ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭
একাদশ-দ্বাদশরসায়ন প্রথম পত্র

সহজে বের করি এসিডের তীব্রতা

  • এসিডের তীব্রতা বুঝতে এর বিয়োজন ধ্রুবক মনে রাখা প্রয়োজন। কিন্তু বিদঘুটে সংখ্যাগুলো একেবারেই মনে থাকতে চায় না। সহজ কিছু কৌশল জানাচ্ছেন কাজী ফারহান পূর্ব
অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
সহজে বের করি এসিডের তীব্রতা

প্রথম পদ্ধতি : এসিডগুলো হাইড্রাসিড হলে ঋণাত্মক আয়নের আকারের ওপর নজর দিতে হবে। যেসব এসিডের অণুতে হাইড্রোজেন ও হ্যালোজেন থাকে তাদের হাইড্রাসিড বলে। ফ্লোরিন, ক্লোরিন, ব্রোমিন, আয়োডিন—এগুলো হ্যালোজেন। হাইড্রাসিডগুলো হলো—HCl, HBr, HI ইত্যাদি।

এই তিন এসিডের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে তীব্র তার উত্তর লুকিয়ে আছে এসিডগুলোর ঋণাত্মক আয়নের আকারের মধ্যে। এসব হাইড্রাসিডের ঋণাত্মক আয়ন যথাক্রমে Cl–, Br– এবং I—। তোমরা জানো, পর্যায় সারণির একই গ্রুপে ওপর থেকে নিচে নামলে পরমাণুর আকার বাড়ে। এর মানে আয়নগুলোর মধ্যে আকারের ক্রম হলো I–> Br–> Cl–| অর্থাৎ I— এর আকার সবচেয়ে বড়।
হাইড্রাসিডগুলোর মধ্যে যার ঋণাত্মক আয়নের আকার সবচেয়ে বড় তার এসিড ধর্মের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি হবে। সেই হিসাবে এসিডের তীব্রতার ক্রম হবে HI> HBr > HCl। অর্থাৎ তিনটির মধ্যে HI সবচেয়ে তীব্র।

দ্বিতীয় পদ্ধতি : অক্সি এসিডের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পরমাণুর ধনাত্মক জারণ মানের দিকে নজর দিতে হবে।

যেসব এসিডের হাইড্রোজেনের সঙ্গে অক্সিজেন ও অন্য এক বা একাধিক অধাতব মৌল থাকে ওগুলোই অক্সি এসিড। এ ধরনের এসিডের মধ্যে যেটার কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান বেশি সেটাই বেশি তীব্র। কেন্দ্রীয় পরমাণু কথাটা শুনেই বুঝতে পারছ যে পরমাণুটা কেন্দ্রে বা মাঝে থাকবে। যেমন HNO2 এর কেন্দ্রীয় পরমাণু হলো N। এর জারণ মান বের করার জন্য আমরা ধরে নেব N-এর জারণ মান x।
আমরা জানি, H-এর জারণ মান +1 এবং O-i জারণ মান —২।

আরেকটা বিষয় দ্রষ্টব্য, HNO2-তে H, ঘ আছে একটা করে। O আছে দুটো। যে যতবার আছে সে সংখ্যাটা তাদের নিজ নিজ জারণ মানের সঙ্গে গুণ করতে হবে। আমরা জানি, কোনো নিরপেক্ষ যৌগের সামগ্রিক চার্জ শূন্য। আমরা যদি সব জারণ মান যোগ করি তবে উত্তর আসবে শূন্য। এ শর্তানুযায়ী আমাদের সমীকরণ হবে 1+x+2x(@2) = 0 বা x = 3। অতএব, HNO2 এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান হলো +3।

একইভাবে আমরা HNO3 এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মানও বের করতে পারব। এ ক্ষেত্রে 1+x-3x(@2) = 0  ev, x = 5। অর্থাৎ HNO3-তে কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান +5।

দুটি এসিডের কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান যেটার বেশি, সেই এসিডই বেশি শক্তিশালী। HNO3 এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান +5, HNO2 এর +৩ এর চেয়ে বেশি। অতএব, HNO3 হলো HNO2 এর চেয়ে তীব্র এসিড।

আবার ধরো, H2SO3 I H2SO4-র মধ্যে কোনটা তীব্র? H2SO3-এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান 2x(+1)+x+3x(@2) = 0 ev, x = +4। আবার, H2SO4-এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান 2x(+1)+x+4x(@2) = 0 বা, x = + 6। অতএব, H2SO4-এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ মান +6। তার মানে H2SO4, H2SO3 এর চেয়ে বেশি তীব্র।

তৃতীয় পদ্ধতি : এবার একটা মজার সমস্যা দেখা যাক। HNO3 I H3PO4-এ দুটি যৌগের মধ্যে কোনটি বেশি তীব্র? কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ সংখ্যা বের করে চটপট দেখা যাক।

HNO3 এর বেলায় 1+x+3x(@2) = 0 ev,  x = +5| H3PO4-এর বেলায় 3x(+1)+x+4x(@2) = 0 ev, x = +5। অর্থাৎ দুটোর জারণ মান সমান।

কথায় বলে, ছোট মরিচের ঝাল বেশি। এমন পরিস্থিতিতে দেখবে কোন যৌগটির কেন্দ্রীয় পরমাণু ছোট। যেটার ছোট সেটিই বেশি তীব্র এসিড। HNO3 এর কেন্দ্রীয় পরমাণু N-এর আকার H3PO4-এর কেন্দ্রীয় পরমাণুর চেয়ে ছোট। তাই HNO3, H3PO4 এর চেয়ে তীব্র।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