<p>যত ইবাদত আছে সবই উপকারী এবং যত পাপকাজ আছে সবই ক্ষতিকর। তারপরও মৌলিক কিছু আমল আছে, যেগুলো করা বা পরিহার করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সেগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করা হলে অন্যান্য আমল সংরক্ষণ ও বিশুদ্ধকরণ সহজ হয়ে যায়। নিম্নে এমন কিছু আমলের আলোচনা তুলে ধরা হলো—</p> <p><strong>১. ধর্মীয় জ্ঞানার্জন : </strong>ইলামে দ্বিন বা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা। হোক সেটা কিতাব পড়ে বা আলেমদের সান্নিধ্যে থেকে। বরং কিতাব পড়ে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করার পরও আলেমদের সান্নিধ্যে থাকা জরুরি।</p> <p><strong>২. আলেমদের সান্নিধ্য :</strong> আলেম দ্বারা এমন আলেম উদ্দেশ্য—যাঁরা জ্ঞান অনুযায়ী আমল করেন। যাঁদের মধ্যে শরিয়ত ও হাকিকতের সমন্বয় ঘটেছে। সুন্নতের ওপর সুদৃঢ়, মধ্যপন্থী এবং অতিরঞ্জন ও অতিশৈথিল্য থেকে দূরে থাকেন। আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি স্নেহপরায়ণ। যাঁদের মধ্যে হঠকারিতা ও গোয়ার্তুমি নেই। এককথায় যাঁদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিম্নোক্ত বাণীর প্রতিফলন দেখা যায়—আমার উম্মতের একটি দল সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে এবং আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। যারা তাদেরকে পরিত্যাগ করবে, তারা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩১১)</p> <p><strong>৩. নামাজ : </strong>যেকোনো পরিস্থিতিতে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। যতদূর সম্ভব জামাতের সঙ্গে পড়ার চেষ্টা করবে। অপারগ হলে যেভাবে সম্ভব সেভাবে নামাজ পড়ে নেবে। এতে আল্লাহর দরবারের সঙ্গে একটি সম্পর্ক ও যোগসূত্র প্রতিষ্ঠিত থাকবে। নামাজের বরকতে ইনশা আল্লাহ নামাজির দোষত্রুটি সংশোধিত হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ যাবতীয় অশ্লীল ও অসৎকর্ম থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)</p> <p><strong>৪. কম কথা বলা : </strong>মানুষের সঙ্গে কম কথা বলা ও কম মেলামেশা করা। যা কিছু বলার চিন্তা-ভাবনা করে বলা। শত-সহস্র বিপদ থেকে নিরাপদ থাকার একটি উত্তম উপায় এটি।</p> <p><strong>৫. মুরাকাবা ও মুহাসাবা : </strong>বেশির ভাগ সময় এ খেয়াল রাখা যে আমি আমার মালিকের সামনে অবস্থান করছি। আমার সব কথা, কাজ ও অবস্থা তিনি দেখছেন। এটি হলো মুরাকাবা। আর মুহাসাবা হলো কোনো একটি সময়—যেমন ঘুমানোর আগে একাকী বসে সারা দিনের কাজের কথা স্মরণ করে এরূপ ধারণা করবে যে এখন আমার হিসাব হচ্ছে, কিন্তু আমি উত্তর দিতে পারছি না।</p> <p><strong>৬. তাওবা ও ইস্তিগফার :</strong> যখনই কোনো ভুল হয়ে যাবে বিলম্ব না করে, কোনো জিনিসের অপেক্ষা না করে নির্জন স্থানে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে খুব মাফ চাওয়া। কান্না এলে কান্না করা। তা না হলে কান্নার ভান করা। এই সহজ বিষয়গুলোর প্রতি যত্নশীল হলে আল্লাহর দরবারে আশা করা যায় যে তিনি অন্যান্য আমল সহজ করে দেবেন।</p> <p><em>‘জাযাউল আমাল’ থেকে মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর</em></p>