<p>তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ। এর মধ্যেও থেমে নেই শুটিং। সামনে কোরবানির ঈদ। আর তাই চলছে নাটক, চলচ্চিত্রের শুটিং। নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীরা এই দাবদাহে কিভাবে শুটিং করছেন? জানিয়েছেন তাঁরা....</p> <p><strong>একেকজন রোদে পুড়ে কালো হয়ে গেছেন</strong> (রায়হান রাফী নির্মাতা / নির্মাতা)</p> <p>ভারতে ‘তুফান’ ছবির শুটিং করছেন এই নির্মাতা। ইউনিটে আছেন শাকিব খানও। বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের তাপমাত্রা বেশি। ফলে শুটিংয়ে বেশ ঝামেলা হচ্ছে ইউনিটের। প্রায় ৩০০ জনের ইউনিট নিয়ে কাজ করছেন রাফী। বলেন, ‘এখানকার ইউনিটের মানুষ দারুণ পেশাদার। তাঁরা সব দিকেই খেয়াল রাখেন। গরমের মধ্যে শুটিং করলেও দুটি শুটিং বাস থাকে সব সময়। যে শিল্পীর শুটি থাকছে না সঙ্গে সঙ্গে বাসে বিশ্রাম নিতে পারছেন। তা ছাড়া প্রত্যেকের জন্য ছাতার ব্যবস্থাও আছে।’ শুটিং কলকাতায় না হায়দরাবাদে হচ্ছে—সেটা প্রকাশ করতে চাননি রাফী। বলেন, ‘শুটিং ভারতের কোথায় হচ্ছে সেটা বলব না। তবে গরম বাংলাদেশের চেয়ে বেশি, এটা বিশ্বাস করুন। একেকজন রোদে পুড়ে কালো হয়ে গেছেন। তবে কেউ কোনো অভিযোগ করছেন না।’</p> <p><strong>শুটিং ইউনিটে ভারী খাবার রাখছি না আমরা </strong>(সিয়াম আহমেদ / অভিনেতা)</p> <p>তীব্র গরমে আউটডোরে টানা শুটিং করছেন সিয়াম আহমেদ। মানিকগঞ্জের বিভিন্ন লোকেশনে ঈদের ছবি এম রাহিমের ‘জংলি’র শুটিং করছেন তিনি। মারপিট দৃশ্যের পাশাপাশি ড্রামা দৃশের শুটিংও করছেন। চাইলেও বিরতি নেওয়ার উপায় নেই। কারণ কোরবানির ঈদে মুক্তি পাবে ছবিটি। সিয়াম বলেন, ‘মানিকগঞ্জে অনেক তাপ। আমরা কখনো নদীর পারে, আবার কখনো লোকালয়ে শুটিং করছি। শুটিং ইউনিটে ভারী খাবার রাখছি না আমরা, সব সময় তরল জাতীয় খাবার খাচ্ছি। স্যালাইন, ডাবের পানি তো থাকছেই।’</p> <p><strong>দ্রুত বৃষ্টি নামলেই ভালো </strong>(তানিয়া বৃষ্টি / অভিনেত্রী)</p> <p>টানা শুটিংয়ে ব্যস্ত তানিয়া। আজও শুটিং আছে তাঁর। গরমে হাঁসফাঁস লাগলেও কিছু করার নেই। আগেই শিডিউল দেওয়া ছিল। তানিয়া বলেন, ‘গরমের জন্য যদি শুটিং বাতিল করি তাহলে শিডিউলে জট লেগে যাবে। সামনে কোরবানির ঈদ। বছরে তো দুই ঈদকে সামনে রেখেই বেশির ভাগ নাটক নির্মিত হয়। তাই কোনো নির্মাতাকে না বলতে পারছি না। গরমে নিজের পাশাপাশি ইউনিটের সবাইকে সাবধান করি সব সময়। শুটিং না থাকলে স্পটে ছায়ায় থাকি। একটু পর পর পানি পান করি। হঠাৎ তাপমাত্রা এতটা বেড়ে যাবে, কে ধারণা করেছিল! এখন দ্রুত বৃষ্টি নামলেই ভালো।’</p> <p><strong>ভেজা টাওয়াল সঙ্গে রাখি</strong> (সামিরা খান / মাহি অভিনেত্রী)</p> <p>কিশোরগঞ্জের নিকলি হাওরে শুটিং করে সবে ঢাকায় ফিরেছেন সামিরা খান মাহি। রুবেল আনুষের নাম ঠিক না হওয়া একটি নাটকে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন সোহেল মণ্ডল। হাওরে গাছপালা খুবই কম। তার ওপর তপ্ত দুপুরেও হয়েছে শুটিং। রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে একের পর এক শট দিয়েছেন। মাহি বলেন, ‘একে তো গরম, তার ওপর আবার লাইট থাকে। মনে হয় শরীর পুড়ে যাবে। আউটডোর শুটিংয়ে আরেকটি সমস্যা হলো সাধারণ মানুষ। চারপাশে