<p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষণায় অত্যন্ত জনপ্রিয়তার অধিকারী ড. গোলাম মুরশিদ। ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি, জীবনী, ভাষাতত্ত্ব, অভিধান, মানবীবিদ্যা প্রভৃতি তাঁর আগ্রহের বিষয়। এসব বিষয়ের ওপর রয়েছে তাঁর অর্ধশতাধিক গ্রন্থ ও প্রবন্ধ। তাঁর গবেষণার বৈচিত্র্য, মৌলিকত্ব ও গুরুত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:#323232"> তিনি অদ্বিতীয়। ড. গোলাম</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মুরশিদের জন্ম ১৯৩৯ সালের ৮ এপ্রিল বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ করেছেন। প্রথম কর্মজীবন ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় দুই দশক তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৮৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডনের বিবিসি বাংলা বিভাগে কাজ করেছেন। এ ছাড়া ১৯৯১ সাল থেকে লন্ডনে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি সিক্সথ ফর্ম বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। গত ২২ আগস্ট ২০২৪ তারিখ লন্ডনের কুইন্স হাসপাতালে তিনি পরলোকগমন করেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন স্বরোচিষ সরকার</span></span></span></span></span></p> <p><br /> <span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><strong>১৯৭০ সালের সূচনায় আপনার সম্পাদনায় </strong></span></span><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিদ্যাসাগর</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে একটি বই প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশিত হওয়ার খবর তখন আকাশবাণী কলকাতা থেকে, এমনকি রয়টার থেকেও পরিবেশন করা হয়। বইটির মধ্যে এমন কী বৈশিষ্ট্য ছিল, যা তখন এমন সমাদর লাভ করে? </span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যাসাগরের দেড় শ বছর পূর্তি হয়। এ উপলক্ষে এই বই রচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি। এতে ছিল ১২ জন লেখকের ১৪টি প্রবন্ধ। তখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যাসাগরের দেড় শ বছর পূর্তি উদযাপনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অপরপক্ষে ওই সময়ে পূর্ববঙ্গে একটা জোয়ার এসেছিল ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদের। আমরা যাঁরা এই বইতে লিখেছিলাম, তাঁদের সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগাযোগ ছিল না। আমরা বরং সেই ধর্মনিরপেক্ষতার সংস্কৃতি দিয়ে প্রভাবিত হয়েছিলাম। তারই একটা বহিঃপ্রকাশ বিদ্যাসাগর স্মারকগ্রন্থ।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ১০ জন শিক্ষককে হত্যা করা হবে বলে তালিকা করা হয়, তার মধ্যে আপনার নাম ছিল। ঠিক কী কী কারণে তৎকালীন সরকার আপনাকে অখণ্ড পাকিস্তানের শত্রু মনে করত?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি রাজনীতিসচেতন নাগরিক ছিলাম চিরদিন। কিন্তু রাজনীতি করিনি কখনো। কাজেই হত্যার তালিকায় আমার নাম থাকাটা একটা বিস্ময়ের ব্যাপার। আমার ধারণা, ২১ মার্চ তারিখে কলকাতার আকাশবাণী কেন্দ্র থেকে প্রচারিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবাদ-সমীক্ষা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">য় বিদ্যাসাগর গ্রন্থের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল এবং তা পাকিস্তানি নিরাপত্তা বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তা ছাড়া বিদ্যাসাগর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের খবরাখবর যে রকম সাড়ম্বরে জাতীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল, তা-ও নিরাপত্তা বিভাগকে সচেতন করে থাকবে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় ছিলেন। আনন্দবাজার, দেশ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন এবং বাংলাদেশের </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাধীনতা সংগ্রামের সাংস্কৃতিক পটভূমি</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে একটি বই প্রকাশ করেছিলেন হাসান মুরশিদ ছদ্মনামে। প্রথম দিকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সময়ের স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যখন পলাতক</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। আরো পরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখেছেন </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। শেষোক্ত বইয়ে এক ধরনের হতাশা লক্ষ করি। দুই-একটা আশাব্যঞ্জক দিকের কথা শুনতে চাই?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পূর্ববঙ্গে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে প্রবল জোয়ার এসেছিল, তা-ই শেখ মুজিবুর রহমানের অতুলনীয় নেতৃত্বে স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে পরিণত হয়। তখন লাখ লাখ লোক নিহত হয়েছিলেন, নারীরা ধর্ষিতা হয়েছিলেন, বলতে গেলে সোনার বাংলা শ্মশানে পরিণত হয়েছিল। জনগণের প্রত্যাশা ছিল আকাশ-প্রমাণ। সবাই আশা করেছিল যে এত মূল্য দিয়ে কেনা বাংলাদেশে তারা সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকতে পারবে। কিন্তু তখনকার মতো তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা তাদের দারুণ হতাশ করেছিল। আমিও হতাশ হয়েছিলাম।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৭২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিদ্যাসাগর বক্তৃতা</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দিতে আহ্বান করে। সেখানে রবীন্দ্রনাথের ওপর ছয়টি বক্তৃতা প্রদান করেন। সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে প্রণীত হয় </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রবীন্দ্রবিশ্বে পূর্ববঙ্গ পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। বাংলাদেশের মানুষের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পৃক্ততা সেখানে আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথ কী হিসেবে টিকে থাকবেন বলে আপনার ধারণা?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রবীন্দ্রনাথ তখন ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালিয়ানার প্রতীক। আজও তাই। পাকিস্তানি শাসন-শোষণের মুখে তিনি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তাঁকে নিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম। এখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। রবীন্দ্রনাথ টিকে থাকবেন কবি হিসেবে, সুরকার-গীতিকার হিসেবে; ছোটগল্পকার-নাট্যকার হিসেবে, প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে নয়।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সত্তরের</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দশকের মাঝামাঝি আপনি দুটি বড় কাজ করেছেন। একটি রাজশাহীতে আপনার পিএইচডি গবেষণা, অন্যটি মেলবোর্নে আপনার পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা। সাহিত্যের মধ্যে সমাজতত্ত্ব অনুসন্ধান উভয় গবেষণার মূল বৈশিষ্ট্য। প্রথমটি থেকে </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমাজ সংস্কার আন্দোলন ও বাংলা নাটক</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং দ্বিতীয়টি থেকে </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংকোচের বিহ্বলতা : আধুনিকতার অভিঘাতে বঙ্গরমণীর প্রতিক্রিয়া</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বই তৈরি হয়। সাহিত্যের সমাজতত্ত্ব বিষয়ক এসব গবেষণার পেছনে আপনার বিশেষ কোনো প্রেরণা ছিল কি? </span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি আগাগোড়াই সাহিত্যের সঙ্গে সমাজকে মিলিয়ে দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম। বিদ্যাসাগর স্মারক গ্রন্থে আমার প্রবন্ধ থেকেও সেটা দেখা যাবে। যুদ্ধের আগেই আমি রবীন্দ্রনাথের সমাজ-সচেতনতা নিয়ে পিএইচডির কাজ শুরু করেছিলাম। তার ওপর ১৯৭৪ সালে অধ্যাপক তপন রায়চৌধুরী আসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ইতিহাসের নানা ধারা সম্পর্কে অত্যন্ত মূল্যবান আটটি বক্তৃতা দেন। সেই বক্তৃতা থেকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসের প্রতি আমার আগ্রহ অনেক বৃদ্ধি পায়। তখন আমি উনিশ শতকের বঙ্গদেশের সমাজ-সংস্কার বিষয়ে গবেষণা করতে শুরু করি। দেখতে পাই যে, এই সমাজ-সংস্কারমূলক কাজের চৌদ্দ আনাই নারীদের অবস্থা উন্নয়ন করার সঙ্গে যুক্ত। মেলবোর্নে আমি এর মধ্য থেকে নারীদের অংশটাকেই বেছে নিই। এবং বিষয়টাকে দেখি নারীমুক্তি ও নারীবাদের আলোকে। সেদিক থেকে তপন রায়চৌধুরী পরোক্ষভাবে আমার গুরু, প্রেরণাদাতা।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশির দশকের সূচনায় আপনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। এ সময়ে আপনার একাধিক বই বাংলা একাডেমি প্রকাশ করে। কর্মক্ষেত্রে আপনার পদোন্নতি হয়। আর তখনই আপনি বিবিসি বাংলা বিভাগের চাকরি নিয়ে দেশত্যাগ করেন। আপনি কি তখনই বুঝতে পেরেছিলেন যে আপনার গবেষক-জীবন তাতে বাধাগ্রস্ত হবে না?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি যখন গিয়েছিলাম, তখন ধারণা করেছিলাম যে, যাচ্ছি অল্প কয়েক বছরের জন্য। এবং লন্ডনে আছে সোনার খনির মতো গবেষণার অফুরান উপকরণ। সেখানে গবেষণার উপকরণ সংগ্রহ করব। কিন্তু কার্যকারণে লন্ডনেই থেকে যেতে হলো। ফেরা হলো না। চিরজীবন অধ্যাপনা করেছি। সেখানকার কাজটাও ছিল একেবারে অন্য ধরনের। কিন্তু কথায় বলে না, ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে! আমি তাই লন্ডন গিয়েও গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকলাম। এবং পেছনের দিকে তাকিয়ে এখন বলতে হয় যে, লন্ডনে না থাকলে আশার ছলনে ভুলি: মাইকেল-জীবনী, কালান্তরে বাংলা গদ্য অথবা আঠারো শতকের বাংলা গদ্যের মতো গ্রন্থ কোনোকালে লেখা হতো না। এসব বইয়ের উপকরণ পেয়েছিলাম ব্রিটিশ মিউজিয়াম লাইব্রেরিতে, বিশেষ করে তার একাংশ ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু এসব গবেষণার ফলে আপনি তো আর্থিকভাবে লাভবান হননি। তাহলে এগুলো কেন করলেন?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানুষ কি শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কাজ করে? আমার পেশা যখন যা-ই হোক না কেন, গবেষণা ছিল আমার সত্যিকার নেশা। আজও সেই প্রবল নেশা ছাড়তে পারিনি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যদিও অবসর নিয়েছি অনেক বছর আগে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার ধান ভানার কাজ চালিয়ে যেতে চাই।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিবিসি বাংলায় আপনি বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান করেছেন: কখনো গান নিয়ে, কখনো সংস্কৃতি নিয়ে। অব্যাহত রেখেছেন পড়াশোনা ও গবেষণা। </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এরই পরোক্ষ ফল। কিন্তু এ বই লিখতে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি প্রয়োজন। সেই প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছিলেন?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই প্রস্তুতি আমি সারা জীবন ধরেই নিয়েছিলাম। আমি হচ্ছি ইংরেজিতে যাকে বলে জ্যাক অব অল ট্রেডস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব বিষয়ই একটু একটু জানি। তা ছাড়া বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে লেখার জন্য যে অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার, তা আমি সারা জীবন ধরে আত্মস্থ করেছিলাম। তপন রায়চৌধুরী, শিবনারায়ণ রায়, অসীম রায়, রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত, আনিসুজ্জামান প্রমুখ পণ্ডিতজনের সঙ্গে আলোচনা করেও উপকৃত হয়েছিলাম। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আপনার একটি বই </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালাপানির হাতছানি : বিলেতে বাঙালির ইতিহাস</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর লন্ডনপ্রবাসীদের একটি অংশ আপনার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিল। সত্য উদঘাটনের জন্য পর্যাপ্ত পরিশ্রমের পর এই ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আপনার মনের অবস্থা কেমন হয়?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালাপানির হাতছানি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মৌলিক গবেষণার ফল। আমিই আবিষ্কার করি প্রথম বিলেতগামী বাঙালি হিন্দু ঘনশ্যাম দাসের কথা, যিনি রামমোহন রায়ের ৬০ বছর আগে বিলেতে গিয়েছিলেন। আবিষ্কার করি আনন্দচন্দ্র মজুমদারের কথা। এমনকি, প্রধানত সিলেট অঞ্চল থেকে যে নাবিকরা গিয়ে বিলেতে স্থায়ীভাবে বাঙালিদের বসতি গড়ে তোলেন, সে সম্পর্কেও মৌলিক গবেষণা ছিল। বইটির শেষ দুই অধ্যায়ে ছিল বর্তমানে বাসরত বাঙালিদের কথা। বিতর্কটা সেই দুই অধ্যায় নিয়ে। যে নাবিকরা গিয়েছিলেন, তাঁরা বেশির ভাগ লেখাপড়া জানতেন না, টিপসই করে পাসপোর্ট করেছিলেন। এই সত্যটা তাঁদের বংশধররা শুনতে রাজি ছিলেন না। তবে এই মনোভাব কিন্তু নতুন নয়। এর আগে মনিকা আলির উপন্যাস </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্রিক লেইন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং শাকুর মজিদের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লন্ডনী কইন্যা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ও তাঁদের ক্ষুব্ধ করেছিল। মানিকা আলি এবং শাকুর মজিদ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুজনই সিলেটের মানুষ।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১৩-১৪ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে আপনার সম্পাদিত </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। এই অভিধানটি এ পর্যন্ত প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অভিধান। এই অভিধানের অভিনবত্ব সম্পর্কে আপনার নিজের মূল্যায়ন কী?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধানে প্রতিটি শব্দের প্রথম লিখিত ব্যবহারের দৃষ্টান্ত ও অর্থ এবং তারপর কয়েক শতাব্দী ধরে সেসব শব্দের রূপ এবং অর্থের যে পরিবর্তন ঘটে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তার ইতিহাস উদ্ধার করা হয়েছে। ২০০ বছর ধরে বাঙালিরা অসংখ্য অভিধান রচনা করেছে। কিন্তু এ ধরনের অভিধান রচনা করেনি অথবা তার কথা ভাবেনওনি। আমরা অন্য অভিধান থেকে শব্দ সংকলন করিনি। শব্দ এবং তাদের দৃষ্টান্ত সংগ্রহ করেছিলাম মূল পাণ্ডুলিপি এবং বই থেকে। এ অভিধানের কোনো তুলনা বাংলা অথবা উপমহাদেশীয় কোনো ভাষায় নেই। এটি একটি পথিকৃতের কাজ।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়েছে আপনার </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেনেসন্স বাংলার রেনেসন্স</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। রেনেসন্স ও বাংলার জাগরণ নিয়ে প্রায় এক শতাব্দী ধরে নানা ধরনের আলোচনা হয়েছে। এতকাল পরে এই বইয়ে নতুন কী কথা বলতে পেরেছেন বলে আপনার ধারণা?