‘মা ঘাট থেকে আসেনি তো?’— দুর্গার এ কথায় প্রকাশ পেয়েছে—
ক) সতর্কতা খ) অভিমান
গ) সন্দেহ ঘ) ভয়
১৪। ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধটি কোন পটভূমিতে লেখা?
ক) অবিভক্ত ভারতবর্ষ খ) বিভাগ-উত্তর বাংলা
গ) স্বৈরাচারী পাকিস্তান ঘ) অবহেলিত ও উপেক্ষিত পূর্ব বাংলা
১৫। ‘কানাকুয়ো’ কখন ডাকে?
ক) রাতের বেলায় খ) সন্ধ্যাবেলায়
গ) ভোরবেলায় ঘ) দুপুরবেলায়
১৬। ‘আংরাখা’ শব্দের অর্থ কী?
ক) লম্বা ও ঢিলেঢালা পোশাক খ) চাতক পাখি
গ) পাহাড়ের নাম ঘ) ঝরনার নাম
১৭। ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’—প্রবাদটির অর্থ হচ্ছে—
i. পানি না ছুঁয়ে মাছ ধরা
ii. সাপও মরবে লাঠিও ভাঙবে না
iii. কৌশলে কার্যসিদ্ধি করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i খ) ii
গ) iii ঘ) i ও ii
১৮। রানার দস্যুকে ভয় করে কেন?
ক) পিঠের বোঝা ছিনিয়ে নেবে খ) রানারের সময় নষ্ট করবে
গ) রানারকে হত্যা করবে ঘ) রানারকে বিতাড়িত করবে
১৯। ‘এসেছি বাঙালি ক্ষুদিরাম আর সূর্য সেনের থেকে’—এ চরণে ক্ষুদিরাম আর সূর্য সেন হলেন—
i. বিপ্লবী
ii. দেশপ্রেমিক
iii. ব্রিটিশবিরোধী সৈনিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii খ) ii ও iii
গ) i ও iii ঘ) i, ii ও iii
২০। ‘বুধা’ সৈনিকদের জন্য পেয়ারা নিয়েছিল কেন?
ক) ক্যাম্প পরিদর্শন করতে খ) সৈনিকদের উপহার দিতে
গ) বুধা রাজাকার বলে ঘ) শান্তিবাহিনীতে যোগ দিতে
২১। ‘ঝর্ণার গান’ কবিতায় ঝরনার উচ্ছলতার বিপরীতে কোন চরণটি রয়েছে?
ক) নিজের পায় বাজাই তাল/ দিবস-রাত সাঁঝ সকাল
খ) ঝুঁকিয়ে ঘাড় ঝুম পাহাড়/ ভয় দ্যাখায়, চোখ পাকায়
গ) শিথিল সব শিলার পর/ চরণ থুই দোদুল মন
ঘ) সুন্দরের তৃষ্ণা যার/আমরা ধাই তার আশেই
‘আগের কাজ আগে তো তুমি সারো
পরের কথা ভাবিও পরে আরো’
২২। পঙিক্তটিতে ‘জুতা-আবিষ্কার’— কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে?
ক) রাজার বিচক্ষণতা খ) রাজার নির্বুদ্ধিতা
গ) মন্ত্রীর দায়িত্বহীনতা ঘ) মন্ত্রীর তোষামোদি
২৩। ‘সেসব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি’ —‘বঙ্গবাণী’ কবিতার উক্ত চরণে বাংলা ভাষার হেয়কারীদের প্রতি কবির কোন মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে?
ক) তীব্র ঘৃণা খ) অবজ্ঞা
গ) উৎকণ্ঠা ঘ) নিস্পৃহতা
২৪। ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় অসাধরণ এক প্রেরণা সঞ্চারী শব্দমালা কোনটি?
ক) সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই
খ) আমি জন্মেছি বাংলায়, আমি বাংলায় কথা বলি
গ) সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবই
ঘ) জয় বাংলা
২৫। ‘পরো না দুখের ফাঁস’—বলতে ‘জীবন-সংগীত’ কবিতায় কবি কী বুঝিয়েছেন?
ক) সুখের কল্পনা করে লাভ নেই খ) দুঃখ বাড়িয়ে লাভ নেই
গ) দুঃখকে ছোট করে না দেখা ঘ) জীবন দুঃখ-কষ্টে ভরা
২৬। কার পদভারে এক নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে?
