<p><span style="font-size:20px"><strong>আনন্দপাঠ</strong></span></p> <p>  <p><strong>চিন্তাশীল—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর</strong></p> </p> <p>সৃজনশীল প্রশ্ন : মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছে না কেউ জবাব তার</p> <p>সবাই বলে মিথ্যে-বাজে বকিসনে আর খবরদার।</p> <p>অমন ধারা ধমক দিলে কেমন করে শিখব সব</p> <p>বলবে আমায় মূর্খ ছেলে, বলবে আমায় গো গর্ধভ।</p> <p>গাধার কেন শিং থাকে না, হাতির কেন পালক নেই</p> <p>গরম তেলে ফোড়ন দিলে লাফায় কেন তা ধেই ধেই!</p> <p>ভূত যদি না থাকবে তবে কোত্থেকে হয় ভূতের ভয়,</p> <p>মাথায় যাদের গোল বেঁধেছে, তাদের কেন পাগল কয়?</p> <p>ক) ‘চিন্তাশীল’ শব্দের অর্থ কী?</p> <p>উত্তর : ‘চিন্তাশীল’ শব্দের অর্থ চিন্তাপরায়ণ।</p> <p>খ) ‘লক্ষ্মী’ শব্দটি দিয়ে এককালে কী বোঝাত?</p> <p>উত্তর : ‘লক্ষ্মী’ শব্দটি দিয়ে এককালে দেবী-বিশেষকে বোঝাত।</p> <p>রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চিন্তাশীল’ নাটিকার নরহরিকে আদর করে মা ‘লক্ষ্মী’ সম্বোধন করে ভাত খেতে বলেন। নরহরি তখন ‘লক্ষ্মী’ শব্দটির অর্থ বিশ্লেষণ করে তার মাকে বলে যে এক কালে ‘লক্ষ্মী’ বলতে দেবী-বিশেষকে বোঝাত। পরে লক্ষ্মীর গুণ অনুসারে সুশীলা স্ত্রীলোককে লক্ষ্মী বলত, কালক্রমে পুরুষের প্রতিও লক্ষ্মী শব্দের প্রয়োগ হচ্ছে। আস্তে আস্তে যে ভাষার পরিবর্তন হচ্ছে এ কথাটা ‘লক্ষ্মী’ শব্দের প্রয়োগের মধ্য দিয়েই সে মাকে ভেবে দেখতে বলে।</p> <p>গ) উদ্দীপকের কিশোর কবির ভাবনার বিষয় ‘চিন্তাশীল’ নাটিকায় নরহরির সঙ্গে কিভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>উত্তর : উদ্দীপকের কিশোর কবির ভাবনার বিষয় ‘চিন্তাশীল’ নাটিকায় নরহরির নানা প্রশ্ন ও ভাবনার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।</p> <p>‘চিন্তাশীল’ নাটিকার নরহরি সব সময় চিন্তায় মগ্ন থাকে। উপস্থিত কাজ, উপস্থিত ভাবনা ছেড়ে সে সব সময় বাজে ভাবনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সব ভাবনারই সময় আছে বললে তা নিয়েও সে ভাবতে বসে। এভাবে সে তার ভাবনা শুধু বাড়িয়েই তোলে। যেমন নরহরির ছেঁড়া চাদর, একমুখ দাড়ি দেখে সুবলের মা ‘হেসে কুরুক্ষেত্র’ কথাটা তাকে বলতেই সে ‘কুরুক্ষেত্র’ শব্দের আগে মাসিকে ‘কেঁদেই কুরুক্ষেত্র’ বলতে বলে। দিদিমা ‘সূর্য অস্ত যায়’ বললে যে বলে যে সূর্য অস্ত যায় না। পৃথিবীই উল্টে যায়। মাছি ভন্ভন্ করে—কথাটা বললে সে বলে যে, মাছির ডানা থেকেই শব্দ হয়। এভাবে প্রতিটি কথার পিঠে কথা বলে যে সবাইকে বিব্রত করে তোলে।</p> <p>উদ্দীপকের কিশোর কবির মাথায়ও নানা রকম প্রশ্ন আসে। যেমন—গাধার শিং, হাতির পালক কেন নেই। ভূত না থাকলেও কেন মানুষ ভূতের ভয় পায়, মাথায় গোলমাল থাকলেই বা লোককে পাগল বলে কেন—এসব জানতে চাইলেই বাজে মিথ্যে প্রশ্ন না করার জন্য কিশোর কবিকে সাবধান করে দেওয়া হয়। উদ্দীপকের এই দিকটি ‘চিত্তশীল’ নাটিকার নরহরির উপর্যুক্ত ভবনার সঙ্গে সম্পর্কিত।</p> <p> </p> <p>ঘ) উদ্দীপকটি কি ‘চিন্তাশীল’ নাটিকার মূল বক্তব্যে কে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছে? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও।</p> <p>উত্তর : ‘চিন্তাশীল’ নাটকের মূল বক্তব্য হলো অকারণ বিষয় নিয়ে চিন্তা করলে শুধু সময়ই নষ্ট হয়, বাস্তবে কোনো কাজই হয় না—উদ্দীপকেই এ কথাই বলা হয়ছে।</p> <p>‘চিন্তাশীল’ নাটিকার নরহরি সব সময় অকারণ বিষয় নিয়ে চিন্তা করে বাস্তব জগৎ থেকে দূরে সরে আছে। শুধু তাই নয়, তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় নিয়ে তার মা, পিসিমা, দিদিমা সবাইকে বিব্রত করছে। নরহরির মা তার অকারণ ভাবনা-চিন্তার সঙ্গে পেড়ে না উঠে শেষ পর্যন্ত কাশীবাসী হতে চেয়েছেন। কাশীতে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি হলেও মাসে মাসে কিছু টাকা মাকে পাঠাতে হবে শুনে তখনই আবার ভাবনার জন্য এক সপ্তাহ সময় চেয়েছে। নরহরির মা তখন ব্যস্ত হয়ে বলেছেন তাঁর কাশীবাসের ব্যাপার নিয়ে নরহরি যেন আর না ভাবে।</p> <p>উদ্দীপকের কিশোর কবিও নানা অবান্তর প্রশ্নের জবাব খোঁজে বলে সবাই তাকে মিথ্যা-বাজে কথা না বলার জন্য সাবধান করে।</p> <p>উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, অকারণ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন বা চিন্তা করলে শুধু সময়ই নষ্ট হয়, কোনো কাজ হয় না। এদিক থেকে উদ্দীপকটি ‘চিন্তাশীল’ নাটিকার মূল বক্তব্যকে ধারণ করেছে।</p>