<p>যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনে কমলা হ্যারিসের কাছে দলের নেতৃত্ব হস্তান্তর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সোমবার শুরু হওয়া সম্মেলনে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলাকে আলিঙ্গন করেন আবেগাপ্লুত বাইডেন। দেশের জন্য নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। বিদায়ি ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকা, আমেরিকা, আমি তোমাকে আমার সেরাটা দিয়েছি।’</p> <p>প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী ভাষণে নিজের আমলের বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরেন বাইডেন। একই সঙ্গে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলাকে জয়ী করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। গত জুনে ট্রাম্পের কাছে প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে ধরাশায়ী হন বাইডেন। এতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন ডেমোক্র্যাটরা।</p> <p>দলীয় চাপে গত জুলাইয়ে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন বাইডেন। এরপর কমলার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। এমনকি বেশ কয়েকটি জনমত জরিপের তথ্য বলছে, ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন কমলা। শিকাগোর ইউনাইটেড সেন্টারে গত সোমবার শুরু হওয়া ডেমোক্র্যাটদের জাতীয় সম্মেলন চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। সম্মেলনে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ভাষণ দেবেন। শেষ দিন দলের আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণের কথা কমলার।</p> <p>এদিন সম্মেলনের শুরুতেই বাইডেনকে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানান সমর্থকরা। এ সময় বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেন ও মেয়ে অ্যাশলি বাইডেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। ভাষণের একপর্যায়ে বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, দলীয় চাপে লড়াই থেকে সরে যাওয়ায় তার মনে কোনো তিক্ততা নেই।</p> <p>বরং তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প যাতে ওভালে অফিসে ফিরতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে যা ভালো মনে হয়েছে তা-ই করেছেন। ৮১ বছর বয়সী বাইডেন বলেন, ‘আমি কাজটা ভালোবাসি, তবে দেশকে আরো বেশি ভালোবাসি। যাঁরা আমাকে সরে যেতে চাপ দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি ক্ষুব্ধ বলে যে খবর রটেছে, তা সত্য নয়।’</p> <p>এদিন মঞ্চে ওঠার কথা ছিল না কমলার। তবে সমর্থকদের চমকে দিয়ে বক্তব্যও দেন। সাধারণত ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সম্মেলনের শেষ দিন বক্তব্য দিয়ে থাকেন।</p> <p>প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ৫৯ বছর বয়সী কমলা বলেন, ‘আমাদের অতুলনীয় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অর্জন উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন করে শুরু করতে চাই। আমরা আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’</p> <p>সম্মেলনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় কিছু একটা ঘটতে চলেছে। আপনারা অনুভব করতে পারছেন—এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে, যার জন্য আমরা দীর্ঘদিন কাজ করেছি ও স্বপ্ন দেখেছি।’</p> <p>এদিকে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের প্রতিবাদে গত সোমবার সম্মেলনের প্রথম দিনেই কয়েক হাজার মানুষ শিকাগোর রাস্তায় নেমে আসে। এদিন সম্মেলনকেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। তাঁদের ভেতরে প্রবেশ ঠেকাতে বাধা দেয় পুলিশ।</p> <p>বিশ্লেষকরা বলছেন, শিকাগোর আরব আমেরিকান ও বামপন্থী ডেমোক্র্যাট ভোটাররা কমলার মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন। মূলত গাজা যুদ্ধ নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকায় তাঁরা ক্ষুব্ধ।</p> <p>সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা</p>