<p>কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের বাঁশগাড়ি ও পাড়াতলীর মধ্যনগর চরে বাঙ্গি চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে বেশি আবদ হয়েছে বাঙ্গি।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাঁশগাড়ির চান্দেরকান্দি চরের বিস্তীর্ণ জমি জুড়ে সবুজ পাতার আড়ালে উঁকি দিচ্ছে কাঁচা ও পাকা বাঙ্গি। কৃষকরা জমি পরিচার্যায় ও বাড়ির নারী সদস্যরা ক্ষেত থেকে বাঙ্গি তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।</p> <p>উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলায় ২৮ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়েছিল। চলতি বছরে ৩৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বাঙ্গি। এর মধ্যে বাঁশগাড়িতে ২০ হেক্টর ও বাকি ১৫ হেক্টর পাড়াতলীর মধ্যনগর, চাঁনপুর ও মির্জাচরে আবাদ হয়েছে।</p> <p>কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, আড়াই বিঘা জমিতে বাঙ্গি আবাদে তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় উৎপাদিত বাঙ্গি তিন লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন। এতে তার এক লাখ ৮০ টাকা আয় হবে বলে জানান তিনি।</p> <p>বাজারে বাঙ্গির চাহিদা বেশি থাকায় দাম নিয়ে সন্তুষ্ট বলে জানান কৃষক আবুল খায়েস। তিনি বলেন, দুই বিঘার জমিতে বেলে জাতের বাঙ্গি চাষ করেছেন। খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৭০ টাকা আয় হবে। পাইকারি এক শ বাঙ্গি সাত হাজার টাকায় বিক্রি করার কথা জানান তিনি।</p> <p>জানা গেছে, চরের দোঁআশ মাটিতে দুই জাতের বাঙ্গি চাষ হয়। বেলে ও এঁটেল। তবে বেশি আবাদ হয়েছে বেলে বাঙ্গি। এ জাতের বাঙ্গির খোসা পাতলা, শাঁস নরম ও মিষ্টি কিছুটা কম। অপর দিকে এঁটেল বাঙ্গি শাঁস শক্ত তবে বেশ মিষ্টি। বাঙ্গির পাশাপাশি বাঁশগাড়ি ও মধ্যনগর চরে মরিচ ও মিষ্টি কুমড়া প্রচুর চাষ হয়।</p> <p>জমি থেকে প্রতিপিচ বাঙ্গি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। স্থানীয় ও নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়ির নবীনগর ও কিশোরগঞ্জের পাইকারদের মাধ্যমে সুস্বাসু এ ফলটি পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশে।</p> <p>নবীনগরের পাইকার মাসুম জানান, বাঁশগাড়ির বেলে জাতের বাঙ্গির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এখান থেকে বাঙ্গি কিনে নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। গত বছরের তুলনায় প্রতিপিচ ১০ থেকে ১৫ বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে জানান তিনি।</p> <p>জমি থেকে প্রতিপিচ বাঙ্গি পাইকারদের গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে শ্রমিকরা পান ৭ টাকা। দিনে একজন শ্রমিক এ কাজ করে মজুরি পান ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। শ্রমিকদের সরদার আক্কাস জানান, এ বছর বাঙ্গির ফলন ভালো হয়েছে। ৩০ হাজার পিচ বাঙ্গি ইতিমধ্যে জমি থেকে তোলা হয়েছে। এ কাজে ২২ জন শ্রমিক কাজ করছেন। বছরের দেড় মাস এ কাজ করে থাকেন বলে জানান তিনি।</p> <p>রায়পুরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাঙ্গির বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান মাস চলমান থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকরা। এ বছর উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ২৮ হেক্টর।</p>