<p>অব্যাহত পতনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল যেন হাস্যকর দলে পরিণত হয়েছে। বাফুফে সভাপতির অব্যাহত কথার ফুলঝুড়ির মাঝে পাড়ার ক্লাবের সঙ্গেও ইদানিং হারতে শুরু করেছে জাতীয় দল। বিশ শতকের শেষ আর একুশ শতকের শুরু থেকেই দেশের ফুটবলের পতনের শুরু হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় একের পর এক কোচ বদল। বাংলাদেশের ফুটবলে কোচের টিকে থাকা আর রাশিয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়া একই বিষয়।</p> <p>উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে চলতি ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২০জন কোচ এসেছেন এবং গিয়েছেন! এর আগে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত কোচের তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৭৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৩২ বছরে কোচ ছিলেন মাত্র ১২ জন। আর সর্বশেষ ১০ বছরের হিসেবে দেখা যায়, বছরপ্রতি ২জন করে কোচ এনেছে এবং বিদায় করেছে বাফুফে!</p> <p>২০০৮ সালের মে মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন দেশিয় কোচ সৈয়দ হাসান কানন। তারপর ২ মাসের জন্য আবু ইউসুফকে কোচ করা হয়। সাবেক তারকা শফিকুল ইসলাম মানিক ওই বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন ব্রাজিলের কোচ ডিডো। তিনি একটু বেশি সময় নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন। ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ মাস দায়িত্ব পালন করেন দেশিয় কোচ রিজওয়ান আলী জাহেদ। <img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/SATYAJIT/couachl_kalerkantho_pic.jpg" style="float:left; height:321px; width:700px" /></p> <p>২০১০ সালের জানুয়ারিতে আনা হয় সার্বিয়ান কোচ জোরান জর্জেভিচকে। উনি ফ্রেব্রুয়ারিতেই বিদায় হন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল বারী টিটু। সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত বেশ কয়েকমাস কাটিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ রবার্ট রুবচিচ। ওই বছর জুনে এসেই বিদায় হন মেসিডোনিয়ান কোচ জর্জ ইভানোভস্কি। ওই মাসেই নতুন কোচ হিসেবে আসেন নিকোলা ইলিয়ভস্কি। টিকে যান ডিসেম্বর পর্যন্ত।</p> <p>২০১২ সালের শুরু থেকে কোচহীন জাতীয় ফুটবল দল। সেপ্টেম্বরে পুনরায় দায়িত্ব পান সাইফুল বারী টিটু। কাটিয়ে দেন ডিসেম্বর পর্যন্ত। জানুয়ারি ২০১৩ সালে আসেন নেদাল্যান্ডের কোচ লডউইক ডি ক্রুইপ। গত ১০ বছরে তিনিই সম্ভবত বেশি সময় টিকে থাকা কোচ। টিকে যান  ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ওই মাসেই নতুন কোচ হিসেবে আসেন ইতালিয়ান ফাবিও লোপেজ। নভেম্বরেই বিদায় নেন তিনি।</p> <p>২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন দেশিয় কোচ মারুফুল হক। ফেব্রুয়ারিতে আসেন গঞ্জালো সানচেজ মরেনো। মে মাস পর্যন্ত টিকেছিলেন এই স্প্যনিশ কোচ। মে মাসে দায়িত্ব নিয়ে জুন মাসেই বিদায় হন নেদারল্যান্ডসের কোচ লুডউইক ডি ক্রুইফ। ২০১৬ সালের জুনে আসেন টম সেইন্টফিট। এই বেলজিয়ান কোচ টিকে যান অক্টোবর পর্যন্ত। তারপর আবারও কোচহীন বাংলাদেশ।</p> <p>২০১৭ সালের মে মাসে নতুন কোচ হিসেবে আসেন ইংলিশ-অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্ডু ওর্ড। চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি যোগ দেন থাইল্যান্ডে ক্লাব এয়ারফোর্স সেন্ট্রাল এফসিতে। একটি জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে অচেনা ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়া মানে আমাদের ফুটবলের মান কতটা নীচে বুঝতে পারছেন? চলতি বছরের মে মাসে নতুন কোচ হিসেবে এসেছেন ইংল্যান্ডের জেমি ডে। কতদিন টিকতে পারেন দেখা যাক।</p>