ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

‘শস্যের চেয়ে টুপি বেশী, ধর্মের আগাছা বেশী’

  • খাইরুল ইসলাম পলাশ, বাঘারপাড়া, যশোর
অন্যান্য
অন্যান্য
শেয়ার
‘শস্যের চেয়ে টুপি বেশী, ধর্মের আগাছা বেশী’
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

‘শস্যের চেয়ে টুপি বেশী, ধর্মের আগাছা বেশী।’ ‘লালসালু’ উপন্যাসে এই বক্তব্যের মধ্যেই প্রকাশ পায় বেশির ভাগ বাঙালির ধর্মীয় জ্ঞানের অজ্ঞতা, ধর্মভীরুতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির চিত্র। ধর্মভীরু মানুষকে কাজে লাগিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল করার প্রকৃষ্ট উদাহরণ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর এই উপন্যাস। একদিকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মভীরু শোষিত দরিদ্র মানুষ; অন্যদিকে প্রতারক, ধর্মব্যবসায়ী ও শোষক মাতবর-ভূস্বামী।

মহব্বতনগর গ্রামের পরিত্যক্ত একটি কবরকে মোদাচ্ছের পীরের মাজার হিসেবে চিহ্নিত করে, এত দিন এই মাজারকে গুরুত্ব না দেওয়া বা ফেলে রাখার দায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে এই উপন্যাসের কাহিনি। ভণ্ড মজিদ স্বার্থসিদ্ধির জন্য গ্রামের মাতবর, প্রতারক খালেক ব্যাপারীকেই সহযোগী হিসেবে বেছে নেয়। অল্প দিনের মধ্যেই ফুলেফেঁপে ওঠা মজিদ বিয়ে করে বিধবা যুবতি রহিমাকে। মজলিসি ঢঙের নিজস্ব বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে ধর্মবিষয়ক অজ্ঞানতার জায়গাটিকে আক্রমণ করে ধর্মভীরু মানুষকে বশে রাখার চেষ্টা করে মজিদ।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ালপুরের পীরসাহেবের উত্থানকে দমিয়ে দিয়ে, শিক্ষিত তরুণ আক্কাস আলীর স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়ে মূলত মজিদ নিজের শঠতার পথকে কণ্টকমুক্ত রাখে। কিন্তু মজিদের দ্বিতীয় স্ত্রী জমিলা মজিদের মুখে থুথু ছিটিয়ে দিয়ে, মাজারকে অবজ্ঞা করে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং ভেঙে দেয় মজিদের অস্তিত্ব। কাহিনি চরিত্র, ভাষাশৈলীর কারণে সমসাময়িক সমাজবাস্তবতা থেকে উত্তীর্ণ ‘লালসালু’ হয়ে উঠেছে চিরকালীন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

চরিত্রহীন

    রুদ্র অহম
শেয়ার
চরিত্রহীন

একদিন বিবেকবাবু ডাকলেন

বললেন, শোনো, আর যা-ই করো,

তোমার চরিত্র হারিয়ো না কখনো।

শুনে আমি খানিক বিস্মিত হলাম!

বললাম, বিবেকবাবু,

আপনি তো জানেন,

মদ-জুয়া কিংবা পরকীয়া

আমার কিছুতে আসক্তি নেই।

        তাহলে চরিত্র হারাব কিসে?

 

বিবেকবাবু হাসলেন।

বললেন, কিছু মানুষ আছে, যারা

সারাক্ষণ অন্যকে খুশি করতে,

অন্যের প্রিয়পাত্র হতে মত্ত থাকে।

কারোর অপ্রিয় হওয়ার সাহস নেই,

মাথা তুলে দাঁড়াবার মেরুদণ্ড নেই।

 

যেমন পানি। যে পাত্রেই রাখো,

তার আকার নেয়; নিজস্বতা নেই।

যার নিজের রুচি-পছন্দ-ইচ্ছে স্বতন্ত্র,

সে কখনো সকলের প্রিয় হয় না।

আর যে সকলের প্রিয়,

                   তার কোনো চরিত্র নেই।

মন্তব্য

বর্ষারূপ

    আসাদ কাজল
শেয়ার
বর্ষারূপ

অভিনব বর্ষা বুকের ভিতর কাঁদে

সৃষ্টিতত্ত্ব বর্ষার ভিতর চলাচল

বর্ষা বহমান প্রকৃতিতে অবিচল

আমি শুধু পড়ে থাকি স্বপ্নময় ফাঁদে।

 

প্রকৃতির মেঘ দূরে সরে যায়। তবু

প্রণয়সঙ্গিনী মনের ভিতর একা।

বর্ষাভেজা রাতে সংগোপনে দেয় দেখা

বর্ষায় নিভৃতে ডাকি স্বরচিত প্রভু।

 

কদমফুলের মতো তোমার দুচোখ

ভালোবেসে উপেক্ষা করেছি রাজ্য-রাজা

চৈত্র ভুলে পুরনো বর্ষায়যত শোক

ভুলে যাই আমি মনের সমস্ত সাজা।

 

