ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ০৮ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ মহররম ১৪৪৭

খোঁড়া যুক্তিতে ওষুধের দাম লাগামছাড়া

  • ► ৫০০ টাকার ট্যাবলেট একলাফে ১২০০
    ► কম দামি ওষুধও চড়া
    ► ঔষধ প্রশাসন জানে না, এখন খতিয়ে দেখবে
তৌফিক মারুফ
তৌফিক মারুফ
শেয়ার
খোঁড়া যুক্তিতে ওষুধের দাম লাগামছাড়া

পেঁয়াজের মতো লাফঝাঁপ যেন এবার ওষুধেও শুরু হয়েছে। হঠাৎ বেড়ে গেছে বিভিন্ন ওষুধের দাম; কিন্তু বিষয়টি নজরে পড়েনি খোদ ঔষধ প্রশাসনের। ওষুধ প্রস্তুতকারীদের কেউ বলছে, অন্যের দেখাদেখি তারা দাম বাড়িয়েছে। কেউ বলছে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি বা উন্নত দেশ থেকে মানসম্পন্ন কাঁচামাল আনার খরচের কথা।

দেশে হাড়ক্ষয়ের রোগ যেমন বাড়ছে, তেমনি এর ওষুধের চাহিদা বাড়ছে। এর মধ্যে অস্টিওপোরোসিসের ওষুধ হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আইব্যান্ড্রনিক এসিড জেনেরিক। দেশের ১৮ থেকে ২০টি কম্পানির এই ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতকরণের অনুমোদন রয়েছে সরকারের কাছ থেকে। এর মধ্যে তিনটি কম্পানি ছাড়া বাকিগুলোর সবাই তৈরি করছে ১৫০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট ফরম্যাট।

এত দিন এর প্রতিটি ট্যাবলেট বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। তবে হঠাৎ গত এক থেকে দেড় মাসের ভেতর এই ওষুধের দাম দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে গেছে। যেমন অপসোনিন ফার্মা লিমিটেডের ‘বনফিক্স’ ব্র্যান্ডের ওষুধটি ৫০০ থেকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এক হাজার ২০০ টাকা হয়ে যায়। একই জেনেরিকের ‘বন্ড্রোভা’ ব্র্যান্ডের হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধটির দাম বেড়ে এখন এক হাজার ৯৬০ টাকা, ল্যাবএইড ফার্মার ‘বোনাইড’ এক হাজার ৫০০ টাকা।

অ্যান্টিবায়োটিক এজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও সিরাপ ফরম্যাটে রয়েছে শতাধিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের। ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলগুলোর কোনোটি ৫০০ মিলিগ্রাম আবার কোনোটি ২৫০ মিলিগ্রাম। গত এক মাসের মধ্যে বেশির ভাগ কম্পানিই গড়ে প্রতি ট্যাবলেটের দাম দুই থেকে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। অবশ্য আগে থেকেও ওষুধের দামে এক কম্পানি থেকে আরেক

কম্পানির হেরফের ছিল কিছুটা। যেমন রেডিয়েন্ট তাদের একোস (৫০০ মিলিগ্রাম) ক্যাপসুলের দাম রেখেছে ৪০ টাকা, অন্যদিকে অপসোনিন একই ওষুধের দাম ৩০ টাকায় বিক্রি করে আসছিল, যা এখন তিন টাকা বেড়েছে।

গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যাল ডায়াবেটিসের মেটফরমিন

 হাইড্রোক্লোরাইড জেনেরিকের ৮৫০ মিলিগ্রামের যে ট্যাবলেট বিক্রি করছে প্রতিটি আড়াই টাকা এবং ৫০০ মিলিগ্রামের দেড় টাকা করে, ওই একই ওষুধ অন্যান্য কম্পানি তিন থেকে পাঁচ টাকা দামে বিক্রি করছে।

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ অমিপ্রাজলের ক্ষেত্রেও দামের নৈরাজ্য চলছে সমানে। রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস যে ওষুধের দাম রাখছে চার টাকা, সেই একই ওষুধ অন্যরা বিক্রি করছে পাঁচ থেকে ছয় টাকায়।

বেড়েছে ডেক্সমেথাসন+সোডিয়াম ফসফেটের দামও। আগে যা প্রতিটি ৫০ পয়সা থেকে এক টাকার মধ্যে ছিল তা এখন কোনো কোনো কম্পানি দুই টাকায় তুলেছে। চোখের ওষুধ  ডেক্সামেথাসন+ ক্লোরামফেনিকল (৫ এমএল, ০.১%+ ০.৫%) কোনো কম্পানি দাম রাখছে ৫০ টাকা, আবার কেউ রাখছে ৭০ টাকা।

কেবল এই কটি ওষুধই নয়, গত এক মাসের মধ্যে বেশির ভাগ ওষুধ কম্পানিই তাদের বিভিন্ন ধরনের ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কোনো কোনো কম্পানি গত ১ ডিসেম্বর থেকে দাম বাড়িয়েছে। জানতে চাইলে অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রউফ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা কখনোই আগে কোনো দাম বাড়াই না। আগে অন্যরা বাড়ায়, তারপর আমরা বাড়াই।’

