<p>আজ শুক্রবার পবিত্র রমজান মাসের শুরু। এরই মধ্যে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে। যদিও রমজান উপলক্ষে চার দিন আগে রাজধানীতে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। সে হিসাবে প্রতি কেজি দেশি গরুর মাংসের সর্বোচ্চ দাম ৪৫০ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু এ দামে কোথাও মাংস বিক্রি হচ্ছে না। বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবারও প্রতি কেজি মাংসের দাম ছিল কমপক্ষে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য দিনের চেয়ে খাসির মাংস ও মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে।</p> <p>গত সোমবার মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় রাজধানীর বাজারে বিক্রীত মাংসের দর নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ বছরের কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত দামের হিসাবে গত রোজা থেকে প্রতি কেজি গরুর মাংস ২৫ টাকা কমে ভোক্তাদের পাওয়ার কথা। কারণ গত বছর প্রতি কেজি গরুর মাংসের দর ৪৭৫ টাকা ঠিক করেছিল সিটি করপোরেশন। এ ছাড়া এ বছর ভারতীয় গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪২০ টাকা, মহিষের মাংস ৪২০ টাকা, খাসির মাংস ৭২০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগলের মাংস ৬০০ টাকা দরে বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।</p> <p>তবে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত এসব দর মানছে না কেউই। এই দাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বাজারগুলো ছাড়াও সুপারশপগুলোর জন্য প্রযোজ্য হওয়ার কথা থাকলেও কোথাও এই দামে মাংস নেই। উল্টো আগের থেকে বেড়েছে দাম।</p> <p>রামপুরা বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকা, খিলগাঁও বাজারে ৫২০ টাকা, আগোরায় ৪৭৫ টাকা আর হাড়ছাড়া ৭৪০ টাকা। বনশ্রী মেরাদিয়া কাঁচাবাজারের হাটে গিয়ে কথা হয় কবির মাংস বিতানের স্বত্বাধিকারী কবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা শুধু গরুর মাংস বিক্রি করি। রমজান উপলক্ষে দাম বাড়ানো হয়নি। সব সময়ই প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছি।’</p> <p>সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ৪৫০ টাকা কেন রাখা হচ্ছে না জানতে চাইলে এই বিক্রেতা কিছুটা খেপে গিয়ে বলেন, ‘যারা দাম নির্ধারণ করছে তারা কিছু না বুঝেই এটি করছে। কোনোভাবেই ৫০০ টাকার কম মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে না।’</p> <p>একই চিত্র পাওয়া যায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে। দেখা যায়, ৪২০ টাকা দামে ভারতীয় গরুর মাংস নেই কোথাও। সব মাংসই দেশি গরুর বলে দাবি করছে বিক্রেতারা। সেটিও বিক্রি করছে ৫০০ টাকা করে। এ ছাড়া খাসির মাংস ৭২০ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। আর ছাগলের মাংস ৬২০-৬৫০ টাকায়।</p> <p>ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) এলাকার কয়েকজন মাংস বিক্রেতা গতকাল জানায়, শুধু দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেই দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। উত্তরে দাম নির্ধারণ করা হয়নি। ব্যবসায়ীদের দাবি প্রথম রমজান থেকে নতুন দাম কার্যকর হওয়ার কথা। যা থাকবে ২৬ রমজান পর্যন্ত। তবে কতটুকু তা মানবে এমন সদুত্তর মেলেনি। একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা যে পরিমাণ দাম বাড়িয়েছে তা কোনোভাবেই কমাবে না। বরং কোনো কোনো বিক্রেতা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা তাঁদের অভিযান পরিচালনা করতে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে বলে হুমকিও দিচ্ছে।</p> <p>বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামে প্রথম রমজান থেকে মাংস বিক্রি করব। এ ক্ষেত্রে আমাদের সমিতির অন্তর্ভুক্ত সদস্যরা তা মেনে চলবে বলে আশা করছি।’ এদিকে গত কয়েক দিনের তুলনায় বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লারের থেকেও বেশি বেড়েছে দেশি ও পাকিস্তানি কক জাতের মুরগির দাম। </p>