আবেদনে খেয়াল রাখুন
১. কম্পিউটার দোকান বা অন্য কারো মাধ্যমে আবেদন না করে নিজে নিজে অনলাইন আবেদন ফরম পূরণের চেষ্টা করুন।
২. এসএসসি সার্টিফিকেটে নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখ যেভাবে আছে, সেভাবেই আবেদন ফরম পূরণ করুন। এসএসসি সার্টিফিকেটে নেই এমন কোনো নতুন শব্দ নামের সঙ্গে যোগ করবেন না।
৩. বর্তমানে কোনো চাকরিতে কর্মরত থাকলে ‘এমপ্লয়মেন্ট স্ট্যাটাস’ অপশনে এই তথ্য উল্লেখ করতে হবে।
সরকারি চাকরিজীবী হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আবেদন করুন। তাহলে ভাইভার সময় অনাপত্তিপত্র (এনওসি) নিতে সুবিধা হবে।
৪. মেয়েদের ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানায় বাবার বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করতে পারেন।
৫. স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষার সব কার্যক্রম যদি ২২ আগস্ট ২০২৫ তারিখের মধ্যে শেষ হয়, তাহলে ৪৯তম বিসিএসে ‘অ্যাপিয়ার্ড’ প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতে পারবেন।
ভাইভার সময় ‘অ্যাপিয়ার্ড প্রত্যয়নপত্র’ জমা দিতে হবে।
৬. আবেদনের সময় আপলোড করা পাসপোর্ট আকারের ছবিতে ক্লিনিক্যাল চশমা বা হিজাব ব্যবহার করা যাবে। তবে মুখমণ্ডল স্পষ্ট থাকতে হবে।
৭. আবেদন জমার সময় পাওয়া ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করে রাখুন।
পরবর্তী কার্যক্রমে এগুলো দরকার হবে।
পরীক্ষা পদ্ধতি
প্রথম ধাপে ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা এবং পরবর্তীতে ১০০ নম্বরের ভাইভা নেওয়া হবে। এমসিকিউ পরীক্ষায় সাধারণ বিষয় অর্থাৎ বাংলায় ২০, ইংরেজিতে ২০, বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০, গণিতে ১০, মানসিক দক্ষতায় ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। ১০০ নম্বরের এই পরীক্ষা পিএসসি প্রণীত ‘প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস’ অনুযায়ী হবে। লিখিত পরীক্ষার বাকি ১০০ নম্বরের প্রশ্ন হবে পদসংশ্লিষ্ট।
৪৯তম বিশেষ বিসিএসের সাধারণ বিষয় (১০০ নম্বর) এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের (১০০ নম্বর) সিলেবাস প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
সাধারণ বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য বাজারের প্রচলিত যেকোনো সহায়ক বই সিলেবাস ধরে ধরে পড়তে পারেন। পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস অনুযায়ী প্রার্থীর নির্ধারিত বিষয়ের উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বই থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
প্রস্তুতি
৪৯তম বিসিএসের এমসিকিউ পরীক্ষা হবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। প্রস্তুতির জন্য এখন থেকে দুই মাসের মতো সময় পাওয়া যাবে। যাদের প্রস্তুতি ভালো, তাদের রিভাইসের জন্য এটা পর্যাপ্ত সময়। কিন্তু নতুন প্রার্থীদের জন্য এই সময়টা যথেষ্ট না। এ ক্ষেত্রে রুটিন সাজিয়ে পরিকল্পিত প্রস্তুতির বিকল্প নেই।
এখানে ৬০ দিনে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। নমুনা রুটিন দেওয়া হলো :

একনজরে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার
বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার কর্মকর্তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে পদায়ন, পদোন্নতি, বদলিসহ পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। কারিগরি শিক্ষা ছাড়া শিক্ষার সব পর্যায়ের (প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চশিক্ষা ইত্যাদি) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার গঠন করা হয়েছে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন দপ্তরে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পদ ও কাজের পরিধি সংকুচিত হয়েছে। সরকারি সাধারণ কলেজ, শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম), শিক্ষা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-সহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রকল্পগুলোতে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়।