তবু বর্ষা আসে, উদ্যমে গোপন সঙ্গ

বর্ষারূপ আমার ভিতর স্বপ্নভঙ্গ।

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

শান্তি

    ফারুক মাহমুদ
শেয়ার
শান্তি

তোমার বাগান থেকে তুলে আনা দুটি পাকা বীজ

                      রোপণ করেছি বারান্দার টবে

 

অপেক্ষা অপেক্ষা শুধুকবে হবে গাছ

সেই গাছে দুলে দুলে দুলতে থাকবে

শাখাছন্দ, অহরহ অগণিত সবুজ বাতাস

ফুলের প্রকাশ্য মুখ, থেকে থেকে সুরভিত গান

 

কোনো এক পুণ্যপ্রাতে দেখি

বীজ থেকে হতে হতে হয়ে ওঠা গাছে

প্রথম ফুটেছে কলি। মনে হলো তুমি বুঝি এলে

 

চেনা গন্ধ, চারপাশে প্রবাহিত শান্তিসত্যধারা

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রদর্শনী

আটাশ শিল্পীর নান্দনিকতা

    মোহাম্মদ আসাদ
শেয়ার
আটাশ শিল্পীর নান্দনিকতা
পুরনো ঢাকা শহর। শিল্পী : কামার উদ্দিন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। শিল্পী : মনজুর রশিদ

প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পীদের কাজ শিল্পপ্রেমীদের নজরে আসে। বিগত শতাব্দীতে এই গুরুদায়িত্ব শিল্পকলা একাডেমি পালন করত। ছিল কয়েকটি গ্যালারি। সেখানে বিশেষ কিছু শিল্পীই প্রদর্শনীর সুযোগ পেতেন।

অবশ্য সেই সময়ে শিল্পীর সংখ্যাও ছিল কম। এই শতাব্দীর শুরু থেকেই শিল্পকর্ম প্রদর্শনের ব্যাপকতা দেখা যায়। নানা রকম গ্যালারি ও সেন্টারে অনেকে নিজ দায়িত্বে একক প্রদর্শনী করছেন। হাজারো বৈচিত্র্যময় কাজ দেখতে পারছেন শিল্পকলাপ্রেমীরা।
প্রদর্শনীর ব্যয়বাহুল্যের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীর গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি দৃষ্টির আড়ালে থেকে যায়। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ লা গ্যালারিতে এস্থিক বা নান্দনিকতা শিরোনামে ভিন্ন এক প্রদর্শনীর কথা বলছি। ২৮ জন শিল্পীর ৩৩টি কাজ নিয়ে এই আয়োজন। শিল্পীরা সবাই প্রায় এই সময়ের শ্রেষ্ঠ কাজ উপহার দিয়ে চলেছেন।
বৈচিত্র্যপূর্ণ কাজের বিশাল সমাহারে প্রদর্শনীটি আলোকিত হয়ে উঠেছিল।

এই প্রদর্শনীর শিল্পীরা হলেন আবদুল্লাহ আল বশির, আব্দুস সাত্তার তৌফিক, আল-আখির সরকার, আনজুম সুলায়মান, অনুকূল চন্দ্র মজুমদার, আশফাক বাপ্পী, বিপ্লব চক্রবর্তী, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, কে জামান শিমুল, কামাল উদ্দিন, কামরুজ্জোহা, কাজী শহীদ, লুত্ফা মাহমুদা, মো. জিয়াউর রহমান, মনজুর রশিদ, মুনতাসির মঈন, নাঈম জামান, নাজিয়া আহমেদ, প্রদ্যুৎ কুমার দাস, রত্নেশ্বর সূত্রধর, রেজাউর রহমান, রুহুল আমিন তারেক, এস এম সাহা, আনিসুজ্জামান ফারুক, সৌরভ চৌধুরী, সুমন ওয়াহেদ, সৈয়দ গোলাম দস্তগীর, ত্রিবেদী গোপাল চন্দ্র গুপ্ত।

বিশাল এই প্রদর্শনীর কোনো আয়োজক প্রতিষ্ঠান নেই। নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে প্রদর্শনীটির শুরু। তার পরও একজন তো দায়িত্বভার বহন করেছেন।

তিনি হলেন মনজুর রশিদ। তিনি বলেন, একাকিত্বের গানে নির্মল আনন্দ আছে, কিন্তু কখনো কখনো তা একা করে ফেলতেও পারে শ্রোতাকে! দিনশেষে মানুষ মানুষের সাহচর্যই চায় সম্ভবত! একসঙ্গে অনেকে মিলে চলাটা আনন্দের, ঘটে প্রাণের সঞ্চালন! জীবনকে আমরা সহজ সুন্দর করেই উদযাপন করতে চাই। এই ২৮ জন শিল্পীকে একটি স্রোতে এনে দারুণ কিছু করার প্রয়াস মাত্র। ভবিষ্যতেও এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আশা করি।

কোনো বাণিজ্যিক চিন্তা ছাড়া এমন সুন্দর আয়োজনে শিল্পীরা যেমন উৎসাহিত হবেন, শিল্পকলাপ্রেমীরাও একই সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেখতে পারবেন।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