<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সারা দুনিয়ায় ট্রেন এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় গণপরিবহন। ট্রেনভ্রমণ তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং এর পরিবেশদূষণের হারও অনেক কম। কিন্তু বাংলাদেশে হয়েছিল উল্টোটা। ট্রেন বা রেলওয়ে নিয়ে এখানে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। রেললাইন না বাড়িয়ে বিদ্যমান রেলপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। লাইন তুলে ফেলা হয়েছিল। মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিনগুলো চলাচলের অনুপযুক্ত হলেও নতুন ইঞ্জিন কেনা হয়নি। শিডিউল বিপর্যয় চরমে উঠেছিল। গত দেড় দশকে সেই অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নতুন লাইন হচ্ছে। ইঞ্জিন ও কোচ বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ আবার ট্রেনমুখী হয়েছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, যাত্রীবাহী ট্রেনের ভাড়ার ক্ষেত্রে যে রেয়াতি ব্যবস্থা (ভাড়ার ছাড়) ছিল, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই সিদ্ধান্ত আগামী ৪ মে থেকে কার্যকর করা হবে। এতে দূরের গন্তব্যে ট্রেনের ভাড়া ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এটি ঠিক যে বাংলাদেশ রেলওয়েকে যদি লাভজনক না করা যায়, তাহলে আবারও এর অগ্রগতি থমকে যাবে। আবারও এই খাতটিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। কিন্তু কেবল যাত্রীদের ওপর বোঝা বাড়িয়ে রেলওয়েকে লাভবান করা যাবে কি? প্রায়ই ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ইঞ্জিন, কোচের ক্ষয়ক্ষতি হয়। বলা হয়, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও মেরামতের অভাব রয়েছে। রেললাইনে পাথর কমে যাওয়া, একেবারেই না থাকা, মাটি দেবে যাওয়া, স্লিপার থেকে প্যান্ডেল ক্লিপ চুরি হয়ে যাওয়া, স্লিপার ভেঙে যাওয়া বা না থাকা, ফিশপ্লেট, নাট-বল্টু খুলে নেওয়াসহ আরো অনেক কারণেই ইঞ্জিন বা বগি লাইনচ্যুত হয় বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেল সেতুগুলো এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে সেগুলোর ওপর দিয়ে অনেক ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চালাতে হয়। তার পরও ঘটে দুর্ঘটনা। আছে অনেক রকম দুর্নীতির অভিযোগ। রেলওয়ের অনেক ভূমি রয়েছে। এসব ভূমির লিজ নিয়ে চলে বাণিজ্য। অভিযোগ আছে, লিজ না দিয়েও সমঝোতায় অন্যদের ভূমি ব্যবহার করতে দিয়ে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করা হয়। রেলওয়ের নিজস্ব অনেক কারখানা রয়েছে। অভিযোগ আছে, সেগুলো বন্ধ রেখে আমদানির তালিকা বাড়ানো হয় কমিশন বাণিজ্যের সুবিধার্থে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা আশা করি, গণপরিবহন হিসেবে ট্রেনকে এগিয়ে নেওয়ার এবং বাংলাদেশ রেলওয়েকে নতুনভাবে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। রেলওয়েকে অবশ্যই লাভজনক করতে হবে। কিন্তু তা কেবল যাত্রীর ঘাড়ে বোঝা চাপিয়ে নয়, বরং সার্বিক ও সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে রেল খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করা হোক।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p>