<p>একবার নাসিরুদ্দিন হোজ্জা বাদশাহর জন্য একটি বিশেষ উপহার নিয়ে যাচ্ছিলেন। উপহারটি ছিল মূল্যবান। সেটা তিনি নিজ হাতে বাদশাহকে দিতে চান। দরবারের প্রধান ফটকে পৌঁছানোর পর প্রহরী হোজ্জাকে আটকে দিলেন। প্রহরী বলল, ‘তুমি উপহারটি আমাকে দাও, আমি বাদশাহর কাছে পৌঁছে দেব। তোমার ভেতরে যাওয়ার দরকার নেই।’</p> <p>কিন্তু হোজ্জা, যেমন তিনি বুদ্ধিমান, সহজে দমে যাওয়ার পাত্র নন। তিনি প্রহরীকে বললেন, ‘না, আমি নিজ হাতে উপহার দিতে চাই।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="রবীন্দ্রনাথের অতিথি বিড়াম্বনা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/02/26/1708934515-c767700c865254c858a9a1546d768421.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>রবীন্দ্রনাথের অতিথি বিড়াম্বনা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/02/26/1366769" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তবে প্রহরীও নাছোড়বান্দা। তিনি বললেন, ‘তুমি কিছুতেই ভেতরে যেতে পারবে না। আমাকে দাও উপহারটি, আমি নিজেই দিয়ে আসব।’</p> <p>হোজ্জা বুঝলেন, প্রহরীর সাথে বিতর্ক করে কোনো লাভ নেই। তাই তিনি কৌশলে বললেন, ‘ঠিক আছে, আমি যদি বাদশাহর কাছ থেকে কোনো পুরস্কার পাই, তার অর্ধেক তোমাকে দেব।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শহীদুল্লাহর সময়জ্ঞান" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/03/25/1711362231-28fa01910ae2494b633847146db60ef1.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শহীদুল্লাহর সময়জ্ঞান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/03/25/1374565" target="_blank"> </a></div> </div> <p>প্রহরী এই শর্তে রাজি হয়ে হোজ্জাকে ভেতরে যেতে দিলেন।</p> <p>দরবারে পৌঁছে হোজ্জা বাদশাহর হাতে উপহার তুলে দিলেন। বাদশাহ হোজ্জার উপহার পেয়ে খুব খুশি হলেন। তিনি হোজ্জাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কী চাও পুরস্কার হিসেবে?’</p> <p>সবার ধারণা ছিল, হোজ্জা কিছু মূল্যবান উপহার চাইবেন। কিন্তু হোজ্জা তো অন্য ধাতুতে গড়া! তিনি বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘আমি ৫০ ঘা বেত্রাঘাত চাই, জাঁহাপনা।’</p> <p>দরবারের সবাই স্তম্ভিত! বাদশাহও হতবাক হয়ে বললেন, "এ কেমন পুরস্কার? আমি তোমাকে অন্য কিছু দিতে চাই। তুমি বেত্রাঘাত কেন চাও?’</p> <p>কিন্তু হোজ্জা নিজের দাবিতে অটল থাকলেন। তিনি বারবার অনুরোধ করতে লাগলেন, ‘না, আমার পুরস্কার হোক ৫০ ঘা বেত্রাঘাত।’ অবশেষে বাদশাহ হোজ্জার জেদ দেখে বেত্রাঘাতের আদেশ দিলেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="রবীন্দ্র রসিকতা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/05/27/1716804248-0eea63ff53c5a56478d1bf859aa83a63.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>রবীন্দ্র রসিকতা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/05/27/1391869" target="_blank"> </a></div> </div> <p>যখন ২৫টি বেত্রাঘাত দেওয়া হলো, তখন হোজ্জা হাত উঁচু করে বললেন, ‘থামুন!’</p> <p>এরপর বাদশাহর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘জাঁহাপনা, আমার পুরস্কারের অর্ধেক অন্য একজনের পাওনা।’</p> <p>বাদশাহ বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কে সেই ভাগীদার?’</p> <p>হোজ্জা মুচকি হেসে প্রহরীর কাহিনী খুলে বললেন। হোজ্জার কথা শুনে বাদশাহ রাগে ফেটে পড়লেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রহরীকে ডেকে আদেশ দিলেন, ‘যতটা বেত্রাঘাত বাকি আছে, তা ওই প্রহরীকে দেওয়া হোক!’</p> <p>হোজ্জার কৌশল আর বিচক্ষণতায় সবাই মুগ্ধ হলো। প্রহরী নিজের অপরাধের শাস্তি পেল, আর হোজ্জা নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেন।<br />  </p>