অন্যদের দেখাদেখি কেন দাম বাড়াবেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্যদের চেয়ে দাম কম রাখলে সবাই মনে করে, আমার প্রডাক্টের মান ভালো নয়, নিম্নমানের। তাই আমরা দাম সমন্বয় করে নেই। এ ছাড়া ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া, ভালো দেশ থেকে ভালো মানের প্রডাক্ট আনার কারণেও অনেক সময়ে দাম বাড়াতে হয়।’

তবে বাজারে ওষুধের দাম এমনভাবে বাড়ার ব্যাপারে ধারণা নেই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানের। তিনি এমন দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না জানিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি খোঁজ নিচ্ছি, যদি এমন অসম্ভব কিছু হয়ে থাকে সে জন্য অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মহাপরিচালক বলেন, অনেক ওষুধের দাম আগে থেকেই বেশি বেশি ছিল, নতুন করে বাড়ানো হয়নি। আবার কোনো কোনো কম্পানি হয়তো গত কয়েক বছরে যেসব ওষুধের দাম বাড়ায়নি, তারা কেউ হয়তো পুরনো ওষুধের দাম কিছুটা বাড়াতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজির অধ্যাপক ড. মো. মুনীর উদ্দিন আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, এই মুহূর্তে ওষুধের দাম বাড়ানোর মতো কোনো কিছু ঘটেনি। একেবারেই অহেতুক এই দাম বাড়িয়েছে একশ্রেণির ওষুধ কম্পানি। সরকারের উচিত বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করা। না হলে মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়ে যাবে, চিকিৎসা ব্যয়ও বাড়বে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে চিকিৎসার পেছনে মানুষের যে টাকা খরচ হয় তার ৫০ শতাংশেরও বেশি হয় ওষুধের পেছনে, যা অন্যান্য দেশে ৩০-৩৫ শতাংশের মধ্যে থাকে। এ অবস্থায় ওষুধের দাম বাড়ানোর ফলে ওই খরচ আরো বাড়বে, আর দুর্ভোগ তো বাড়বেই।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

স্থায়ীভাবে বহিষ্কারে কারণ দর্শানোর নোটিশ

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি

চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিনের পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। স্থায়ীভাবে কেন বহিষ্কার করা হবে না, ব্যাখ্যা চেয়ে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে নিজাম উদ্দিনকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রামে চাঁদা না পেয়ে মব তৈরি করে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের কর্মচারী ও জামায়াত নেতা নওশেদ জামালকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন নিজাম উদ্দিন।

গতকাল শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক শোকজ নোটিশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রশিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনামের নির্দেশনায় ওই শোকজ নোটিশ দেওয়া হলো।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগসংগঠনের নীতিমালা ও শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কিছু কার্যকলাপে জড়িত হয়েছেন। একজন দায়িত্বশীল পদধারী সদস্যসচিব হিসেবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড সংগঠনের ভাবমূর্তি ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিজাম উদ্দিনের সংগঠনের সদস্যসচিব পদ সাময়িকভাবে স্থগিত করার কথা উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে একই সঙ্গে নিজাম উদ্দিনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে কেন বহিষ্কার করা হবে নাসে বিষয়ে একটি লিখিত ব্যাখ্যা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া না গেলে সংগঠন নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে নিজামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম পুলিশের কাছে আবেদন করেন এক নারী।

আবেদনে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন।

গতকাল সকালে ওই আবেদন করেন রিয়াজুল জান্নাত নামের ওই নারী। তিনি নগরীর বাগমনিরাম দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা নওশেদ জামালের স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার নওশেদ জামালকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

আবেদনে রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেনকিছুদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে নিজাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্বামীর কাছে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন।

চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হয়।

আবেদনের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী এই নেতাকে নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

এদিকে সংগঠনের কারণ দর্শানোর নোটিশটি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী নেতা নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, যথাসময়ে আমার জবাব কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেব।

মন্তব্য
দেশে ফেরত তিনজন কারাগারে

জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ

উগ্র জঙ্গি আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। গতকাল শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উগ্র জঙ্গি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি জানার পর কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পরিচয় ও তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কিত তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মালয়েশিয়ার আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদের তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসী বাংলাদেশিদের যেখানে প্রয়োজন, সেখানে প্রয়োজনীয় সমর্থন দেবে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান পুনরাবৃত্তি করছে এবং এ বিষয়ে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

মালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার তিনজন কারাগারে : মালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক হওয়ার পর দেশে ফেরা তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মিজবাহ উর রহমানের আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গতকাল শনিবার ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের (নন জিআর) উপপরিদর্শক মোস্তফা হোসেন কালের কণ্ঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

আসামিরা হলেন জাহিদ, নজরুল ও রেদোয়ান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারায় তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাঁদের কারাগারে আটক আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে শুক্রবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পুলিশপ্রধান খালিদ ইসমাইল জানান, জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মালয়েশিয়ায় জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার বাংলাদেশিদের মধ্যে তিনজনকে দেশে পাঠানো হয়। তাঁরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটস বা আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোকে অর্থ পাঠাতেন।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং বাকি ১৬ জন এখনো পুলিশি হেফাজতে বলেও জানান দেশটির আইজিপি। তাঁর সন্দেহ, পুরো নেটওয়ার্কে ১০০ থেকে ১৫০ জনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

