গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের নামে লুটপাটের খবর নতুন নয়। কাবিখা, কাবিটা, টিআর ইত্যাদির নামে চলে অবাধে টাকা লুণ্ঠন। এভাবে গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা চলে যাচ্ছে সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠীর হাতে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের স্বার্থে এসব প্রকল্প প্রণয়ন করে টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেন, এমন অভিযোগ অনেক পুরনো।
বিজ্ঞাপন
একই ধরনের অভিযোগ নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নে। গত বুধবার কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, এলাকার কিছু মানুষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যে পাহাড়পুর গ্রামে বাস্তবায়নাধীন কাবিখা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের পাঁয়তারা চলছে।
প্রকল্পের নামে এভাবে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের পকেট ভারী করতে ও দলের লোকদের কর্মসংস্থান করতে গিয়ে এভাবে নানা প্রকল্প দেখিয়ে উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা লুটপাটে অংশ নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। বাস্তবে কোনো উন্নয়নকাজ হয় না। ভুয়া উন্নয়ন প্রকল্প দাখিল করা হয়। এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তল্পিবাহকদের যুক্ত করা হয়। এভাবেই দলীয় নেতাকর্মী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পকেট ভারী হয়। কিন্তু বাস্তবে উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও কোথাও লাগে না। আর এসবের নেপথ্যে ইন্ধন থাকে এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের জনপদের উন্নয়নের জন্য কাবিখা-টিআর জাতীয় প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাবে না। সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বিস্তৃত করতে এজাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু একটি বিশেষ সুবিধাভোগী গোষ্ঠী যেভাবে এসব প্রকল্পের টাকা লুটপাট করে, তাতে মানুষের কল্যাণ কমই হয়।
এ ধরনের লুটপাটের প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে যে দুর্নীতি স্থানীয় পর্যায়ে হচ্ছে, তা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবে।