<p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুযোগ পেলে শালবনে যাওয়া অনেকটা নেশায় পরিণত হয়েছে। এই বন আমার কাছে বিস্ময়মাখা এক আবেগের নাম। প্রতিবারই নতুন রূপে দেখি বনটিকে। আগেরবার যে উদ্ভিদগুলোকে সাদামাটা স্বাভাবিক কোনো উদ্ভিদ মনে হয়, পরেরবার সেসব গাছের কোনো কোনোটি বিচিত্র ফুল-ফলে নিজেকে সুশোভিত করে রাখে! বছরজুড়ে তাতে নানা পরিবর্তন ঘটতে থাকে। অথচ এমন একটি মহাগুরুত্বপূর্ণ বন এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে ঠেকেছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন দিন হয়তো আর খুব বেশি দূরে নয়, যখন বন বিভাগ ঘোষণা করতে পারে যে দেশে এখন আর শালবন বলতে কিছু নেই। যদি এমন কিছু ঘটেও, তাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ শালবন এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে ঠেকেছে। ১৯৮৭ সালের দিকে বন বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বনের ভেতর বিদেশি গাছ লাগানো ছিল আরেকটি আত্মঘাতী কাজ। শালবনকে নতুনভাবে জেগে ওঠার সুযোগ না দিয়ে কৃত্রিমভাবে বন তৈরির চেষ্টা খুবই হাস্যকর ও হঠকারী উদ্যোগ। একসময় আয়তনের দিক থেকে দেশের সমতল অঞ্চলে সম্ভবত শালবনই সবচেয়ে বড় ছিল। এমনকি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারত পর্যন্ত ছিল এর বিস্তৃতি। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিসর্গ নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গ্রন্থে অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা জানিয়েছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতের ডুয়ার্স থেকে মেঘালয়ের গারো পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত শালবন গোটা বরেন্দ্র অঞ্চল হয়ে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।...প্লিয়োস্টিন যুগের ২ লক্ষ বছর আগে শেষ ভূমিকম্পে সৃষ্ট লালমাটির আত্মজ এই শালবন খুবই প্রাচীন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জীবনে প্রথম কয়েকটি শালগাছ দেখি কুমিল্লার ময়নামতির শালবন বিহারে। সেখান থেকে ফেরার পর অনেকবার ভেবেছি, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শালগাছ এখানে কোথা থেকে এলো। পরে অবশ্য এই প্রশ্নের জবাব পেয়েছি। ময়নামতির গাছগুলো বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। ভৌগোলিক বিবর্তন, বেদখল প্রক্রিয়া এবং অপরিকল্পিত বসতি সারা দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের শালবনকে নিশ্চিহ্ন করেছে। ময়নামতির পর অসংখ্যবার গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও দিনাজপুরের শালবনগুলো দেখেছি। যতবার দেখেছি, ততবারই কোনো না কোনো পরিবর্তন লক্ষ করেছি। প্রায় নিঃশেষ, ক্ষয়িষ্ণু বন নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শালবন নিয়ে নৈরাজ্যের যেন শেষ নেই। কাগজে-কলমে বন বিভাগ শালবনের অভিভাবক হলেও তারা যে এই বন রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ, সে কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। অথচ আমরা কেউ কি একবারও ভেবেছি, শালবন ধ্বংস হওয়া মানে দেশের অন্যতম প্রাণভাণ্ডারের বিলুপ্তি? কারণ শালবন আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম। শালবন মানে শুধু শালগাছই নয়, অসংখ্য উদ্ভিদবৈচিত্র্য ও বিচিত্র প্রাণীর আবাসও এখানে। গবেষকদের মতে, এই বনে ছোটবড় মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদের বাস। আমাদের একমাত্র বুনো রঙ্গন, বুনো কুল, কুম্ভি, উলটচণ্ডাল, পেরালিয়া লতা, সূর্যশিশির, বানরকলা, ভুঁইচাঁপা, ফুটিকার্পাস, পাহাড়ি ঝিটকি নীল, প্লাভা পানা, কাঞ্চনলতা, গোয়ালিয়া লতাসহ অনেক বিপন্ন কন্দজ ও পরজীবী এখানে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে। একজন বৃক্ষপ্রেমী বা গবেষক যদি প্রতি মাসে একবার শালবনে যান, তাহলে প্রতিবারই তাঁর জন্য অপেক্ষা করবে কোনো না কোনো নতুন কিছু। বছরজুড়ে থাকে বিচিত্র ফুল ফল লতাগুল্ম কন্দজ আর তৃণ নিয়ে অফুরন্ত প্রাণবৈচিত্র্যের সমাহার। টিকে থাকা যৎসামান্য এই শালবনকে এখন তৃতীয় প্রজন্মের বন মনে করা হয়। শালবন সৃষ্টিলগ্ন থেকেই নিজস্ব পদ্ধতিতে বংশবৃদ্ধির কাজটি করে আসছে। সাধারণত কেটে ফেলা গাছের গোড়া থেকে আপনাআপনিই নতুন চারা গজায়, আবার ফল থেকেও জন্মে নতুন চারা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই দুভাবে শালগাছ বংশবৃদ্ধির কাজটি করে আসছে। এই প্রক্রিয়া ব্যাহত করে বিকল্প কোনো পথে বনকে টিকিয়ে রাখাও একেবারেই অসম্ভব।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১০ সালের ৪ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় বৃক্ষ, পুষ্প উৎসব ও অন্যান্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামে একটি লেখা লিখি। তাতে শালগাছকে আমাদের জাতীয় বৃক্ষ ঘোষণা করার প্রস্তাব করি। কারণ দারুমূল্য, পাতার রাজসিক অবয়ব, বংশবৃদ্ধির কৌশল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব কিছুতেই শালগাছ অনন্য। শালকে জাতীয় বৃক্ষ করা হলে দুটি কাজ হতো। প্রথমত, শাল সম্পর্কে মানুষ নতুন করে জানতে আগ্রহী হতো; দ্বিতীয়ত, এই বন রক্ষায় হয়তো বা নতুন কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পেতাম। আমরা কি পারি না দেশের অবশিষ্ট শালবনগুলো বাঁচিয়ে রাখতে?</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বস্তুত শুধু শালবন নয়, শালবন রক্ষা পেলে বেঁচে যাবে প্রাণবৈচিত্র্যের একটি বিরাট অংশ। নিশ্চিত বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে সেখানকার বিপন্ন উদ্ভিদগুলো। এবার আমরা পরিচিত হব শালবনের এমন কিছু দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদের সঙ্গে, যেগুলো শালবনের বাইরে খুব একটা দেখা যায় না।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt">পেরালিয়া লতা বা ছায়ামালতী</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকার কাছেই পূর্বাচল। পূর্বাচলের এই বিরানভূমিতে পাওয়া এমনই এক মায়াবী ফুল পেরালিয়া লতা। স্থানীয়ভাবে দুধিলতা বা ছায়ামালতী নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Black Creeper</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। একটি দুর্লভ ফুলের ছবি তুলতে গিয়েই গাছটি প্রথম দেখি। ছোট বুনো ঝোপের ভেতর নান্দনিক ভঙ্গিতে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল। তারকাকৃতির অসংখ্য সাদাটে ফুল থেকে মৃদু সুগন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছিল। পূর্বাচলের অদূরে </span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রূপগঞ্জ জিন্দাপার্কেও দেখেছি গাছটি। তবে সংখ্যায় অনেক কম। প্রস্ফুটনকাল সীমিত হওয়ায় বছরের বেশির ভাগ সময় আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেরালিয়া লতা (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Ichnocarpus frutescens</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) গড়নের দিক থেকে ছোট আকারের পেঁচানো গুল্ম বা লতানো স্বভাবেরও হতে পারে। অসংখ্য শাখা-প্রশাখাযুক্ত কাণ্ড। বাকল লালচে বাদামি, মরিচার মতো ঘন ক্ষুদ্র কোমল রোমাবৃত। পত্রবৃন্ত অনূর্ধ্ব ০.৫ সেন্টিমিটার, পত্রফলক ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৩ সেন্টিমিটার চওড়া। আকৃতিতে উপবৃত্তাকার থেকে আয়তাকার বা বল্লমাকার হতে পারে, আগা সূক্ষ্ম ও দীর্ঘ। ফুল আকৃতিতে ছোট, সবুজাভ সাদা, সুগন্ধি এবং মঞ্জরিপত্র অতি ক্ষুদ্র। বৃতি রোমশ, ৫ ফাটলযুক্ত, ভেতরে গ্রন্থিল। দলমণ্ডল থলের মতো, অতি রোমশ ও নলের গলায় সংকুচিত, খণ্ড ৫টি, ডান দিকে পাকানো। পুংকেশর ২টি, স্বতন্ত্র। বীজ অসংখ্য। প্রস্ফুটনকাল বসন্ত থেকে বর্ষা অবধি বিস্তৃত।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাছটির প্রিয় আবাস আর্দ্র অথবা শুকনো চিরহরিৎ বা পাতাঝরা বনাঞ্চল। গাছের বাকল থেকে তন্তু হয়। পাতা ও মূল বিভিন্ন রোগে উপকারী। বাংলাদেশ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে গাছটি সহজলভ্য।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="390" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7a.jpg" style="float:left" width="300" /></span></span><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt">সূর্যশিশির</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেরপুর জেলার ৩৭ কিলোমিটার জুড়ে থাকা অরণ্য-পাহাড়ের রাংটিয়া বিটে যখন পৌঁছি তখন গাছের ফাঁক গলে সূর্যের নরম আলো মৃত্তিকার বুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা কয়েকটি শতোর্ধ্ববর্ষী শালগাছ পাশ কাটিয়ে বনের সরু পথ ধরে একটি ঝরনার পাশে এসে দাঁড়াই। এখানেই পাওয়া গেল আমাদের পরম কাঙ্ক্ষিত সূর্যশিশির, ইংরেজিতে যা পতঙ্গভুক সানডিউ নামে পরিচিত। পতঙ্গভুক হওয়ায় এই উদ্ভিদ সারা বিশ্বেই প্রকৃতিপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূর্যশিশির (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Drosera burmanni</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) বর্ষজীবী বা বহুবর্ষজীবী বীরুৎ শ্রেণির উদ্ভিদ। ছোট আকারের এই উদ্ভিদ মাত্র ৮ সেন্টিমিটার চওড়া হতে পারে। সাধারণত বড় ধরনের আগাছা এবং এর আশপাশে জন্মানো গাছপালার নিচে লুকানো অবস্থায় থাকে। পাতা ছোট ও গোলাকার, ৮ থেকে ১০ মিলিমিটার লম্বা এবং ৫ থেকে ৬ মিলিমিটার চওড়া। চারপাশে অসংখ্য সরু ফলায় ঝালরের মতো বিন্যস্ত। পত্রফলক হলদে সবুজ, লালাভ বেগুনি ও ডিম্বাকার। সরু পুষ্পদণ্ড লালচে বেগুনি, ৬ থেকে ২২ সেন্টিমিটার লম্বা। ফুল ২ থেকে ১৯টি। শীতকালে ফোটা এই ফুলের পাপড়ি সাদা থেকে হালকা লাল ও বেগুনি রঙের হতে পারে।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূর্যশিশিরের পাতাগুলো উজ্জ্বল লাল রঙের। দেখলে মনে হয়, ওগুলোর ওপর শিশিরকণা চিকচিক করছে। লালচে শিশিরবিন্দু আবৃত এই পাতাগুলো আসলে পোকামাকড় ধরার মারণফাঁদ। পাতাগুলো বিভিন্ন উচ্চতার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য বোঁটায় ঢাকা থাকে। প্রতিটি বোঁটার ওপর থাকে অতি ক্ষুদ্র একটি গ্রন্থি বা অঙ্গ, যা এক ধরনের স্বচ্ছ আঠালো তরল পদার্থ উৎপাদন করে। এই তরল পদার্থটি বোঁটাগুলোর ওপর শিশিরবিন্দুর মতো জমা হয়। বন ধ্বংসের কারণে উদ্ভিদটি এখন বিপন্ন বলেই মনে করা হয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black">    </span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="471" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7b.jpg" style="float:right" width="300" />পাহাড়ি ঝিটকি নীল</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাঝে মাঝেই ঢাকার দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পূর্বাচলে যাই। সেখানে বসতি এখনো জাঁকিয়ে বসেনি বলেই আশপাশে চোখ রাখলে দেখা যায় লতাগুল্ম, বুনো ঝোপঝাড়। ঘুরতে ঘুরতে একদিন চোখে পড়ল অচেনা কিছু ফুল। গাছের সংখ্যা মাত্র ৩। ছবি তুলতে গিয়ে মনে হলো নীলগাছের আত্মীয়। গাছটি পাহাড়ি ঝিটকি নীল নামেই পরিচিত। আমাদের দেশে কিছুটা বিরল। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন উদ্ভিদটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাহাড়ি ঝিটকি নীল (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Indigofera galegoides</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) গুল্ম শ্রেণির প্রায় ৩ মিটার উঁচু উদ্ভিদ। শাখা-প্রশাখা খাড়া। পত্র যৌগিক, ১২ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা, পত্রকসংখ্যা ১৫ থেকে ২৫, ডিম্বাকার, কখনো কখনো আয়তাকারও হতে পারে। শীর্ষ সূক্ষ্মাগ্র থেকে গোলাকার। পত্রবৃন্ত দেড় থেকে ২ মিলিমিটার, উপপত্র আড়াই থেকে সাড়ে তিন মিলিমিটার লম্বা, সরু ও ত্রিকোণাকার। মঞ্জরিদণ্ড ০.৮ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ঘনবদ্ধভাবে অনেক ফুলের সমারোহ। ফুলের রং ফ্যাকাসে লাল, ৬ থেকে ৮ মিলিমিটার লম্বা, মঞ্জরিপত্র হালকাভাবে ত্রিকোণাকার, পুষ্পবৃন্তিকা প্রায় ২ মিলিমিটার লম্বা, ঘনভাবে ক্ষুদ্র ও কোমল রোমযুক্ত। বৃতি ঘণ্টাকার। পুংকেশরীয় আবরণ ৪ থেকে ৭ মিলিমিটার, পরাগধানী ১ মিলিমিটার লম্বা, আংশিক বাঁকা ও নমনীয়। পরিপক্ব বীজ লালচে বাদামি, আড়াই থেকে ৩ মিলিমিটার লম্বা, চতুর্ভুজাকৃতির এবং হালকাভাবে কূপযুক্ত। ফুলের মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিস্তৃত। পাহাড়ি ঝিটকি নীল রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ এবং বিষাক্ত হিসেবে ক্ষতিকর।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="445" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7c.jpg" style="float:left" width="300" />শিশিরফুল</span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শালবনে যতবারই গিয়েছি, দিনশেষে এই বন আপন মহিমায় আমাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে যোগ করেছে অনেক বৃক্ষজাত জ্ঞান। গাজীপুরের পাকিয়াব শালবনে অভিজ্ঞতার ঝুলিতে আরেকটি নতুন পালক যুক্ত হলো। দেখা পেলাম শিশিরফুল নামের আরেকটি উদ্ভিদের। গাছটির উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Murdannia edulis</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। প্রচলিত নাম অনুসারে যাকে ভোজ্য শিশিরফুল হিসেবেও সম্বোধন করা যায়। মূলজ পাতা, কন্দের মূল এবং দীর্ঘ পুষ্পদণ্ড এই গাছের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তা ছাড়া দীর্ঘ পুষ্পদণ্ডে পাতার আগেই ফুল ফোটানোর আয়োজন দেখে এই প্রজাতিটি সহজে চেনা যায়।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বহুবর্ষজীবী বীরুৎ, কাণ্ড খর্ব, শিকড় তন্তুযুক্ত, শক্ত ও মূল দীর্ঘায়ত কন্দজ। পাতা ৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ ও অখণ্ড। ফুল সরু মঞ্জরিতে সমাকীর্ণ, মঞ্জরিদণ্ড ১৪ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার লম্বা, বৃন্ত ৫ থেকে ৭ মিলিমিটার। পাপড়ি ৩ থেকে ৪ মিলিমিটার, বিডিম্বাকার ও নীল। পুংকেশর ৩টি, প্রায় ৬ মিলিমিটার লম্বা ও নীলাভ। ফল ক্যাপসুল আকৃতির, ৫ থেকে ৭ মিলিমিটার লম্বা। বীজ প্রতি কোষে ৩ থেকে ৪টি, ফিকে হলুদ ও গ্রন্থিযুক্ত। ফুল ও ফলের মৌসুম মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস। এই গাছ সাধারণত অরণ্যের সমতল স্থান ও বেলে মাটিতে জন্মে। তবে চিহ্নিত স্থানগুলোতে এই গাছের সংখ্যা একেবারেই সীমিত। গাছটি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার্য।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="419" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7e.jpg" style="float:right" width="300" />জাতসালপানি</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে পূর্বাচলের উত্তর প্রান্তে একটি নালার পাশে গাছটি চোখে পড়ে। ধুলোমলিন, বিধ্বস্ত, ক্লান্ত আর হতশ্রী। শালবনের এই উদ্ভিদটি এখন সংখ্যায়ও বেশ কমেছে। অগ্রভাগের রূপান্তরিত পাতাগুলো দেখতে বেশ নান্দনিক। তবে গোড়ার দিকের পাতাগুলো দেখলে মনেই হবে না একই গাছে আবার আগার দিকে এমন শৈল্পিক পাতা হতে পারে।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতসালপানি (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Desmodium pulchellum</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) গুল্ম শ্রেণির ঝোপালো উদ্ভিদ। ১ থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। শাখা সরু, গোলাকার, সূক্ষ্মভাবে বাদামি রঙের পালকে আবৃত। পত্রক বা পাতার মতো সবুজ রঙের হালকা অবয়ব আয়তাকার, ৫ থেকে ৮ সেন্টিমিটার লম্বা, প্রান্তীয় পত্রক সর্বাপেক্ষা বড়। গোড়ার দিকে গোলাকার, মাঝে মাঝে আংশিক তরঙ্গায়িত। পুষ্পমঞ্জরি ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা, ১২ থেকে ৫০টি ফুলবিশিষ্ট, মঞ্জরিপত্র খানিকটা তির্যক, ১ থেকে ৩ সেন্টিমিটার লম্বা, পুষ্পবৃন্তিকা দেড় থেকে আড়াই সেন্টিমিটার লম্বা, পালকাবৃত। পুষ্পবিন্যাস ৮ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার লম্বা, পাতার অক্ষে বা শাখার শেষে থাকে। দলমণ্ডল ৫ থেকে ৭ মিলিমিটার লম্বা। ফুল ও ফলের মৌসুম মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বিস্তৃত।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="417" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7d.jpg" style="float:left" width="300" />কুম্ভি</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুম্ভি শালবনের গাছ। সমতলে সচরাচর দেখা যায় না। আমাদের লোকালয়ের বন-বাদাড় বা পার্ক-উদ্যানেও নেই। মূলত এ কারণেই দুষ্প্রাপ্য। বড় ধরনের গাছ, ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এরা পত্রমোচী। শরতে পাতা ঝরায়। পাতা পূর্ণাঙ্গ ও একান্তর, ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং প্রস্থে ১৫ সেন্টিমিটার, বোঁটার দিকে সরু। বোঁটা আড়াই সেন্টিমিটার। কাণ্ডের বাকলে কাঁটা এবং ছোট ছোট খণ্ডে বিভক্ত। খোসা পতনশীল। মঞ্জরিদণ্ড সাড়ে সাত থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা। ফুলের বোঁটা খাটো। ফুল সুন্দর। স্পাইক আবৃত, বড় ও বেগুনি সাদা। পাপড়িসংখ্যা ৪, প্রায় ৫ সেন্টিমিটার লম্বা, সাদা। পুংকেশর অজস্র, লাল। ফল সবুজ, মাংসল, ৫ থেকে ৮ সেন্টিমিটার চওড়া, গোল, তল কলসির মতো ফাঁপা বলেই এমন নাম। বীজ খুব ছোট এবং অসংখ্য। ফুল ফোটে মার্চ-এপ্রিলে, ফল পাকে জুন মাসে। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় চট্টগ্রাম ও সিলেটের বনে। কাঠ রক্তাভ বাদামি, টেকসই। বাকল দড়ি ও চামড়া ট্যান করার কাজে লাগে। কুম্ভিপাতা বিড়ি বানানোর কাজে ব্যবহৃত হয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="412" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7f.jpg" style="float:right" width="300" />বুনো রঙ্গন</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাজীপুরের শালবনে বসন্তের প্রথম ভাগে বনের ভেতর হাঁটা পথের ধারে বেশ কয়েকটি ছোট গুল্ম দেখেছিলাম। নিতান্তই অবহেলা-অনাদরে বেঁচে আছে। বসন্তের শেষ দিকে বনে ঢুকেই থমকে দাঁড়াতে হলো! ছোট গাছগুলো পুষ্পপ্লাবনে ভাসছে। কয়েক দিন পর মিরপুর জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেও ফুলভর্তি কয়েকটি গাছ দেখি। প্রথমে মনে হয়েছিল আবাদিত রঙ্গন।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটি আসলে বুনো রঙ্গন (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Ixora cuneifolia</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">)। আলোচ্য রঙ্গন কোথাও কোথাও বিউফুল, বেত্তফুল বা কেসুয়াগাছ নামেও পরিচিত। চিরসবুজ গুল্মশ্রেণির ছোট গাছ। পত্র উপপত্রযুক্ত, উপপত্র সূত্রাকার, পত্রবৃন্ত ১০ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পাতা ১৫ থেকে ২২ সেন্টিমিটার লম্বা, ডিম্বাকৃতির। মঞ্জরিদণ্ড খাটো, মঞ্জরিপত্র বল্লমাকার। ফুলের রং সাদা, ৩ সেন্টিমিটার লম্বা। বৃতি ও পাপড়ি মসৃণ, নল সরু, খণ্ডক, আয়তাকার। </span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরাগধানী বহির্মুখী। ফল মটর আকৃতির, লাল। ফুল ও ফলের মৌসুম মার্চ থেকে জুন। এরা সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাছটি বিপন্ন।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="240" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7g.jpg" style="float:left" width="300" />বনখেজুর</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বনখেজুর (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Phoenix acaulis</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার শালবনে দেখা যায়। এটি কাণ্ডবিহীন পামগাছ। পাতা সরু, চোখা। স্ত্রী ও পুরুষ ফুল পৃথক। ফল একবীজবিশিষ্ট। বীজ থেকে চারা হয়। গাছের গড়ন, ফল ও পাতা দেশি খেজুরের মতো হলেও তুলনামূলকভাবে বেশ ছোট। ফুল ও ফলের মৌসুম বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ। ফল পাখিদের প্রিয়। ভারতের বিহার এবং ছোট নাগপুর অঞ্চলে দেখা যায়। গাছটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="358" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7h.jpg" style="float:right" width="300" />বানরকলা</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মধুপুরের বনে জন্মে। ফল বানরের প্রিয় বলেই সম্ভবত এমন নামকরণ। বৈজ্ঞানিক নাম </span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Uvaria hamiltonii</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। ইংরেজি নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Eastern Uvaria</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। বানরকলা আরোহী ধরনের গুল্মশ্রেণির উদ্ভিদ। কাণ্ড রোমশ, পত্রবৃন্ত দেড় থেকে ২ সেন্টিমিটার লম্বা। পত্রফলক ১৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ, ঘন ক্ষুদ্র রোমাবৃত। পুষ্পবিন্যাস কাক্ষিক। ফুল একক বা ২-৩টি একত্রে। মঞ্জরিপত্র ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার লম্বা, উপগোলাকার এবং বৃত্যংশ ৩টি। গাঢ় লালচে রঙের পাপড়িসংখ্যা ৬, চার্ম, বিডিম্বাকার ও রোমাবৃত। পুংকেশর অসংখ্য, ৩ থেকে ৫ মিলিমিটার লম্বা, পরাগধানী রৈখিক ও রোমশ। গর্ভপত্র প্রায় ৪ মিলিমিটার লম্বা ও মসৃণ। পরিপক্ব গর্ভপত্র প্রায় ১০টি, দেড় থেকে আড়াই সেন্টিমিটার লম্বা এবং কমলা রঙের। ফল দেখতে অনেকটা কলার মতো। ফুল-ফলের মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। এই উদ্ভিদের সঙ্গে তিনজন স্বনামধন্য উদ্ভিদবিজ্ঞানীর নাম যুক্ত। বৈজ্ঞানিক নামের শেষাংশ হ্যামিলটনের স্মারণিক এবং শনাক্তকারী হিসেবে হুকার ও থম্পসনের নাম প্রণিধানযোগ্য।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="223" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7i.jpg" style="float:left" width="300" />প্লাভা পানা</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার অদূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে ছোট্ট জলায় ফুলটি প্রথম চোখে পড়ে। গাছটির ফুল, পাতা ও গড়ন একেবারেই আলাদা। সব কিছুতেই একটি শৈল্পিক সামঞ্জস্য লক্ষণীয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটি সাদা তরুক্ষীরযুক্ত বহুবর্ষজীবী জলজ বীরুৎ। পত্র পুরু, ঋজু, গুচ্ছাকার ও খাড়া। পত্রবৃন্ত পুরু, ২৫ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার লম্বা ত্রিকোণাকৃতি, পত্রাবরণ পরস্পর আচ্ছাদিত। পুষ্পবিন্যাস ছত্রমঞ্জরিসদৃশ। ফুল পর্যায়ক্রমে ২ থেকে ১২টি, ত্রিকোণাকারে সজ্জিত, আড়াআড়ি দেড় থেকে সাড়ে তিন সেন্টিমিটার, মঞ্জরিপত্রিকা ঝিল্লিযুক্ত, পুষ্পবৃন্ত অসম ৩ থেকে ৪ সেন্টিমিটার লম্বা, মূলীয় অংশ ত্রিকোণাকার এবং ওপরের অংশ ৩ পক্ষল। বৃত্যংশ ৩ ও স্থায়ী। পাপড়িসংখ্যা ৩, পাতলা, প্রশস্ত ডিম্বাকার, ফ্যাকাসে হলুদ, কুঞ্চিত ও পতনোন্মুখ। পুংকেশর অসংখ্য, একাধিক সারিতে বিন্যস্ত। বীজ ১ মিলিমিটার লম্বা, কালো, সামান্য চাপা উভয় প্রান্ত গোলাকার ও অমসৃণ। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষের তথ্য অনুযায়ী, আমাদের দেশে এই জলজ উদ্ভিদটি (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Limnocharis flava</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) শুধু চট্টগ্রাম জেলায়ই পাওয়া যায় বলে উল্লেখ রয়েছে। জলাভূমির বর্ণবৈচিত্র্য সৃষ্টির জন্য উদ্ভিদটির ব্যবহার আরো বাড়ানো প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="478" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7j.jpg" style="float:right" width="300" /><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="461" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7m.jpg" style="float:left" width="289" />ফুটিকার্পাস</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:-.2pt">মসলিন কাপড় তৈরির সুতা বানানো হয় ফুটিকার্পাস থেকেই। একসময় কাপাসিয়ার শালবনে প্রচুর পরিমাণে দেখা গেলেও বর্তমানে সংখ্যায় খুবই কম। এ কারণে বিপন্নও বটে। কাপাসিয়ার হাইলজোর গ্রামের বেলায়েত মাস্টারের বাড়িতে ফুটিকার্পাসের দুটি গাছ দেখেছি। আরো ২০ থেকে ২৫টি গাছ এই গ্রামে দেখা যায়। গাছটির উদ্ভিতাত্ত্বিক নাম </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:-.15pt">Gossypium arboreum var. neglecta</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:-.2pt">। ফুটিকার্পাস মূলত নরম কাণ্ডের গুল্মশ্রেণির বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। পরিণত কাণ্ড ও ডালপালা নুয়ে পড়ে। সবুজ রঙের শিরালো পাতাগুলো করতলাকৃতির, গভীরভাবে তিন ভাগে বিভক্ত। সুদৃশ্য মঞ্জরিঢাকনাও অসমান। ফুলের বৃতি পেয়ালাকৃতির, দলমণ্ডল ফ্যাকাসে হলুদ বা সাদা, পাপড়িসংখ্যা ৫।</span></span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="253" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7k.jpg" style="float:left" width="300" />কাঞ্চনলতা</span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাঞ্চন ফুলের সহজলভ্য কয়েকটি রকমফের ভালোই চেনা। কিন্তু কাঞ্চনলতা ছিল অচেনা। যে কাঞ্চন রীতিমতো বৃক্ষ, সেই কাঞ্চনই আবার লতা!  মধুপুরের বনেই পাওয়া গেল কাঞ্চনলতা। তবে সংখ্যায় কম। উদ্ভিদটি স্থানীয়ভাবে চেহুর, তাউ, চিহুল ইত্যাদি নামেও পরিচিত। কাঞ্চনলতা (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Bauhinia vahlii</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) বেশ বড় আকারের কাষ্ঠল আরোহী, ৯ মিটারের বেশি লম্বা হতে পারে, কাণ্ড পুরু। সুউচ্চ বৃক্ষে বিশৃঙ্খলভাবে ঠাসাঠাসি করে বেড়ে ওঠে। তরুণ বিটপ আকর্ষীযুক্ত। পাতা বেশ বড়, সরল, আগার দিকে গভীরভাবে দুই ভাগে বিভক্ত। একসময় পাতায় মুড়িয়ে সওদাপাতি বিক্রি হতো। মঞ্জরিদণ্ড লম্বা, ফুল ছোট, ঘিয়ে সাদা রঙের। তবে পরিণত ফুল ঈষৎ হলদে। ফল শিমের মতো। বর্তমানে গাছটিকে বিপন্ন মনে করা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সহজলভ্য। দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় এবং চওড়া ও ঘনবদ্ধ পাতার আচ্ছাদনের কারণে মাটির ক্ষয় রোধে এই গাছের ভূমিকা অনন্য।