<p>কুমিল্লার দেবীদ্বারে যৌথ ব্যবসায় অংশীদারের সঙ্গে লেনদেন নিয়ে বিরোধের জের ধরে সরকার মোহাম্মদ সায়েম (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁর পুত্রসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।</p> <p>আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার নিউ মার্কেটের সামনে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে নিহতের স্বজনরা। তারা অভিযুক্ত খোরশেদ চেয়ারম্যান ও তাঁর ছেলের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানায়।</p> <p>এর আগে গতকাল সোমবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টায় দেবীদ্বার উপজেলার বাঙ্গুরী গ্রামের বাজারসংলগ্ন একটি নির্জন সড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এরপর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার ৯ নম্বর গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। </p> <p>নিহত সরকার মোহাম্মদ সায়েম (৩৮) উপজেলার ৯ নম্বর গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের চাষাঢ়া গ্রামের আব্দুর রহিম সরকারের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়ার বড় মেয়ে নাজমুন্নাহার ইভার স্বামী। তাঁদের আরবি নামে দুই বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে। হত্যা মামলার আসামি সাবেক চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম নিহত সায়েমের উকিল শ্বশুর। </p> <p>নিহত আবু সায়েমের শ্বশুর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আমার মেয়ের জামাই সায়েমকে অপহরণ করা হয়। চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে সাত-আটজন সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’</p> <p>আটক খোরশেদ আলম বলেন, ‘দেবীদ্বার বাঙ্গুরী বাজার এলাকায় সায়েম চা খাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। পরে রাত সোয়া ১টায় তাকে খুবই অসুস্থ অবস্থায় বাঙ্গুরী এলাকায় সড়কে পড়ে থাকতে দেখে আমি ও আমার স্ত্রী উদ্ধার করে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ </p> <p>সায়েমের ছোট ভাই আবু কাউছার সরকার বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার বড় ভাই ব্যবসায়ী কাজে টাকার প্রয়োজন হলে সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে মামুনের নিকট থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে যৌথ ব্যবসায় অংশীদার করে। বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা কিছুটা অবনতি হলে ওই টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে আমার ভাই তাকে সাত লাখ টাকা পরিশোধ করে। আর বাকি টাকার জন্য একটি খালি চেক দেয়। পরে মামুন ওই চেক দিয়ে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করে। ওই মামলা চলমান থাকা অবস্থায় মামুন ও তার বাবা আমার ভাইকে সন্ত্রাসী নিয়ে অপহরণ করে। রাতে সায়েম ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলে, আমার পিকাপভ্যানটি (যার নম্বর ১২-০৯৯৭) মামুনকে দিয়ে দিলে তাকে ছেড়ে দেবে। এ কথা শুনে আমি পিকআপ ভ্যানটি মামুনকে দিয়ে দিই। এর পরও আমার ভাইকে চেয়ারম্যান ও তার ছেলে সন্ত্রাসী দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।’</p> <p>এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নয়ন মিয়া বলেন, নিহত সায়েমের ভাই আবু কাউছার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্টে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। নির্যাতনে নাকি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে। মরদেহ কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম আটক হয়ে পুলিশের হেফাজতে আছেন।</p>