সরকারি কলেজগুলোতে এই ক্যাডারের পদক্রম হলো প্রভাষক>সহকারী অধ্যাপক>সহযোগী অধ্যাপক>অধ্যাপক। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে পদসোপান হলো শিক্ষা/গবেষণা কর্মকর্তা>সহকারী পরিচালক>উপপরিচালক> পরিচালক> মহাপরিচালক।
প্রশিক্ষণ ও বেতন-ভাতা
চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তাকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি অথবা সরকার নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে চার মাস মেয়াদি বনিয়াদি প্রশিক্ষণ (ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স-এফটিসি) নিতে হয়। এই ক্যাডারের কোনো বিভাগীয় প্রশিক্ষণ নেই। তবে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট শিক্ষা গবেষণা কোর্স, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, সিনিয়র স্টাফ কোর্স অন এডুকেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট—এ ধরনের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এ ছাড়া অফিস ব্যবস্থাপনা, ই-ফাইলিং, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, প্রকিউরমেন্ট, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতো দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে হতে পারে। সরকারি-বেসরকারি বৃত্তি নিয়েও দেশে-বিদেশে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ আছে। সব ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী ২২,০০০ টাকা মূল বেতনে চাকরিজীবন শুরু করেন। যোগ দেওয়ার সময় একটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়। একাডেমিক পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি (সমমান) থাকলে আরো একটি ইনক্রিমেন্ট দেবে। মূল বেতনের ওপর নির্ধারিত হারে বাড়িভাড়া ভাতা (জেলা শহরে ৪০%, অন্যান্য বিভাগে ৪৫%, ঢাকা বিভাগে ৫০%) দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, সন্তানের জন্য শিক্ষা সহায়ক ভাতা, উৎসব ভাতা, নববর্ষ ভাতা, সরকারি দায়িত্ব ও যাতায়াতের জন্য টিএ/ডিএ ভাতাসহ সরকারি আর্থিক সুবিধা পান এ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
পদায়ন ও দায়িত্ব
এই ক্যাডারে শিক্ষকতা ও দপ্তর উভয় পর্যায়ে চাকরির সুযোগ আছে। বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব পদে পুলের সুযোগসহ অন্যান্য ক্যাডারের মতো সিভিল সার্ভিসের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত কর্মস্থল থাকায় বাংলাদেশের সব জেলায়ই পদায়নের সুযোগ আছে। তবে শিক্ষা ক্যাডারে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি না হয়ে বিষয়ভিত্তিক/সাব-ক্যাডারভিত্তিক পদোন্নতি হয়। তাই পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়! এই ক্যাডারে গাড়ি সুবিধা, আবাসন ও কর্মপরিবেশ অন্যান্য দপ্তরের মতো নয়। কর্মস্থলভেদে কাজের চাপ কম-বেশি হতে পারে।
আবেদন যেভাবে
শুধু একটি ক্যাডারের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় এবার পছন্দক্রম নির্ধারণের সুযোগ নেই। এই বিসিএসের পরীক্ষা শুধু ঢাকা কেন্দ্রে নেওয়া হবে। আবেদনের প্রক্রিয়া ও অন্যান্য যোগ্যতা সাধারণ বিসিএসগুলোর মতোই। প্রতিটি পদে আবেদনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন হতে হবে। নির্ধারিত বিষয়ে স্নাতক নেই, কিন্তু স্নাতকোত্তর আছে, এমন হলে আবেদন করা যাবে না।
কোনো কোনো পদে সংশ্নিষ্ট বিষয় একটি আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে একাধিকও হতে পারে। যেমন—প্রভাষক (গণিত) পদের জন্য গণিত এবং ফলিত গণিত উভয় বিষয়ের স্নাতকধারী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন লিংক
http://bpsc.teletalk.com.bd/bcs49