<p>আগে দর্শনধারী, এরপর না হয় গুণ বিচারী। খাবারের ক্ষেত্রে এ কথা একদম ১০-এ ১০ পাওয়ার মতোই। খুব মজাদার খাবারও কখনো কখনো কেউ ছুঁয়েও দেখে না, আবার সাধারণ মানের কোনো খাবারও প্রশংসায় ভাসতে থাকে কেবল পরিবেশন সুন্দর হলেই। এর কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে, লোকে কেবল জিহ্বা দিয়েই খাবারের স্বাদ নেয় না, বরং চোখ দিয়ে দেখে ও নাকে ঘ্রাণ শুঁকেও খাবার গ্রহণ করবে নাকি প্রত্যাখ্যান করবে সে সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্যই হয়তো খাবারের পরিবেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।</p> <p><strong>ফুড প্লেটিং কী</strong><br /> ফুড প্লেটিং হলো খাবার সাজানো এবং সাজানোর প্রক্রিয়া, যা দ্বারা মূলত খাবার উপস্থাপন করাকে বোঝানো হয়। চমৎকারভাবে খাবার উপস্থাপন দ্বারা ব্যক্তির রুচি থেকে শুরু করে খাবারটি সম্পর্কেও আগ্রহ তৈরি হয়। তাই ফুড প্লেটিং ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। <br /> ফুড প্লেটিং টেকনিক মূলত কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এর মধ্যে মূল কিছু বিষয় রয়েছে। সেসব জেনে নিতে পারেন― </p> <p><strong>বাসনের আকার ও আকৃতি</strong><br /> বড় বাসন বা প্লেটে খাবার পরিবেশন করলে সৃজনশীলতার সঙ্গে কাজ করার জায়গা পাওয়া যায়। তবে এটাও ভাবতে হবে, খাবারের পাত্র ঠিক অতটাও পূর্ণ করার দরকার নেই যাতে কোনো জায়গা অবশিষ্ট না থাকে এবং খাবার উপচে পড়তে দেখায়।<br /> বিভিন্ন আকারের পাত্র বিভিন্ন খাবারের জন্য উপযুক্ত। গোলাকার প্লেট স্বাস্থ্যকর, ভারী খাবারের জন্য উপযুক্ত এবং খাবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার চিত্র প্রমাণ করে। আবার কৌণিক প্লেট খাবারকে স্মার্ট এবং আধুনিক চেহারা দেয়। আধুনিক ডেজার্ট বা সুস্বাদু খাবারের আইটেমগুলো উপস্থাপনে তাই এগুলো ব্যবহৃত হয়।</p> <p><strong>রং</strong><br /> বিভিন্ন রং মস্তিষ্কে ভিন্ন রকম বার্তা পাঠায়। মনে রাখতে হবে, খাবারের জন্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র নীল রং হলে এটি মানুষের মনস্তত্ত্বে ডায়েট এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসকে সক্রিয় করে।<br /> খাবারের জন্য ব্যবহৃত ডিনার সেট সাদা রঙের হলে তা খাবারে রঙের বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলে। আরো সমসাময়িক এবং নান্দনিকতার জন্য উত্তম কালো রঙের প্লেট, ট্রেতে পরিবেশন করা।</p> <p><strong>ক্লক ফেস</strong><br /> ফুড প্লেটিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ পরিচিত শব্দ হচ্ছে ক্লক ফেস। এটি মূলত বেশ পুরনো পদ্ধতি খাবার পরিবেশনের জন্য। বলা যায় ১৯৬০ সালে এ পদ্ধতির প্রচলন হয়। এ পদ্ধতিতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখা হয় প্লেটের নিচের অংশে। অর্থাৎ প্লেটকে একটি ঘড়ির সঙ্গে তুলনা করে দেখলে ঘড়িতে ৩ থেকে ৯-এর অংশটুকুতে থাকবে প্রোটিন জাতীয় খাবার। ৯ থেকে ১২, এ অংশটুকুতে থাকে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার। এবং বাকি অংশ অর্থাৎ ১২ থেকে ৩―এখানে থাকবে শাক ও সবজি। </p> <p><strong>রুল অব থার্ড</strong><br /> ছবি তোলার কায়দায় রুল অব থার্ডের কথা শুনেছেন অনেকেই। ছবিতে মূল সাবজেক্টকে যদি মাঝে রাখা হয়, তাহলে তার চারপাশের বিষয়বস্তু ছবির দর্শকের কাছে আকর্ষণ হারায়। রুলস অব থার্ড এ থেকে বেরিয়ে চারপাশসহ ছবিটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করে। একই নিয়ম ফুড প্লেটিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হয়। প্লেটটিকে ফ্রেম হিসেবে ভেবে প্লেটের কেন্দ্রবিন্দুকে (মেইনডিশ আইটেম) মাঝে রাখার পরিবর্তে প্লেটের বাঁ অথবা ডান দিকে রেখে পুরো খাবার সাজানো হলে তা দেখতে বা খেতে একঘেয়ে মনে হয় না।</p>