<p>ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় মামলা চালিয়ে নেওয়ার অনুমতিকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের একটি আদালত মামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছেন। আদালতের ওই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে পর্যালোচনা করছে বলে জানানো হয়েছে। </p> <p>সোমবার (৪ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব জানিয়েছে। </p> <p>কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে চুরির ঘটনায় আরসিবিসি যে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত ছিল, তা প্রমাণের সুযোগকে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাগত জানায়। ফার্স্ট কোর্টের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে বিবাদীদের বিরুদ্ধে জালিয়াতিসহ অন্যান্য অভিযোগে নিউ ইয়র্কে অর্থাৎ যেখান থেকে অর্থ চুরি হয়েছিল, সেখানে মামলা পরিচালনার সুযোগ করে দিয়েছে। রায়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কারণ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া আরো একধাপ এগিয়ে গেল।</p> <p>কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এসব পদক্ষেপ শুধু আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল বা আরসিবিসি এবং কিম অং-এর আপিলের (যদি করে) জবাব দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং বিচারিক আদালতে চলমান অর্থ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।</p> <p>রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৭ মে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ রূপান্তর, চুরি, আত্মসাতের মতো কর্মকাণ্ডে সহায়তা-প্ররোচনা, জালিয়াতি (আরসিবিসির বিরুদ্ধে), জালিয়াতিতে সহায়তা বা প্ররোচনাসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়।</p> <p>কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ফার্স্ট ডিপার্টমেন্টের রায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জয় হয়েছে। আদালত নিশ্চিত করেছেন যে আরসিবিসির কর্মকর্তা ও কিম অং কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সংঘটিত অপরাধের জন্য আলোচ্য বিবাদীদের দায়ী করা যায়। আদালতের এই সিদ্ধান্ত প্রকারান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংঘটিত চুরির সহযোগীদের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কে ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।</p> <p>প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভুয়া বার্তার মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভের নিউ ইয়র্ক শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০০ কোটি ডলার চুরির চেষ্টা চালানো হয়। তবে এর মধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করতে সক্ষম হয় অপরাধীরা। এই অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যায় দুই কোটি ডলার, যা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে বাকি আট কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে ফিলিপাইনের বিভিন্ন ক্যাসিনোয় চলে যায়। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে তিন কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ছয় কোটি ৬৪ লাখ ডলার এখনো পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।</p>