<p>অবশেষে শর্তসাপেক্ষে মেনে নেওয়া হল বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের দাবি। টানা পঁচিশ ঘণ্টা পর ঘেরাওমুক্ত হলেন উপাচার্য এবং অধ্যাপক। মঙ্গলবার রাতভর তাঁদের আটকে বিক্ষোভ দেখান বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের বাইরে বের করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন কয়েকজন অধ্যাপক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে অশান্ত হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস।</p> <p>ক্রমাগত ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরেই বিশ্বভারতীতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। সমস্যা সমাধানে ৮০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক ও কর্মসমিতির সদস্য-সহ একাধিক কর্মকর্তারা। এদিনের বৈঠকে ফি বৃদ্ধির কারণ স্পষ্টভাবে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।</p> <p>তাঁদের জানানো হয়, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন করতে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। সেই কারণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৫২৮ কোটি টাকা ব্যাংক লোন নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে সুদ দিতে হবে ৫২ কোটি টাকা। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। উপাচার্য  জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে ৫০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য চেয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মিলেছে মাত্র ১০ কোটি টাকা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির জন্যই এই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। যা কোনোভাবেই এই মুহূর্তে কমানো সম্ভব নয়।’</p> <p>উপাচার্যের এই কথা শোনার পর ফের আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার লিপিকা গৃহে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অধ্যাপকদের আটকে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা। রাতভর চলে বিক্ষোভ।</p> <p>দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন নারী অধ্যাপক। বুধবার সকালে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করতে গিয়ে পড়ুয়াদের বাধার মুখে পড়েন কয়েকজন অধ্যাপক। ছাত্রদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে তাঁরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী চত্বর। অধ্যাপক, শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।</p> <p>ওদিকে শর্তসাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলা হলেও কর্তৃপক্ষ নিয়েছে এক আজব সিদ্ধান্ত। সূত্রের খবর অনুযায়ী ফি বৃদ্ধি নিয়ে কিছুটা পিছু হটেছে কর্তৃপক্ষ। যাঁরা ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১০০০ টাকা দিয়েছিল, অ্যাডমিশনের সময় ৫০০ টাকা অ্যাডজাস্ট করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে আবেদনকারীর মোট সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। যাঁরা বর্তি হবেন, তাঁদের টাকা না হয়, অ্যাডজাস্ট করে দেওয়া হবে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে কী হবে, উঠছে প্রশ্ন।</p>