<p>বর্ষাকাল শীতল বৃষ্টি হয়। তাপমাত্রাও গ্রীস্মকালের চেয়ে কম থাকে। তারপরও বর্ষাকালে আমরা গরমে অতিষ্ঠ হই কেন? এর কারণ বুঝতে হলে আমাদের কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে।</p> <p>প্রথমত, বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। আর্দ্রতা বলতে আমরা বুঝি বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি। উচ্চ আর্দ্রতার কারণে আমাদের শরীর থেকে ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হতে পারে না। স্বাভাবিক অবস্থায়, ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে শরীরকে শীতল করে। কিন্তু যখন বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে, তখন ঘাম বাষ্পীভূত হতে পারে না। ফলে শরীর থেকে তাপ ঠিকমতো বের হতে পারে না এবং আমাদের গরম লাগে।</p> <p>দ্বিতীয়ত, বর্ষাকালে মেঘের কারণে সূর্যের তাপ সরাসরি আমাদের উপর পড়ে না, কিন্তু মেঘের স্তর তাপকে আটকে রাখে। এই তাপ বাতাসের মধ্যে আটকানো থাকে, যা বাতাসকে গরম রাখে। এই গরম বাতাস আমাদের শরীরের সাথে মিশে গিয়ে গরম অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়।</p> <p>তৃতীয়ত, বর্ষাকালে বাতাসের প্রবাহ (air circulation) অনেক সময় কমে যায়। বাতাসের গতি কম থাকলে এবং বাতাস বেশি স্থির থাকলে তা গরম অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, তাজা বাতাসের অভাবে শরীরের তাপ কমানোর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।</p> <p>অবশেষে, আমাদের জীবনযাত্রার অভ্যাস ও পরিবেশগত কারণও বর্ষাকালে গরম লাগার সাথে জড়িত। শহরের ইট-পাথরের ভবন এবং কংক্রিটের রাস্তাঘাট গরম শোষণ করে এবং তা ধরে রাখে, যা রাতের বেলাতেও তাপ ছাড়ে এবং পরিবেশকে গরম রাখে।</p> <p>এ সব মিলিয়েই বর্ষাকালে বেশি গরম অনুভূত হয়। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হালকা এবং সুতির পোশাক পরা, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা এবং যতটা সম্ভব শীতল স্থানে থাকার চেষ্টা করা উচিত। তাছাড়া, ফ্যান এবং এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহারের মাধ্যমে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করা যেতে পারে।<br />  </p>