<p>[নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ে আর্সেনিকের উল্লেখ আছে]</p> <p>ধূসর আভাযুক্ত সাদা রংবিশিষ্ট ভঙ্গুর প্রকৃতির একটি অর্ধধাতু বা উপধাতু হচ্ছে আর্সেনিক (Arsenic)। প্রকৃতিতে আর্সেনিক বিভিন্ন যৌগ আকারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ৩৩ আণবিক সংখ্যাবিশিষ্ট আর্সেনিকের রাসায়নিক সংকেত অং এবং আণবিক ভর ৭৪.৯২। প্রকৃতিতে প্রাপ্ত আর্সেনিক একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়; বরং বিভিন্নভাবে কল্যাণকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটারে ০.৫ মিলিগ্রাম। যখনই এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখনই তা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।</p> <p><img alt="" src="http://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/ckfinder/innerfiles/images/Print Version Online/print /2021/11.November/07-11-2021/Kk-Education.jpg" style="border-style:solid; border-width:1px; float:left; height:88px; margin-left:10px; margin-right:10px; width:254px" />আর্সেনিকের মাত্রা মানুষের কর্মকাণ্ড ও প্রাকৃতিক উভয় কারণে বাড়তে পারে। মানবসৃষ্ট কারণগুলোর মধ্যে পানিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার, কীটনাশক, বর্জ্য পদার্থ অবক্ষেপণ অন্যতম। আর প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি। এ খনিজ পদার্থ ভূগর্ভের পানির স্তরের সংস্পর্শে এলে পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেড়ে যায়।</p> <p>আর্সেনিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। পৃথিবীর সব মহাদেশের ৫০টির মতো দেশে ভূগর্ভস্থ বা ভূপরিস্থ পানিতে উচ্চমাত্রার আর্সেনিক শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত বা ঝুঁকিগ্রস্ত জনসংখ্যার হিসেবে বাংলাদেশ সর্বাধিক দূষণগ্রস্ত দেশ। বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৯৯৩ সালে নবাবগঞ্জ সদর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলার বড়ঘরিয়া মৌজায় কয়েকটি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে সর্বপ্রথম ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি লক্ষ করে। বর্তমানে দেশের দক্ষিণ ভাগে আর্সেনিকের উপস্থিতি অনেক বেশি।</p> <p>আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার ফলে মানবদেহে আর্সেনিক বাহিত রোগ হয়। মানবদেহে যখন আর্সেনিকের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় তখন সে অবস্থাকে আর্সেনিক বিষক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দীর্ঘসময় ধরে আর্সেনিকযুক্ত পানি খেলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব শরীরে দেখা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় রোগীর গায়ে কালো কালো দাগ দেখা দেয় বা চামড়ার রং কালো হয়ে যায়। হাত ও পায়ের তালু শক্ত খসখসে হয়ে যায় এবং ছোট ছোট শক্ত গুটির মতো দেখা দেয়। ধীরে ধীরে গায়ের চামড়া মোটা ও খসখসে হয়ে যায়।</p> <p>আর্সেনিকের বিষক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের পানি পান ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে হবে।</p> <p> </p> <p> </p> <p>[আরো বিস্তারিত জানতে বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় আর্সেনিক সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</p>