<p>সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নে প্রাচীন বিলুপ্তপ্রায় এক নগরে আবারো প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে নেমেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রত্নতাত্ত্বিক মো. রিফাত- উর-রহমানের তত্ত্বাবধানে বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সাল থেকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান শুরু করেন। করোনার জন্য সাময়িক অনুসন্ধানে বিঘ্ন ঘটলেও শনিবার পুনরায় তা শুরু হয়েছে।</p> <p><img alt="" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/2023/February/04-02-2023/kalerkantho.jpg (2).png" /></p> <p>এ অনুসন্ধানে প্রত্নতাত্ত্বিক মো. রিফাত-উর-রহমানের নেতৃত্বে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় ও চতুর্থ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পর্যায়ক্রমে প্রত্নতাত্ত্বিক এ অনসন্ধান চলমান থাকবে।</p> <p>রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত মোট ১৪টি ঢিবিতে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। ঢিবিগুলো হচ্ছে বিরাট রাজার ঢিপি, আমির আলী ঢিবি, গুচ্ছগ্রাম ঢিবি-১, গুচ্ছগ্রাম ঢিবি-২, মায়া পুকুর, শ্যামল পুকুর, কমল খাঁ দিঘি, পাহাড় প্রতাপ, প্রতাপদিঘি,অর্জনগড়, হাভাইত্তা পুকুর, যোগী পুকুর,কাতলা পুকুর ও জয়সাগর অন্যতম। এসব ঢিবিতে অনুসন্ধানের এ যাবত প্রাপ্ত প্রত্ননিদর্শনের মধ্য রয়েছে, পোড়ামাটির ফলক, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ, ধ্যানী বুদ্ধের মূর্তি, বানর ও ফনাতোলা নাগের পোড়ামাটির টেরাকোটা অন্যতম।</p> <p>অনুসন্ধানে আসা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আলামিন, সানজিদা আক্তার মুন্নি ও চতুর্থ বর্ষের পুষ্পিতা জানান, ক্লামরুমে বসে শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞান অর্জন সম্ভব, বাস্তবজ্ঞানের জন্য মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য। এ কারণে অনুসন্ধানের এ অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগবে।</p> <p>গত প্রায় পাঁচ বছরের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. রিফাত-উর-রহমান বলেন, ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় জার্নালে তার গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশ করেছেন।</p> <p>তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত ১৪টি প্রত্নস্থল সনাক্ত করা হয়েছে এবং একইসাথে সেসব প্রত্নস্থলের তথ্য, উপাত্তগুলো নিয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শাহ্ আজম প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের বিষয়ে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন।</p> <p>মো. রিফাত-উর-রহমান বলেন, যেহেতু এখনও বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে উৎখনন করা হয়নি, তাই প্রত্নস্থলগুলোর সময়কাল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া কঠিন। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে তার নেতৃত্বে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত পোড়ামাটির ফলক, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ এবং ইটের গঠনশৈলী থেকে তিনি বলেন, এগুলোর সাথে পাহাড়পুরের পোড়ামাটির ফলক এবং ইটের সাদৃশ্যতা রয়েছে। তাই অন্তত তুলনামূলক বিশ্লেষণে আপাতত অনুমান করা যায় যে এ এলাকার প্রত্নস্থলগুলো হয়তো পাল যুগের সময়ে (আনুমানিক অস্টম খ্রি:) নির্মিত হয়েছিল।</p>