দেশটির আইজিপি বলেন, ‌‌‘তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে জঙ্গি মতবাদও প্রচার করতেন এবং আরো বাংলাদেশি শ্রমিকদের এই চক্রে যুক্ত করার চেষ্টা করতেন।

মালয়েশিয়া পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আটক বাংলাদেশিরা আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেটে ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতেন। এই নেটওয়ার্কটি সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএসের সেলগুলোকে নিয়মিতভাবে সহায়তা করত।

এর আগে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আইএস সংশ্লিষ্ট এক বিস্ফোরণের পর দেশটির সরকার জঙ্গি তৎপরতা দমনে কঠোর অবস্থান নেয়। এর পর থেকে শত শত সন্দেহভাজনকে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।

মন্তব্য

ছুটির ঘোষণা

শেয়ার
ছুটির ঘোষণা

আজ ৬ জুলাই রবিবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কালের কণ্ঠের সব বিভাগ বন্ধ থাকবে। তাই আগামীকাল সোমবার পত্রিকা প্রকাশিত হবে না। তবে কালের কণ্ঠ অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়া চালু থাকবে। সম্পাদক

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
এআইটি প্রত্যাহার দাবি বিটিএমএর

নীলনকশায় ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের বস্ত্রশিল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নীলনকশায়  ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের বস্ত্রশিল্প

প্রতিবেশী দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থান শক্তিশালী করতে দেশের শিল্পকে রুগ্ণ করা হচ্ছে। এমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র খাতের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। সরকার সম্প্রতি তুলা আমদানিতে নতুন ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এ সময় বক্তারা এটা ভারতের নীলনকশাএমন অভিযোগ তুলে বলেন, আগাম কর বাস্তবায়ন করা হলে দেশের সুতা ও বস্ত্রকল সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস হবে।

দেউলিয়া হবে দেশের বস্ত্র খাত। আর এটা হবে ভারতের খোলাবাজার। এই নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে ভারত ও বিগত সরকারের দোসররা বসে আছে। বক্তারা জানান, এই খাতের বিনিয়োগের ২২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৮ বিলিয়নই ব্যাংকঋণ।

গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে এই বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিটিএমএর পরিচালক মো. খোরশেদ আলম, রাজিব হায়দার, শহীদ আলম, আবুদুল্লাহ আল মামুন, মো. সালেহউজ্জামান, বাদশা গ্রুপের বাদশা মিয়া, বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) উপদেষ্টা আইয়ুব ভূইয়া, বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হোসেন মেহমুদ, নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অমল পোদ্দার।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ২ শতাংশ কর নির্ধারণ প্রকৃতপক্ষে বছর শেষে ৫০ শতাংশ কর দিতে হয়। একদিকে ১৮ শতাংশ ব্যাংকঋণের সুদ, আবার অন্যদিকে ইনকাম ট্যাক্সের নামে ব্যবসার পুঁজি থেকে ৫০ শতাংশ কেটে নিলে কিভাবে বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তা কারখানা চালু রাখবে।

এতে দেশের সুতাকলগুলো তার প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছে। এতে সরকারের কি লাভ?

তিনি বলেন, এত দিন শুনেছি সরকার বড় বড় প্রকল্পে হাত দেবে না; এখন শুনছি ভোলায় ব্রিজসহ বিভিন্ন খাতে বড় বড় প্রকল্প হাতে নেবে। সার্বিকভাবে ভালো নেই দেশের বস্ত্র খাত। এ সময় একতরফা সিদ্ধান্ত না নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশা করেন তিনি। বলেন, আমাদের বিশ্বাস সরকার বিষয়টা আমলে নেবে এবং এই আগাম কর প্রত্যাহার করবে।

রাজিব হায়দার বলেন, ২ শতাংশ আগাম কর আরোপ করে সরকার বস্ত্রশিল্পকে ধ্বংসের জন্য কফিনের শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। এর ফলে দেশীয় গণমাধ্যমের চেয়ে প্রতিবেশী দেশের মিডিয়াগুলোতে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। তারা বেশ খুশি। কারণ তারা জানে, এর বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।

মো. সালেহউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের সুতাকলগুলো বন্ধের পাঁয়তারা ছলছে। প্রতিবেশী দেশ এই খাতে ৪০ শতাংশ প্রণোদনা দিলেও বাংলাদেশ ২৫ শতাংশ থেকে ১.২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, এই সংকট থেকে বের হওয়া না গেলে সংকটে পড়বে দেশের অর্থনীতি।

বিটিএমএর আরেক পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, দেশের বস্ত্রকল ধ্বংসের পরিকল্পনা নতুন নয়। এটি শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এ ধরনের নানা ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানান তিনি।

বিটিএমএ পরিচালক হোসেন মেহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে ব্যবসায়ীরা দেশটি থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হলো। ফলে ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর পথে যেতে পারবেন না।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