ক) থুত্থুড়ে বুড়োর খ) মোল্লাবাড়ির বিধবার
গ) তেজি তরুণের ঘ) দক্ষ মাঝির
২৭। ‘আশা’ কবিতায় কবি কিভাবে মানুষের আয়ু কমে যাওয়ার কথা বলেছেন?
ক) অনিদ্রায়
খ) বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ে
গ) নিজের দুঃখ-কষ্টকে বড় করে দেখার মাধ্যমে
ঘ) বিত্ত সুখের দুর্ভাবনায়
২৮। ‘মুক্তির পথ যুদ্ধের রথ জেনে
ঘাতক ধ্বংস করেছে অস্ত্র হেনে’
উদ্দীপকের ভাব নিচের কোন কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক) স্বাধীনতা—এ শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো
খ) সাহসী জননী বাংলা
গ) আমার পরিচয়
ঘ) তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা
২৯। সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি উক্ত কবিতার যে চরণে ফুটে উঠেছে তা হলো—
i. নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা
ii. আমি যে এসেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে
iii. যার সঙ্গে যে রকম, সে রকম খেলবে বাঙালি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i খ) ii
গ) iii ঘ) i ও iii
৩০। নির্মলেন্দু গুণের ছোটগল্প কোনটি?
ক) কালো মেঘের ভেলা খ) বাবা যখন ছোট ছিলেন
গ) চাষাভূষার কাব্য ঘ) আপন দলের মানুষ
৩১। গভীর জীবনবোধ ও আশাবাদ কার কবিতাকে বিশিষ্ট ব্যঞ্জনা দান করেছে?
ক) সুকান্ত ভট্টাচার্য খ) আহসান হাবীব
গ) শামসুর রাহমান ঘ) সৈয়দ শামসুল হক
‘মৃত্যুর ভয়ে ভীরু বসে থাকা, আর না
পরো পরো যুদ্ধের সজ্জা’
৩২। উদ্দীপকটি ‘কাকতাড়ুয়া’ উপন্যাসের কোন চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে?
ক) মধু খ) আলী
গ) শাহাবুদ্দিন ঘ) বুধা
বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর
১. ক ২. খ ৩. খ ৪. ঘ ৫. খ ৬. ঘ ৭. ক ৮. গ ৯. ঘ ১০. গ ১১. ঘ ১২. খ ১৩. ক ১৪. ক ১৫. ক ১৬. ক ১৭. গ ১৮. ক ১৯. ঘ ২০. ক ২১. খ ২২. ক ২৩. ক ২৪. ঘ ২৫. খ ২৬. গ ২৭. ঘ ২৮. খ ২৯. গ ৩০. ঘ ৩১. খ ৩২. ঘ।
সৃজনশীল প্রশ্ন্ন
বহিপীর : সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
১। সালাম সাহেব একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। অর্থ-সম্পদের অভাব না থাকলেও তিনি কাউকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন না। তাঁর বন্ধু খালিদ সাহেব তা জেনেও বিপদে পড়ে তাঁর কাছে অর্থ সাহায্যের জন্য যান। কিন্তু সালাম সাহেব মিষ্টি কথায় বন্ধুকে জানিয়ে দেন, কিছুদিন আগেই তিনি সব অর্থ ব্যবসায় লাগিয়ে ফেলেছেন। ধনী বন্ধুর এই অজুহাত খালিদ সাহেবকে হতাশ করে তোলে।
ক) ‘দ্য ডিসগাইজ’ নাটকটি বাংলায় কোন নামে সঞ্চায়িত হয়?
