<p>বাণিজ্য সম্ভাবনা ও পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়াতে সীমান্তবর্তী কুড়িগ্রামে হতে যাচ্ছে ভুটানের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল। প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের অবকাঠামো ও দুই দেশের আন্ত যোগাযোগব্যবস্থা দেখার জন্য ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক কুড়িগ্রাম সফর করেছেন। </p> <p>বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের ধরলা নদীর পূর্ব পারে মাধবরামে এ অঞ্চল পরিদর্শন করেন তিনি। জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ এখানে বিনিয়োগের বিভিন্ন সুবিধা সম্পর্কে রাজাকে অবহিত করেন। জবাবে রাজা দ্রুত সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে এই এলাকায় শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। </p> <p>২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামে এক জনসভায় পিছিয়ে পড়া কুড়িগ্রামে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। গত বছর ১৩৩ একর খাসজমি বেজার কাছে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসন। আরো ৮৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। ভুটান এই অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখায়। </p> <p>ভুটানের রাজা ঢাকা থেকে বিমানে করে সৈয়দপুর, এরপর সড়কপথে কুড়িগ্রামে আসেন। পরিদর্শন শেষে সোনাহাট স্থলবন্দরে বিজিবির পক্ষ থেকে রাজাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে তিনি ভারতের আসাম রাজ্যের গোলকগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভুটানে চলে যান। তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, নৌপরিবহনমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।</p> <p>বাংলাদেশ অথনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন সাংবাদিকদের জানান, ভুটানের রাজা দুই দেশের যৌথ সমীক্ষা শেষে দ্রুত এই কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন। তিনি শিগগিরই একটি টেকনিক্যাল টিম পাঠাবেন। কাজ শুরু হলে তিনি আবার কুড়িগ্রামে আসবেন বলে জানিয়েছেন। </p> <p>ইউসুফ হারুন আরো জানান, রাজা বলেছেন, এই এলাকার মানুষের জন্য কী ধরনের চাহিদা, কী ধরনের শিল্প স্থাপন করলে ভালো হবে, তা খতিয়ে দেখতে হবে।</p> <p>এদিকে রাজার আগমন ও অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের খবরে উচ্ছ্বসিত ধরলাপারের মানুষ। তারা মনে করে শিল্প-কারখানাবিহীন অনগ্রসর কুড়িগ্রামকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজার বিশেষ আগ্রহে এখানে দ্রুতই শিল্প-কারখানা স্থাপন হবে। কর্মসংস্থান হবে অনেক বেকারের।</p> <p>১০ কিলোমিটার দূর থেকে রাজাকে দেখতে এসেছেন নুর ইসলাম নামের এক কৃষক। তিনি বলেন, ‘হামরা রাজাক দেইখপ্যার আচ্চি। তায় বোলে কী কারখানা করবে। করলে তো গরিব মানষের অনেক উপকার হইবে।’ </p> <p>কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র কাজিউল ইসলাম বলেন, ‘এখানে ভুটানের অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার হবে।’</p>