<p><span style="color:#c0392b;"><em>সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থান ও সক্ষমতা ব্যবহার করা হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রেও। হামাস ও ইসরায়েলের একপেশে যুদ্ধও এর বাইরে নয়। জানাচ্ছেন <strong>আল সানি</strong></em></span></p> <p>গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বিশ্বের সেরা কিছু প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে। ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন চেকপয়েন্টে মোতায়েন করেছে ফেসিয়াল-রিকগনিশন সিস্টেম। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বের হওয়া ফিলিস্তিনিদের ক্রমাগত পাড়ি দিতে হয় এই সিস্টেমের মধ্য দিয়ে। পদ্ধতিটি এতটাই নিখুঁত যে হামাসের সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রতিটি ব্যক্তি এই প্রযুক্তিতে আটকা পড়ে যায়। গত বছর ইসরায়েলের ফেস রিকগনিশন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাদের একটি প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের অনুমতি ছাড়াই বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করেছে এবং সেই ডাটা ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনভাবে চলাচলে সীমিত করে দিয়েছে। তবে তাতে খুব একটা কর্ণপাত করেনি ইসরায়েলি প্রশাসন।</p> <p><strong>ফিলিস্তিনিদের বায়োমেট্রিক ডাটাবেইস </strong></p> <p>ফেসিয়াল-রিকগনিশন টুল এক দশক ধরে অধিকৃত ফিলিস্তিন অংশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে ইসরায়েল। তিনটি ভিন্ন মডেলের টুলের দেখা মিলে তাদের কাছে—‘রেড উলফ’, ‘ব্লু উলফ’ এবং ‘উলফ প্যাক’। পশ্চিম তীরে বিশেষ করে হেবরনে এই প্রযুক্তিগুলো পরীক্ষা করা হয়। ‘উলফ প্যাক’ ফিলিস্তিনি নাগরিক বায়োমেট্রিক তথ্যের একটি ডাটাবেইস। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট পাড়ি দিতে চাওয়া ব্যক্তিকে প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হয়, তাঁর চেহারা, উচ্চতা, শারীরিক গঠনের ওপর ভিত্তি করে উলফ প্যাক সিদ্ধান্ত দিতে পারে। বর্তমানে প্রযুক্তিটি আপগ্রেড করা হয়েছে, সিসিটিভির বদলে নির্ধারিত মোবাইলের অ্যাপের সামনে যে কেউ দাঁড়ালেই চলে।</p> <p><strong>আছে স্বয়ংক্রিয় পরামর্শক</strong></p> <p>রেড উলফ ও ব্লু উলফের কাজও প্রায় এক, তবে ব্লু উলফ অ্যাপে একটি লিডার বোর্ড রয়েছে, যেখানে এক সপ্তাহে সেনাবাহিনীর যে সদস্য সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনির মুখ স্ক্যান করতে পারেন তাঁকে অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অন্যতম আরেক ক্রীড়নক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ‘ইয়াবসোরা’ বা ‘গসপেল’।  যেকোনো হামলার টার্গেট নির্ধারণে গসপেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরামর্শ দিতে পারে। বিমান হামলায় নিয়োজিত পাইলট বা স্থল হামলার ট্যাংকারদের কাছে হামাস ও সন্দেহভাজন নাগরিকদের অবস্থান জানান দিতে পারে অর্ধলক্ষ মানুষের চেহারা ও বসবাসের ডেটাবেইস সম্মিলিত গসপেল। কোথায় কত সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক আছে এবং কতটা বেগে সেখানে আক্রমণ করতে হবে তা নির্দিষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় গসপেল।</p> <p>ফেস রিকগনিশন টুল ও গসপেল দুটো প্রযুক্তিতেই ট্রাফিক সিগন্যালের মতো অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়েছে, দুটি যন্ত্রেই আছে সবুজ, হলুদ ও লাল বাতি।  এআইভিত্তিক এই ব্যবস্থাপনা খুব সহজে ইসরায়েলি সৈন্যদের নিখুঁতভাবে জানান দিতে পারে কে তাদের টার্গেট? ফিলিস্তিনি কোনো নাগরিকের উপস্থিতিতে ইসরায়েলি এআইভিত্তিক এসব যন্ত্রে লাল বাতি জ্বলে, তবে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।</p>