উত্তর : ‘দ্য ডিসগাইজ’ নাটকটি বাংলায় ‘কাল্পনিক সংবদল’ নামে সঞ্চায়িত হয়।
খ) হাতেম আলী শহরে গিয়েছিলেন কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : হাতেম আলী তাঁর জমিদারি রক্ষা করার জন্য তাঁর বন্ধু আনোয়ার উদ্দীনের কাছে অর্থ সাহায্য চাইতে শহরে গিয়েছিলেন।
‘বহিপীর’ নাটকের হাতেম আলী একজন ক্ষয়িষ্ণু জমিদার। রেশমপুরে তাঁর যে জমিদারি আছে তা সূর্যাস্ত আইনে নিলামে উঠেছে। তবু তা থেকে যৎসামান্য যা আয় হতো তাই দিয়ে কোনো প্রকারে মানমর্যাদা রেখে ভরণপোষণ চলত। কিন্তু সেই জমিদারিও সান্ধ্য আইনে নিলামে উঠেছে। তাই জমিদারি রক্ষার জন্য শহরে গিয়েছিলেন বাল্যবন্ধু আনোয়ার উদ্দিনের কাছে সাহায্য চাইতে।
গ) উদ্দীপকের খালিদ সাহেবের হতাশা ‘বহিপীর’ নাটকের কোন চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : উদ্দীপকের খালিদ সাহেব ‘বহিপীর’ নাটকের জমিদার হাতেম আলী চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘বহিপীর’ নাটকের হাতেম আলী রেশমপুরের জমিদার। সূর্যাস্ত আইনে তাঁর জমিদারি নিলামে উঠেছে। স্ত্রী-পুত্রের কাছে সেই দুঃসংবাদ গোপন করে নিজের শারীরিক অসুস্থতার জন্য শহরে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন কথাটা বলে তাঁর শহুরে বন্ধু আনোয়ার উদ্দিনের কাছে যান জমিদারি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য চাইতে। কিন্তু তাঁর বন্ধু তাঁকে কোনো রকম সাহায্য করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। হাতেম আলীর জমিদারি সূর্যাস্ত আইনে ঠিকই নিলামে উঠবে আর তিনি তাঁর ছেলেকে ছাপাখানা করার জন্য যে টাকা দিতে চেয়েছিলেন তা আর পারবেন না বলে বহিপীরের কাছে তাঁর হতাশার কথা ব্যক্ত করেন।
উদ্দীপকের খালিদ সাহেবও বিপদের সময় বন্ধু সালাম সাহেবের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়ে হতাশ হন। খালিদ সাহেবের এই হতাশার দিকটি ‘বহিপীর’ নাটকের জমিদার হাতেম আলীর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ) উদ্দীপকের বক্তব্য কি ‘বহিপীর’ নাটকের মূল বক্তব্যকে স্পর্শ করেছে? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।
উত্তর : ‘বহিপীর’-এ সূর্যাস্ত আইনে জমিদারি হারানোর কাহিনি বর্ণিত হলেও বাঙালি মুসলমান সমাজে পীরপ্রথা কতটা জেঁকে বসেছিল, তার একটি বিশ্বস্ত দলিল হলো এই নাটক।
‘বহিপীর’ নাটকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেঁকে বসা পীরপ্রথা, কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাসের চিত্র ফুটে উঠেছে। এই নাটকের পীর সাহেবকে সবাই অসম্ভব ভয় পায় ও মান্য করে। গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের পীরকে পেলে যে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে তাঁকে সেবা করার জন্য অস্থির হয়ে পড়ে তার উদাহরণ তাহেরার বাবা ও সৎমা। তাঁরা মেয়ের অমতে বুড়ো এক পীরের সঙ্গে তাহেরার বিয়ে দিলে সে পালিয়ে জমিদার হাতেম আলীর শহরগামী বজরায় ওঠে। জমিদার পুত্র হাশেম আলী ছাড়া অন্য সবাই ভয়ে ও কুসংস্কারে ওই বহিপীরের পক্ষে অবস্থান নেয়। কিন্তু নাটকটি শেষ পর্যন্ত আলোর পথ দেখায়। হাশেম আলী ও তাহেরা প্রচলিত প্রথা ভেঙে বেরিয়ে আসে। কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাসের ফলে মানবিকতার জয় হয়।
অন্যদিকে উদ্দীপকে শুধু অর্থ সাহায্য না পেয়ে খালিদ সাহেবের হতাশার কথা ব্যক্ত হয়েছে, যা হাতেম আলীর বক্তব্যকে নির্দেশ করে।
উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, ‘বহিপীর’ নাটকের মূল বক্তব্যে পীরপ্রথা ও দিন বদলের যে সংকেত দেওয়া হয়েছে তা উদ্দীপকে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা
শামসুর রাহমান
২। চুনিয়া একটি ছোট্ট আদিবাসী গ্রাম। চুনিয়ার গ্রামবাসীরা কখনো হিংস্রতা, রক্তপাত দেখেনি। চুনিয়াবাসীরা শুধু জানে মানুষকে ভালোবাসতে। মানব সমাজে আজ যে হিংসা, হানাহানি, রক্তপাত দেখা যায়, চুনিয়ায় এসব নেই। সবাই এখানে তাই সুখে থাকে। চুনিয়াবাসীরা বিশ্বাস করে, মানুষ মারণাস্ত্র ফেলে, হিংসা-দ্বেষ ভুলে পরস্পর সৎ পরিবেশী হবে। কেন না মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোই হচ্ছে মানব সভ্যতার মূল কথা।
ক) শামসুর রাহমানের কবিতায় কোন বৈশিষ্ট্য সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর : শামসুর রাহমানের কবিতায় অতি আধুনিক কাব্যধারার বৈশিষ্ট্য সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
