<p>বাজারে গিয়ে জিনিসপত্রের আকাশচুম্বি দাম শুনে তাজ্জব বনে যাননি এমন মানুষ নেই। ক্ষুধা মেটানো আর পুষ্টির জোগান দেওয়া- এই দুটো বিষয়কে এক সুতোয় বাঁধতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কমবেশি সবাইকে। মধ্যবিত্তের আয়ের অর্ধেকের বেশিই যেখানে চলে যায় বাড়িভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচে, সেখানে নিয়ম মেনে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া কঠিন বটে। তাই বলে না খেয়ে তো আর থাকা যায় না আবার পরিবারের সবার পুষ্টির ঘাটতি মেটানোর বিষয়টিতেও নজর দেওয়া চাই। এই দুইয়ের ভারসাম্য আনতে জেনে নিন স্বল্প বাজেটে কিভাবে পুষ্টিকর খাবারের তালিকা তৈরি করতে পারেন- </p> <p><strong>প্রথমেই পরিকল্পনা </strong><br /> নিত্যকার খাদ্যতালিকা থেকে অতিরিক্ত খরচ কমিয়ে ফেলা সম্ভব, যদি পরিকল্পনা করা যায় আগে থেকেই। এক সপ্তাহে কী কী খাবেন, কোন বেলা কেমন খাবার রাখা যায় এসব পরিকল্পনা করে ফেলুন। পরিবারের সবার সঙ্গে বসে এ পরিকল্পনা করুন। এতে সবাই অবগত থাকবে পরবর্তী এক সপ্তাহ খাবার তালিকায় কী কী থাকতে পারে। পরিকল্পনা করার আরো কয়েকটি সুবিধাজনক দিক হচ্ছে- এতে খাবার নষ্ট বা অপচয় হবে না। আবার যেহেতু সবাই অবগত কী কী খাবার রয়েছে তালিকায়, তাই অযাচিত কেনাকাটা বা ক্ষুধা লাগলেই যখন-তখন অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকা যায়। </p> <p><strong>একসঙ্গে বেশি কেনা তবে…</strong><br /> যদি পুরো সপ্তাহে পরিবারের জন্য ডিম প্রয়োজন হয় এক ডজন তাহলে তা একসঙ্গে কেনাই ভালো। প্রতিদিন একটা কিংবা দুইটা করে কেনা হলে খরচ বেড়ে যাবে, যেখানে একসঙ্গে এক ডজন কিনলে কিছুটা সাশ্রয় করা সম্ভব। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, সাশ্রয় করতে গিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যেন না কেনা হয়। আবার সহজপাচ্য জিনিস বেশি করে কিনে রাখলে নষ্ট হওয়ার ভয়ও থাকে। তাই খরচ কমাতে কিছুটা বুঝে-শুনেই পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। </p> <p><strong>মৌসুমি ফল ও সবজি কিনুন</strong><br /> বাজার খরচ কমাতে মৌসুমি ফল ও সবজি কেনার চেষ্টা করুন। মৌসুমে ভালো ফলন যেসব সবজীর চেষ্টা করুন সেসব সবজি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে। যেমন বলা যায়- শীতে দেশি সবুজ শাকসবজির ফলন ভালো, এ সময় বিদেশি সবজি না কিনে দেশি সবজিতেই খাদ্যতালিকা পূর্ণ করুন। কোনো সবজি বা ফলের দাম বেশি হলে সেটা কেনা থেকে বিরত থাকুন। পরিবর্তে সে ফল বা সবজির পরিপূরক কিছু বের করুন।</p> <p><strong>বাইরেও ঘরের খাবার</strong><br /> খাবারের খরচ কমাতে এবং খাদ্যতালিকায় পুষ্টি নিশ্চিত করতে ঘরের বাইরে বেশি সময়ের জন্য কোথাও গেলে হালকা খাবার তৈরি করে সঙ্গে নিয়ে নিন। এতে বাইরে থেকে কিনে খাবার খেতে হবে না আবার অস্বাস্থ্যকর কিছুও খেতে হবে না। সন্তানকে স্কুলে নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকেই খাবার তৈরি করে দিন। অফিসের লাঞ্চ বক্সও ঠিক একইভাবে প্রস্তুত করুন। এতে খরচের লাগামও ধরা যাবে আবার পুষ্টির বিষয়টিও নিশ্চিত করা যাবে। </p> <p><strong>সমাধান দেবে কিচেন গার্ডেন</strong><br /> সহজেই চাষ করা যায় এমন কিছু শাকসবজি চাইলে বাড়ির ছাদে, বারান্দায় চাষ করতে পারেন। এতে তাজা শাকসকবজি যেমন খেতে পারবেন, তেমনি খরচও বাঁচবে। বাজার থেকে ধনিয়াপাতা, পুঁইশাক, পালংশাক কিংবা লালশাক কিনে এর গোড়া ফেলে না দিয়ে অল্প মাটিতে পুঁতে দিন। নিয়মমতো পানি দিন, দেখবেন সপ্তাহ পেরোতেই গাছগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এভাবে কিছু শাকসবজি চাইলেই ছোট টবে চাষ করতে পারেন। ঘরের শাকসবজিই তখন পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে প্রস্তুত হয়ে উঠবে। </p> <p><em>সূত্র : বিবিসি গুড ফুড অবলম্বনে</em><br />  </p>