<p>পোশাকশ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাবুল হোসেনসহ গ্রেপ্তার সব পোশাকশ্রমিক ও নেতাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৩৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা এই মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে চারজনের নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।</p> <p>শনিবার (৯ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এই যৌথ বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা শ্রমিকের আন্দোলন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার খর্ব বন্ধ করারও আহ্বান জানান।</p> <p>বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছর পোশাকশ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন নিয়ে ৫৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা হাজারো শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে।</p> <p>বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ পোশাকশ্রমিকেরা বর্তমানে কঠিন সময় পার করছেন উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, শ্রমিকেরা সারা দুনিয়ার মানচিত্রে বাংলাদেশের পতাকা পরিচিত করলেও সস্তা মজুর পরিচয় তাঁদের ঘোচেনি। উন্নয়নশীল দেশের সুনাম কুড়ালেও শ্রমিকের জীবনযাপনে উল্লেখযোগ্য মানোন্নয়ন ঘটেনি। তাঁরা বলেন, মজুরি বৃদ্ধি করে ২৫ হাজার টাকা করার দাবি করলেও শেষমেশ ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্ত করা হয়। এ মজুরিতে বর্তমান বাজারে চলা কঠিন।</p> <p>বিবৃতি দেওয়া বিশিষ্টজনেরা বলেন, মানবাধিকার নিয়ে রাষ্ট্র-সরকার ও মালিক-বায়ার নানা কথা বললেও আদতে তারা পোশাকশ্রমিকদের মানুষ বা নাগরিক মর্যাদায় গণ্য করে না। তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে বর্তমানে পোশাকশ্রমিকদের অবস্থা বেহাল।</p> <p>প্রতিবার মজুরি বাড়ানোর বিষয়টি এলে শ্রমিকদের গ্রেপ্তার-ছাঁটাই-নির্যাতনের ঘটনা বাড়তে থাকে, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক বলে বিশিষ্টজনেরা অভিমত দেন। তাঁরা বলেন, আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানোর মতো নির্মম ঘটনা ঘটে। এবারও ঘটেছে। তাঁরা আরো বলেন, যেকোনো অপমৃত্যু বা হত্যার ঘটনায় কোনো পরিবার মামলা করতে সমর্থ্য না হলে রাষ্ট্রপক্ষ বাদী হয়ে মামলা করে। এবার মজুরি আন্দোলনে নিহত রাসেলের বাবার মামলা চালানোর সামর্থ্য না থাকায় তিনি মামলা করেননি। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ নিহত রাসেলের জন্য বাদী হয়ে মামলা না করলেও আন্দোলনকারীদের দমনে ঠিকই নানা মিথ্যা মামলার আয়োজন করেছে।</p> <p>বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন আনু মুহাম্মদ, হামিদা হোসেন, খুশী কবির, রেহনুমা আহমেদ, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, শহিদুল আলম, ফরিদা আখতার, মানস চৌধুরী, অরূপ রাহী, ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, সাদাফ নূর, শ্যামলী শীল, মাহা মির্জা, তাসলিমা আখতার প্রমুখ।</p>