<p><strong>সহিংসতায় হতে পারে মানসিক সমস্যা : </strong>চিকিৎসাজগতে ট্রমাকে শারীরিক আঘাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেকোনো আঘাতজনিত সমস্যা মানসিক আঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে গার্হস্থ্য সহিংসতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনা।</p> <p><strong>পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিস-অর্ডার : </strong>সহিংসতার শিকার বা প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের পরবর্তী সময়ে ‘পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিস-অর্ডার’ (সংক্ষেপে যা ‘পিটিএসডি’) রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।</p> <p>গুলি, বোমা, আগুন, সংঘর্ষ, অপহরণ বা ধর্ষণের মতো ঘটনার শিকার বা প্রত্যক্ষদর্শীরাও রয়েছেন এ রোগের ঝুঁকির মধ্যে। পিটিএসডিতে আক্রান্ত ব্যক্তির মনে সহিংসতার ভয়ংকর স্মৃতি ফিরে ফিরে আসে। ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো শব্দ, দৃশ্য বা আলোচনা ব্যক্তির মনে আকস্মিক সে স্মৃতি জাগিয়ে তোলে। ব্যক্তি আবারও ঘটনার সময়কার মতো একই রকম আতঙ্ক অনুভব করে।</p> <p>সহিংসতা সম্পর্কিত দুঃস্বপ্নে ঘুম নষ্ট হয়। সব সময় বিপদাশঙ্কায় মাত্রাতিরিক্ত সতর্ক আচরণ করে। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা কমিয়ে দেয়। নিজের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশে অক্ষম হয়ে পড়ে।</p> <p><strong>সমস্যা</strong></p> <p>* সহিংসতার অভিজ্ঞতা পরবর্তী সময়ে বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। শারীরিক বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়; যেমন—মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, বুক ধড়ফড়, হাত-পা কাঁপা, খাওয়ায় অরুচি প্রভৃতি।</p> <p>* মানসিক যন্ত্রণা ও চাপ থেকে মুক্তি পেতে বা সহিংসতার স্মৃতি সাময়িকভাবে ভুলে থাকতে অনেকে মাদক গ্রহণ করে।</p> <p>* সহিংসতার শিকার হওয়ার ফলে সৃষ্ট অবর্ণনীয় মানসিক চাপ ও কষ্ট আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।</p> <p>* ভুক্তভোগীরা অনেক সময় পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা অনুভব করে। সামাজিক সম্পর্কগুলো থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকে।</p> <p><strong>চিকিৎসা : </strong>সহিংসতার শিকার বা প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিকে তার চিন্তাভাবনা ও যথাযথ আবেগ প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সামাজিক ও আইনি সহায়তার মাধ্যমে তার নিরাপত্তাবোধ নিশ্চিত করতে হবে। ঘটনার কারণে সৃষ্ট মানসিক চাপ মোকাবেলা ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিষণ্নতা, উদ্বেগ, পিটিএসডিসহ যেকোনো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। আত্মহত্যা প্রতিরোধে নিকটজনদের বিশেষভাবে সতর্ক হতে হবে।</p> <p>পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p><strong>ডা. মুনতাসীর মারুফ</strong></p> <p>সহযোগী অধ্যাপক</p> <p>কমিউনিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ</p> <p>জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট</p>