<p>নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সুদীর্ঘ তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগয়ার ট্রুডোর নাম। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বর্তমানে ট্রুডো ও তাঁর স্ত্রী উভয়ই আইসোলেশনে রয়েছেন।</p> <p>ট্রুডোর কার্যালয় জানায়, ব্রিটেন সফর শেষে দেশে ফিরে অসুস্থ বোধ করেন সোফি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। এতে তাঁর দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। তবে প্রধানমন্ত্রী সুস্থ আছেন এবং আপাতত তাঁকে কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে না। এ অবস্থায় কাউকে ঝুঁকিতে ফেলতে চান না বলে ট্রুডো ও সোফি দুজনই ১৪ দিনের আইসোলেশনে রয়েছেন। ঘরবন্দি থেকেই দাপ্তরিক কাজকর্ম চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। ফোনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন, বিশ্বনেতাদের সঙ্গেও প্রয়োজনীয় যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন।</p> <p>ট্রুডোর মতো আইসোলেশনে থেকে কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার তৎপরতা দেখাচ্ছেন বিশ্বের আরো অনেক দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে ৯ সদস্য, ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ইরানের ডেপুটি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ফ্রান্সের সংস্কৃতিমন্ত্রী, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্টের মতো অনেকে রয়েছেন সেই তালিকায়।</p> <p>অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডুটনের দেহে গতকাল শুক্রবার করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর তিনিও হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তবে তাঁর আক্রান্ত হওয়ার খবরে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত সপ্তাহেই তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন এবং সফরকালে তিনি মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ও সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভাংকা ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। সফরকালে তাঁর মধ্যে অসুস্থতার কোনো লক্ষণ ছিল না এবং তিনি কখন আক্রান্ত হয়েছেন, সেটাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।</p> <p>মেয়ে ইভাংকার ব্যাপারে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিলেও নিজের ব্যাপারে আরো আগে থেকে উদ্বিগ্ন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কারণ গত কয়েক দিনে তাঁর সংস্পর্শে আসা কয়েকজনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে এবং স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁরা বর্তমানে স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি জীবন যাপন করছেন। তাঁদের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা রয়েছেন, এমনকি রয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বলসোনারোর প্রেস সেক্রেটারি ফাবিও ওয়াজনগার্তেন। ব্রাজিলের এ কর্মকর্তার করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে গত বৃহস্পতিবার। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকেও নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।</p> <p>এ অবস্থায় ট্রাম্পের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক সূত্র। তিনি জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত যেসব ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়েছে, তাঁদের সবার জন্যই ট্রাম্প উদ্বিগ্ন। গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে অবশ্য দাবি করেছেন, ওই ভাইরাসে নিজে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে তিনি চিন্তিত নন।</p> <p>ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অথবা নিজের জন্য ট্রাম্প দুশ্চিন্তা করছেন কি না, তা নিয়ে তাঁর বিরোধী শিবিরের মাথাব্যথা নেই। তাঁরা বরং মহামারি রোধে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে সমালোচনায় ব্যস্ত। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জো বাইডেন ও বার্নি স্যান্ডার্স রয়েছেন সমালোচকদের মধ্যে। বাইডেনের দাবি, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে প্রশাসন চরম ব্যর্থ। এ পরীক্ষা বিনা মূল্যে করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া স্যান্ডার্সের অভিযোগ, প্রশাসনের অদক্ষতা আর বেপরোয়া মনোভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বহু মানুষের জীবন হুমকির মুখে। যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে ৪০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। সূত্র : এএফপি, সিএনএন।</p>