত হয়।

তার মানে নভেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ভোটার হওয়ার উপযোগী হন, তাঁরা ভোটার হওয়ার সুযোগ পান না। বরং আগের বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁদের বয়স ১৮ বছর হয়েছে, তাঁরাই ভোটাধিকার পান।

ফয়েজ আহম্মদ বলেন, আজ যে অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদন করা হলো, এর ফলে যখন নির্বাচনের তফসিল  ঘোষণা হবে, তার অন্তত এক মাস আগ পর্যন্ত যেসব ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর হবে, তাঁরা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন।

মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ : গতকাল সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম  বলেন, অনেকের কিডনি ড্যামেজ হয়, অনেকে চোখে দেখতে পায় না, কর্নিয়া সংযোজন হলে অন্ধত্ব দূর করা যায়, এসব বিষয়ে বাংলাদেশের যে আইন ছিল সেটা অনেক দিন থেকে আপডেট হয়নি।

 

তিনি বলেন, নতুন এই অধ্যাদেশের ফলে অঙ্গ প্রতিস্থাপনটা খুব সহজ হবে। আগে যেমন ছিল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য খুবই কাছের যেমনভাই, বোন, মা-বাবা থেকে নিতে পারতেন, এখন এটাকে একটু সম্প্রসারণ করা হয়েছে। 

অঙ্গ দান করার ক্ষেত্রে নতুন করে কাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আগে যেমন ভাতিজা, ভাগিনা তারা অঙ্গ দান করতে পারত না। এখন তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, মানে পরিধি বাড়ানো হয়েছে।

প্রেস সচিব আরো বলেন, এর ফলে আমরা মনে করি, বাংলাদেশের অনেককেই এখন কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য আর বিদেশে যাওয়া লাগবে না। বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোও এই সার্ভিস দিতে পারবে। আমরা মনে করি, এটা বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী আইন। 

একই সভায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গোয়েন্দা তথ্য ছিল, তবে এত পরিমাণ যে হবে সে তথ্য হয়তো ছিল না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গোয়েন্দা তথ্য ছিল, তবে এত পরিমাণ যে হবে সে তথ্য হয়তো ছিল না

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি এখন অনেকটা শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গোপালগঞ্জে গত বুধবার যে ঘটনা ঘটেছে, সে সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য ছিল কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তবে এত পরিমাণ যে হবে, ওই তথ্য হয়তো ছিল না।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এসব তথ্য জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গতকাল (বুধবার) এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৫ জনকে আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনায় আমাদের ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে দুজনকে এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আহত আরো তিনজন পুলিশ সদস্যকেও রাজারবাগ হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে।

এ ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে এনসিপি নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে এ বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যতে আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

যারা অন্যায় করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং হবে। কাউকে কোনো রকম ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

তিনি বলেন, যত দিন পর্যন্ত সব অপরাধী ধরা না পড়বে, তত দিন পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। উপদেষ্টা এ সময় গোপালগঞ্জের ঘটনা লাইভ করায় সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেলগুলোকে ধন্যবাদ জানান। এর আগে উপদেষ্টা রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে গোপালগঞ্জের ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যদের শারীরিক অবস্থা দেখতে যান।

 

মন্তব্য

আ. লীগ আমলের ৯৬ পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আ. লীগ আমলের ৯৬ পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিবন্ধিত ৯৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার সব নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম।

তিনি বলেন, নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে এবং আগের নীতিমালা  বাতিল হয়েছে। তাই আগের নীতিমালার অধীন নিবন্ধিত সব পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেছে।

২০২৩ সালে দুই দফায় ৯৬ সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছিল তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ নিবন্ধন দেওয়া হয়।  এসব সংস্থার বেশির ভাগই ছিল নতুন। আগে কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা ছিল না।

নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম যোগ্যতাগণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতাও অনেক সংস্থার ছিল না।

একাধিক সংস্থার প্রধানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা,  প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল।  সে সময় বেশ কিছু অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন পেতে উৎসাহ বোধ করেনি বা আবেদন করলেও নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়।

সে সময় নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা বাড়াতে দ্বিতীয়বার আবেদন আহবান করে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন  নির্বাচন পর্যবেক্ষণে স্বচ্ছতা আনতে আগের সব পর্যবেক্ষক সংস্থাকেই বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে নতুন করে নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল  সেই নতুন নীতিমালা-২০২৫ জারি ও  ২০২৩ সালের নীতিমালা বাতিল করা হয়েছে। ফলে আগের নীতিমালা অনুসারে নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে।

এসব পর্যবেক্ষক সংস্থার মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। নতুন নীতিমালায়  নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি ও এর সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ২০০৮ সাল থেকে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক সংস্থার  নিবন্ধন দিচ্ছে ইসি। ওই সময় প্রথমবারের মতো ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