এমন ভিড় করে থাকে যে সামান্য বাতাসটাও আসতে পারে না। গরমের দিনে আমি শুটিংয়ে সব সময় ভেজা টাওয়াল সঙ্গে রাখি। এ ছাড়া ডাবের পানি ও স্যালাইন রাখি। তবে ঠাণ্ডা পানিটা একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। আপাতত এক সপ্তাহ শুটিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একে তো গরম তার ওপর আবার আমার বোনটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই গরমে যাঁরা শুটিং করছেন, সবাইকে সাবধান থাকার কথা বলব। পর্যাপ্ত পানি খাবেন, অস্বস্তি লাগলে অবশ্যই বিশ্রাম নেবেন।’</p> <figure class="image"><img alt="1" height="240" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/05.May/01-05-2024/2_kaler-kantho--1-5-2024.jpg" width="400" /> <figcaption><sup><em><strong>শুটিংয়ে ফ্যান হাতে নাজনীন নাহার নিহা</strong></em></sup></figcaption> </figure> <p><strong>স্যালাইন ও ঠাণ্ডা পানি রাখছি পর্যাপ্ত</strong> (ইমরাউল রাফাত / নির্মাতা)</p> <p>উত্তরার দিয়াবাড়ীতে আজ থেকে একক নাটক ‘বিএমডাব্লিউ’-এর শুটিং করবেন ইমরাউল রাফাত। অভিনয় করবেন নিলয় আলমগীর, তানিয়া বৃষ্টিসহ অনেকে। চিত্রনাট্যে মাত্র তিনটা দৃশ্য ঘরের ভেতর, বাকি দৃশ্যগুলো ঘরের বাইরের। রোদে পুড়ে শুটিং করা ছাড়া উপায় নেই। কী উপায় ভেবে রেখেছেন রাফাত? ‘প্রথমত আমি দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত শুটিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্পটে একটা বাড়তি মাইক্রোবাস রেখেছি, যেটাতে কুলিং ব্যবস্থা চালু থাকবে। সেই সঙ্গে স্যালাইন ও ঠাণ্ডা পানি রাখছি পর্যাপ্ত। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকবে। শুটিং না করেও আসলে উপায় নেই। ঈদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট করছি। গরম সহ্য করেই কাজ করতে হচ্ছে।’</p> <p><strong>অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছি</strong> (সালহা খানম / নাদিয়া অভিনেত্রী)</p> <p>গরমের কারণে আউটডোর শুটিং বন্ধ রেখেছেন নাদিয়া। এখন যে নাটকগুলোর শুটিং করছেন বেশির ভাগই ইনডোরে শুটিং। দু-একটা দৃশ্য আউটডোরে হলেও সেটা বিকেলে করছেন। নাদিয়া বলেন, “এই সময়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। দাবদাহের কারণে অনেক নাটকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি। আজ [গতকাল] আরটিভির ধারাবাহিক নাটক ‘চিটার অ্যান্ড জেন্টেলম্যান’-এর শুটিং করছি। আমার দৃশ্যগুলো ইনডোরেই হচ্ছে। যতই ইনডোর হোক লাইটের একটা তাপ তো আছেই। একটু পর পর ভেজা কাপড়ের পাফ নিচ্ছি। লেবুর শরবত খাচ্ছি বেশি করে।”</p> <p><strong>তাঁরা আছেন শীতের দেশে</strong></p> <p>রোজার ঈদের পর শোবিজের অনেকেই অবকাশযাপনে চলে গেছেন। বামের ছবিতে খায়রুল বাসার ও সাইয়ারা তানজিম তটিনী। অস্ট্রেলিয়ার ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পাঁচটি নাটকের শুটিং করে সামনের সপ্তাহে ফিরবেন। বামে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি, বেড়াতে গিয়েছিলেন কানাডায়। দেশে দাবদাহের খবর শুনে ভাবলেন, আরো কিছুদিন থেকে আসবেন। তাসনিয়া ফারিণ ঘুরে এলেন ইস্তাম্বুল। ইয়াশ রোহানও আছেন দেশের বাইরে।</p>