<p>বর্তমানে ডেঙ্গু ও সাধারণ ভাইরাস জ্বরের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ দুটি স্বাস্থ্য সমস্যার পার্থক্য জেনে নেওয়া জরুরি।</p> <p><strong>মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ভাইরাল সংক্রমণ</strong></p> <p>সাধারণ ভাইরাস জ্বর, মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ভাইরাল সংক্রমণের কারণেই জ্বর হতে পারে। জ্বর এক ব্যক্তি থেকে অন্যের কাছে যেতে পারে।</p> <p><strong>লক্ষণ</strong></p> <p>* সংক্রমিত ব্যক্তির জ্বর</p> <p>* নাক দিয়ে পানি পড়া</p> <p>* হাঁচি-কাশি</p> <p>* কাশি (সাধারণত শুষ্ক)</p> <p>* মাথা ব্যথা</p> <p>* পেশি এবং জয়েন্টে ব্যথা</p> <p>* গুরুতর অস্বস্তি (অস্বস্তিবোধ)</p> <p>* গলা ব্যথা হতে পারে।</p> <p>ফ্লু সংক্রমণের ২-৪ দিন পর উপসর্গ দেখা দেয়। ভাইরাল জ্বর ৩-৫ দিন স্থায়ী হতে পারে এবং এরপর সাধারণত কোনো জটিলতা থাকে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফ্লু এমনিতেই প্রশমিত হয়ে যায়।</p> <p><strong>ডেঙ্গু</strong></p> <p>ডেঙ্গু এডিস ইজিপ্টি মশার কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। ডেঙ্গু ২-৭ দিন স্থায়ী হতে পারে এবং জ্বর ভালো হওয়ার ২-৩ দিন ঝুঁকিপূর্ণ সময়। ডেঙ্গু চলে যাওয়ার পরই সাধারণত সতর্কতা লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে।</p> <p><strong>লক্ষণ</strong></p> <p>ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে অন্য কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ ছাড়া শুধু জ্বর হয়, ডেঙ্গু সাধারণত সংক্রমিত মশা কামড়ানোর ৪-১০ দিন পরে শুরু হয়। ডেঙ্গুতে খুব উচ্চমাত্রার জ্বর হয় অর্থাৎ ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট। পর্যায়ক্রমে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়—</p> <p>* মাথা ব্যথা।</p> <p>* পেশি, হাড় বা গিড়ায় ব্যথা।</p> <p>* বমি বমি ভাব ও বমি।</p> <p>* চোখের পেছনে ব্যথা।</p> <p>* ফুসকুড়ি।</p> <p>সম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু হয়েছে বলে সন্দেহ হলে এবং কোনো সতর্কতা লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সতর্কতা লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—</p> <p>* প্রচণ্ড পেট ব্যথা</p> <p>* ক্রমাগত বমি হওয়া</p> <p>* মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত</p> <p>* বমি, মল বা প্রস্রাবে রক্ত</p> <p>* ত্বকের নিচে রক্তপাত</p> <p>* ভারি ও দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস</p> <p>* ক্লান্তি ও অস্থিরতা।</p> <p><strong>জটিলতা</strong></p> <p>* অতীতে ডেঙ্গু হয়ে থাকলে অর্থাৎ দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ডেঙ্গুর সংক্রমণ মারাত্মক মৃত্যুর ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং জটিলতা দেখা দেয়।</p> <p>* মারাত্মক ডেঙ্গুতে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত এবং অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।</p> <p>* রক্তচাপ বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যেতে পারে,</p> <p>* ডেঙ্গুতে রক্তের প্লেটিলেটের মাত্রা মারাত্মকভাবে কমে যায় এবং রোগীকে ৭-১০ দিনের জন্য সঠিক খাবারের মাধ্যমে প্লেটিলেটের মাত্রা বজায় রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে প্লেটিলেট ট্রান্সফিউশন দিতে হতে পারে।</p> <p>ডেঙ্গু ও ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের পার্থক্যটা সহজে বোঝার উপায় হলো প্রথম তিন দিনে এনএসওয়ান, ভাইরাল অ্যান্টিজেন ডিটেকশন করা। তিন দিন পার হয়ে গেলে ডেঙ্গু আইজিজি ও ডেঙ্গু আইজিএম টেস্ট করতে হবে।</p> <p><strong>পরামর্শ দিয়েছেন</strong><br /> ডা. মো. সাইদুল হক<br /> সহকারী অধ্যাপক<br /> বারডেম বিইউএইচএস ইউনিভার্সিটি, ঢাকা</p>