অধ্যায়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
তৃতীয় অধ্যায়
বল (Force)
জ্ঞানমূলক (ক) প্রশ্ন
১। চলন্ত বাস থেকে বাইরের গাছপালাগুলোকে গতিশীল মনে হয় কেন?
উত্তর : চলন্ত বাস থেকে বাইরের গাছপালাগুলোকে গতিশীল মনে হয় আপেক্ষিক বেগের কারণে। প্রত্যেক পর্যবেক্ষক তার নিজ কাঠামোকে স্থির দেখে। চলন্ত বাসের যাত্রী বাসটিকে স্থির দেখবে কিন্তু তার কাছে মনে হবে গাছপালাগুলো বিপরীত দিকে গতিশীল।
২। কোনো বস্তুর ভরবেগ 500 kg ms-1 বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো বস্তুর ভরবেগ 500 kg ms-1 বলতে বোঝায়—
ক) 1kg ভরের বস্তুর বেগ 500 kg ms-1 অথবা,
খ) 500 kg ভরের বস্তুর বেগ 1ms-1
৩। জড়তা কী?
উত্তর : বস্তু যে অবস্থায় আছে, চিরকাল সেই অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম, তাই জড়তা।
৪।
ঘর্ষণ কী?
উত্তর : একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে থেকে একের ওপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে, তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে একটি বাধার উৎপত্তি হয়। এ বাধাকে ঘর্ষণ বলে।
৫। সংজ্ঞা দাও : স্থিতি ঘর্ষণ, গতি ঘর্ষণ, আবর্ত ঘর্ষণ, প্রবাহী ঘর্ষণ
উত্তর : স্থিতি ঘর্ষণ (Static Friction) : দুটি বস্তু একে অন্যের সাপেক্ষে স্থির থাকা অবস্থায় যে ঘর্ষণ বল থাকে, তাকে স্থিতি ঘর্ষণ বলে।
গতি ঘর্ষণ : একটি বস্তুর সাপেক্ষে অন্য বস্তু যখন চলমান হয় তখন যে ঘর্ষণ বল তৈরি হয় তাকে গতি ঘর্ষণ বলে।
আবর্ত ঘর্ষণ (Rolling Friction) : একটি তলের ওপর যখন অন্য একটি বস্তু গড়িয়ে বা ঘুরতে ঘুরতে চলে, তখন সেটাকে বলে আবর্ত ঘর্ষণ।
প্রবাহী ঘর্ষণ (Fluid Friction) : যখন কোনো বস্তু তরল বা বায়বীয় পদার্থের ভেতর দিয়ে যায়, তখন সেটি যে ঘর্ষণ বল অনুভব করে সেটি হচ্ছে প্রবাহী ঘর্ষণ।
৬। বল কাকে বলে?
উত্তর : যা স্থির বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে, তাকে গতিশীল করে বা করার চেষ্টা করে বা যা গতিশীল বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে তার গতি পরিবর্তন করে বা করার চেষ্টা করে তাকে বল বলে।
৭। স্পর্শ বলের সংজ্ঞা দাও?
উত্তর : যে বল সৃষ্টির জন্য দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়োজন হয়, তাকে স্পর্শ বল বলে।
৮। অস্পর্শ বল কী?
উত্তর : দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ছাড়াই যে বল ক্রিয়া করে, তাকে অস্পর্শ বল বলে।
৯। সাম্য বল কী?
উত্তর : কোনো বস্তুর ওপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্ধি শূন্য হয় অর্থাৎ বস্তুটি সাম্যাবস্থায় থাকে, তবে ওই বলগুলোকে সাম্য বল বলে।
১০। অসাম্য বল কী?
উত্তর : কোনো বস্তুর ওপর এক বা একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি লব্ধি বল কাজ করে অর্থাৎ বস্তুর ত্বরণ হয়, তখন বস্তুটি সাম্যাবস্থায় থাকে না। যে বল বা বলগুলো এ অসাম্যাবস্থার সৃষ্টি করে, তাকে অসাম্য বল বলে।
১১। মহাকর্ষ বল কী?
উত্তর : এ মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু একে অপরকে একটি বল দ্বারা আকর্ষণ করে। মহাবিশ্বের যেকোনো দুটি বস্তুর মধ্যকার পারস্পরিক আকর্ষণ বলকে মহাকর্ষ বল বলে।
১২। অভিকর্ষ বল কী?
উত্তর : কোনো বস্তুকে পৃথিবী যে বলে আকর্ষণ করে, তাকে অভিকর্ষ বল বলে।
১৩। ওজোন কী?
উত্তর : কোনো বস্তুকে পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে যে বলে টানে তাকে ওজোন বলে।
১৪। ঘাত বল কী?
উত্তর : খুব অল্প সময়ের জন্য যে বল প্রযুক্ত হয়, তাকে ঘাত বল বলে।
১৫। তাড়িৎ চৌম্বক বল কী?
উত্তর : দুটি আহিত কণা তাদের আধানের কারণে একে অপরের ওপর যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল প্রয়োগ করে, তাকে তাড়িৎ চৌম্বক বল বলে।
১৬। সবল নিউক্লীয় বল কাকে বলে?
উত্তর : পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভেতর দুটি নিউক্লিয়নের মধ্যে যে শক্তিশালী বল কাজ করে তাকে সবল নিউক্লীয় বল বলে।
১৭। দুর্বল নিউক্লীয় বল কী?
উত্তর : যে স্বল্প পাল্লার এবং স্বল্প মানের বল নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরস্থ মৌলিক কণাগুলোর মধ্যে ক্রিয়া করে, তাকে দুর্বল নিউক্লীয় বল বলে।
১৮। বলের ঘাত কী?
উত্তর : কোনো বল ও বলের ক্রিয়াকালের গুণফলকে ওই বলের ঘাত বলে।
১৯। পিছলানো ঘর্ষণ বা বিসর্প ঘর্ষণ কী?
উত্তর : একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তু তথা তলের ওপর দিয়ে পিছলিয়ে বা ঘেঁষে চলতে চেষ্টা করে বা চলে, তখন যে ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়, তাকে পিছলানো ঘর্ষণ বা বিসর্প ঘর্ষণ বলে।
২০। ভরবেগ কী?
উত্তর : বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলকে ভরবেগ বলে। বস্তুর ভর m এর বেগ v হলে ভরবেগ P=mv।
২১। ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রটি বিবৃত করো :
উত্তর : একাধিক বস্তুর মধ্যে শুধু ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া ছাড়া অন্য কোনো বল কাজ না করলে কোনো নির্দিষ্ট দিকে তাদের মোট ভরবেগের কোনো পরিবর্তন হয় না।
বস্তুর ভর ও বেগের গুণফলই হলো ‘ভরবেগ’
কোনো বল ও বলের ক্রিয়াকালের গুণফলকে ওই বলের ঘাত বলে