<p>প্যারানয়া নামে এক ধরনের সিজোফ্রেনিক সাইকোটিক রোগ রয়েছে, যা সিজোফ্রেনিয়ার অন্তর্গত। প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের সাথে প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ার মূল পার্থক্য হলো- সিজোফ্রেনিয়ায় কোনো প্যারানয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি বিশ্বাস করেন, কেউ তাকে মারার জন্য পরিকল্পনা করছে। শুধু তাই নয়, ব্যক্তি উক্ত পরিকল্পনাকারীর কণ্ঠস্বর, পায়ের আওয়াজ এবং ক্ষেত্রবিশেষে কাল্পনিক ষড়যন্ত্রকারীকে দেখতেও পান।</p> <p>কিন্তু পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার কোনো ব্যক্তির বয়ঃসন্ধি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সত্তায় উত্তরণের সময় দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণের সমষ্টি। সাধারণ মানুষ বা নিউরোটিপিক্যাল ব্যক্তি এবং পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য আছে। প্রধান পার্থক্য হলো, সাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষ সময়, পরিস্থিতি এবং প্রয়োজনের তাগিদে তাদের আচার-আচরণ পরিবর্তন করতে পারে এবং সামাজিক সম্পর্ক বিনির্মাণে স্বতঃস্ফূর্ত। কিন্তু পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের রোগীরা এমন নয়। এরা বিশ্বাস করে, আশপাশের প্রত্যেকটি মানুষ তার ক্ষতি করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।</p> <p>বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে ওই ব্যক্তি মানুষের প্রতি সব বিশ্বাস এবং আস্থা হারিয়ে ফেলেন। তার সব সময় মনে হতে থাকে- সবাই তার শত্রু। যদিও এই ধারণার পেছনে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। সাইকোটিক প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ার মতো প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের রোগীরা কোনো অশরীরী আওয়াজ শুনতে পায় না কিংবা কল্পনার জগতে বাস করে না।</p> <p>রাজনীতিবিদ, বিশেষত একনায়কদের মধ্যে এ ধরনের ব্যক্তিত্ব ব্যাধি দেখা যায়। কুখ্যাত একনায়ক জোসেফ স্ট্যালিনের সিভিয়ার প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার ছিল।</p> <p>লেখক : চিকিৎসক ও কথাসাহিত্যিক<br />  </p>