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইতালিতে রেনেসন্স এসেছিল প্রধানত চিত্রকলা এবং স্থাপত্যে। এটা বোঝানোর জন্য অত্যাবশ্যক চিত্রকলা এবং স্থাপত্যের মধ্যে যে নূতনত্ব এসেছিল, তার দৃষ্টান্ত দিয়ে। কিন্তু সুশোভন সরকার, শিবনারায়ণ রায়, বিনয় ঘোষ প্রমুখ যে লেখকরা রেনেসন্স নিয়ে আলোচনা করেছেন, তাঁরা ছবি দিয়ে জিনিসটা বোঝাননি, নিজেরাও বুঝেছিলেন কি না সন্দেহ করি। তাঁরা লিখেছিলেন ইয়াকব বুর্কহার্টের রেনেসন্সের ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে। বুর্কহার্ট যে চিত্তজাগরণ সম্পর্কে লিখেছিলেন, তার অনেকটাই ঠিক রেনেসন্সের সময়কার নয়, তার পরবর্তী </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এনলাইটেনমেন্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">-এর সময়ে এসেছিল। আমার বিশ্বাস, আমি ইতালির রেনেসন্সের দৃষ্টান্ত দিয়ে পরে তার সঙ্গে বঙ্গীয় রেনেসন্সের যে আলোচনা করি, তা নতুন।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মধুসূদনের জীবনী লেখার পর অনেকেই আপনার কাছে নজরুলকে নিয়ে ঠিক একই ধরনের একটি জীবনী প্রত্যাশা করেছেন। আপনি সেই কাজ শুরু করেছেন বলে শুনেছি। তার অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু বলবেন কী?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি এরই মধ্যে কয়েকটি অধ্যায় রচনা করেছি। কিংবদন্তির ধুলো ঝেড়ে মধুসূদনকে আমি যেমন আবিষ্কার করেছিলাম, আমার লক্ষ্য নজরুলকেও তেমনি করে পুনর্নিমাণ করা। শোনা কথা দিয়ে তাঁর যে ভাবমূর্তি এযাবৎ তৈরি হয়েছে, তাঁকে তা থেকে মুক্ত করা। কাজটা সহজ হবে না।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দেশের গবেষকদের একটা সাধারণ যুক্তি তাঁরা ইংরেজি মাধ্যমে গবেষণাপত্র লেখেন, যাতে তা বিশ্বের সবার কাছে পাঠযোগ্য হয়। আপনার দুটি বই সরাসরি ইংরেজিতে </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রিলাকট্যান্ট ডেবুট্যান্ট : রেসপন্স অব বেঙ্গলি উইমেন টু মডার্নাইজেশন</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হার্ট অব এ রেবেল পোয়েট</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। অন্যদিকে আপনার </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশার ছলনে ভুলি</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ও </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। বাংলাদেশ বিষয় নিয়ে যাঁরা গবেষণাপত্র লিখবেন, তাঁদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার মনে হয়, ঝোঁকটা থাকা উচিত গবেষণার প্রতি, ভাষার প্রতি নয়। ভালো ইংরেজি জানলে ইংরেজিতেও লেখা যেতে পারে। কিন্তু বাংলায় লিখলে দেশের লোকেরা বুঝতে পারবে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে আপনি জন্মেছিলেন। এখন আপনি বাংলাদেশের প্রথম সারির প্রাবন্ধিক ও গবেষক। এই পর্যায়ে উঠতে আপনাকে কী পরিমাণ অধ্যবসায় ও পরিশ্রম করতে হয়েছে। ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য সে সম্পর্কে কিছু বলবেন কি?</span></span></strong></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি স্বশিক্ষিত মানুষ। সত্যিকার লেখাপড়া শিখি বিশ্ববিদ্যালয়-জীবন শেষ হওয়ার পর। একবার তাতে আগ্রহ জন্মানোর পর আমি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে লেখাপড়া করেছি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারো চাপে নয়, স্বেচ্ছায়। ভালো লাগে বলে। পুরস্কার পাওয়ার লোভে নয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লেখার কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার লক্ষ্য। গবেষণা এবং লেখাপড়া সম্পর্কে আমার কথা হলো: এর কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। আরাম-আয়েশ করে গবেষণা করা যায় না। নিরাসক্ত দৃষ্টি এবং অজানা সত্যকে আবিষ্কারের উদ্দেশ্য নিয়ে আরামকে হারাম করে গবেষণায় নামা উচিত। অন্য বই থেকে নকল করে গবেষণা হয় না।</span></span></span></span></p> <p> </p>