খ) ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বীভৎস ও ভয়ংকর আক্রমণে ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো।
শামসুর রাহমানের ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বলা হয়েছে—১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের শুরুতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালিদের ওপর বীভৎস ও ভয়ংকর আক্রমণ চালায়। তারা ঢাকা শহরের বুকে জলপাই রঙের দানবাকৃতির ট্যাঙ্ক নামিয়ে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে নির্বিচারে সেখানকার মানুষকে হত্যা করে। তাদের সেই আক্রমণে ছাত্রদের ছাত্রাবাস, গরিব মানুষের থাকার জায়গা সামান্য বস্তিও রক্ষা পায়নি।
গ) উদ্দীপকের চুনিয়া গ্রামবাসীদের সঙ্গে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার বৈসাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : উদ্দীপকের চুনিয়া গ্রামবাসীদের শান্তিকামিতার সঙ্গে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞের বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বলা হয়েছে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে বাঙালির রক্তে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয় পাকিস্তানি যুদ্ধবাজরা। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য সাকিনা বিবির মতো গ্রামীণ নারীর সহায়-সম্ভ্রম বিসর্জিত হয়েছে, হরিদাসীর মতো অনেকেই সিঁথির সিঁদুর হারিয়েছে অর্থাৎ বিধবা হয়েছে, নবজাতক হারিয়েছে তার পিতা-মাতাকে। এই স্বাধীনতা মোল্লাবাড়ির বধূকে স্বামীহারা করে দগ্ধ ঘরের সামনে দাঁড় করিয়েছে, পথে নামিয়েছে শূন্য থালা হাতে হাড্ডিসার অনাথ কিশোরীকে। স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে শাহবাজপুরের জোয়ান কৃষক সগীর আলী, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লোক কেষ্ট দাস, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি মতলব মিয়া, ঢাকার রিকশাওয়ালা রুস্তম শেখ প্রমুখ শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে চুনিয়ার গ্রামবাসীরা কখনো হিংস্রতা, রক্তপাত দেখেনি, তারা শুধু মানুষকে ভালোবাসতেই জানে। উদ্দীপকের চুনিয়াবাসীদের শান্তিকামিতার এই দিকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার পাকিস্তানিদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ) বৈসাদৃশ্যগত দিকটি তুলে ধরাই কি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার মূল লক্ষ্য? বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : মানুষের জন্মগত অধিকার স্বাধীনতাকে পাকিস্তানিদের হাত থেকে ছিনিয়ে অনার যে দৃঢ় প্রত্যয় কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে, উদ্দীপকের বৈসাদৃশ্যগত দিকটিতে তা নেই।
‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বলা হয়েছে যে স্বাধীনতা শুধু শব্দমাত্র নয়, এটি এমন এক অধিকার ও অনুভব, যা মানুষের জন্মগত। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালিদের স্বাধীনতাকে হরণ করেছিল। সেই স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য ১৯৭১ সালে আপামর বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি যুদ্ধবাজরা যে শুধু রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে তা নয়, এর জন্য অনেক নারীকে দিতে হয়েছে সহায়, সম্বল, সম্ভ্রম বিসর্জন, হতে হয়েছে বিধবা ও এতিম। শহর-গ্রামের লোকালয়ে পাকিস্তানিদের সেই গণহত্যার প্রাকৃতিক প্রতিবাদ ওঠে পশুর কণ্ঠেও। মুক্তিযুদ্ধে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তাই দগ্ধ হওয়া লোকালয় প্রবীণ বাঙালির আলোকিত চোখে অগ্নি ঝরায়। সেই সঙ্গে নবীন রক্তে প্রাণ স্পন্দন ও আশা জেগে থাকতে দেখে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কবি দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন—এত ত্যাগ যার উদ্দেশ্যে, সেই স্বাধীনতাকে বাঙালি একদিন ছিনিয়ে আনবেই।
উদ্দীপকে শুধু চুনিয়া গ্রামবাসীদের শান্তিপ্রিয়তার কথা বলা হয়েছে, সেখানে হিংসা, হানাহানি এসব কিছুই নেই।
‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার উপর্যুক্ত বক্তব্য থেকে তাই বলা যায়, উদ্দীপকে চুনিয়া গ্রামবাসীর মধ্যে সুখ আছে বলে সেখানে স্বাধীনতাকে ফিরে পাওয়ার কোনো দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত হয়নি।