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"> </span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="position:relative"><span style="top:-2.0pt"><img alt="বিপন্ন শালবনের দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ" height="489" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/05-04-2024/EID-2024/1/kk-m-7l.jpg" style="float:left" width="300" />শালবনের ভুঁইচাঁপা</span></span></span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত শালবন যে কতশত প্রজাতির বৃক্ষ-লতা-গুল্মের স্বর্গরাজ্য, বিভিন্ন মৌসুমে সেখানে না গেলে উপলব্ধি করার সুযোগ নেই। প্রতিটি শালবনই প্রকৃতির বিস্ময়কর প্রাণবৈচিত্র্যের এক অফুরন্ত ভাণ্ডার যেন। ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল গাজীপুরের পাঁচপীরের মাজার এলাকায় ভুঁইচাঁপার গাছটি নজরে আসে। ভুঁইচাঁপা (</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Ochna pumila</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">) গুল্ম শ্রেণির গাছ, ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা দেড় থেকে ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা, গোড়ার দিক ক্রমশ সরু এবং খর্বাকার বৃন্তবিশিষ্ট, শীর্ষ তীক্ষ ও ধারালো ধরনের। একটি মঞ্জরিদণ্ডে ৩ থেকে ৬টি ফুল থাকতে পারে, পুষ্পবৃন্ত ২০ সেন্টিমিটার লম্বা। বৃত্যংশগুলো ডিম্বাকৃতির, দৈর্ঘ্যে পাপড়ির দুই থেকে তিন ভাগের এক ভাগ। ফুলের রং হলুদ সোনালি। পাপড়িসংখ্যা ৪, কিনারা অসমান। প্রস্ফুটনকাল এপ্রিল থেকে জুন। সাঁওতাল ও ওঁরাও আদিবাসীরা ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে গাছটির শিকড়ের পেস্ট ব্যবহার করে। আবার ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়ও আদিবাসীরা শিকড়ের ক্বাথ ছাগলের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করে। আমাদের দেশে সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামে এই গাছ দেখা যায়। এরা কনকচাঁপার আত্মীয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"> </span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উলটচণ্ডাল</span></span></b></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0in"><span style="font-size:10.5pt"><span style="line-height:10.5pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:-.1pt">একসময় ভেবেছি উলটচণ্ডাল আমাদের পালিত তরু। পরে শালবনে প্রাকৃতিকভাবে জন্মাতে দেখে ভুল ভাঙে। শালবনে একসময় প্রচুর পরিমাণে দেখা গেলেও এখন সংখ্যায় কমেছে। বিশেষত মধুপুর জঙ্গল ও উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে।  ফুলটি (</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:-.1pt">Gloriosa superba</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:-.1pt">) একেবারেই সংক্ষিপ্ততম সময়ের অতিথি হয়ে আসে আমাদের প্রকৃতিতে। চমৎকার ঔষধি গুণের জন্য ব্যাপক আদৃত। গাছ লতানো, পাতার আগা আকর্ষীতে রূপান্তরিত, তা দিয়েই আশ্রয় বেয়ে ওঠে। পাতা লম্বা, বোঁটাহীন, বিন্যাস</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বিপ্রতীপ। ফুল গ্রীষ্মের শেষে ও বর্ষায় ফোটে কাক্ষিক মঞ্জরিতে, এক বা একাধিক, গন্ধহীন, প্রথমে হলুদ, পরে কমলা ও লাল, পাপড়ি ৬টি, ওপরের দিকে উল্টানো, কিনারা কোঁচকানো, ৬ সেন্টিমিটার লম্বা। শরতে শুকিয়ে শীতে মরে যায়, গ্রীষ্মে আবার গুচ্ছমূল থেকে নতুন চারা গজায়। </span></span></span></span></span></span></p> <p class="body" style="text-align:justify; text-indent:0.15in"> </p>
