চার সন্তানের জননী রাশিদা আক্তারের স্বামী মো. দেলোয়ার হোসেন গ্রামের একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে চাকরি করতেন। মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পেতেন। আত্মীয়দের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবন্ধী এক সন্তানের চিকিৎসাসহ তিন মেয়ের লেখাপড়া চালিয়েছেন। স্বামীর চাকরি চলে গেছে প্রায় ছয় মাস হলো।
ময়মনসিংহের নান্দাইল, ত্রিশাল, ফুলবাড়িয়া ও সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে সেলাই মেশিন বিতরণ
অসচ্ছল নারীদের স্বপ্নপূরণে বসুন্ধরা গ্রুপ
আবদুল হালিম ও মুস্তাফিজ নোমান

ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ইচাইল গ্রামের শিরিনা আক্তারের স্বামী রাসেল মিয়া ২০১৮ সালে মারা গেছেন। তিন শিশুসন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। বাড়ির জায়গাটুকু ছাড়া আর কোনো জমি নেই।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা সবাইকে সেলাই মেশিন দেওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁদের হাতে যাতায়াত ভাড়াও দিয়ে দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা। বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন ও যাতায়াত ভাড়া পাওয়ায় তাঁরা আরো আনন্দিত হন। অতিথিরা বলেন, শুভসংঘের মাধ্যমে এই সেলাই মেশিন উপহার হিসেবে বিতরণ, এটি আসলে দুই দিক থেকে ভালো উদ্যোগ। যাঁরা এটির সঙ্গে জড়িত, তাঁরা ভালো কাজে অনুপ্রেরণা পাওয়ার পাশাপাশি যাঁরা সহায়তা পেলেন, তাঁদের এটি আয়ের একটি উৎস তৈরি হলো। একটি মেশিন দিয়ে একটি পরিবারের চলা সম্ভব। সেলাই মেশিন নিয়ে অসচ্ছল পরিবারের নারীরা যেন সচ্ছলতার স্বপ্ন নিয়ে আনন্দে বাড়ি ফিরে যাবেন। একেকটি সেলাই মেশিন একেকটি পরিবারের সচ্ছলতার চাকা। পরিবারের কাজ ও লেখাপড়ার ফাঁকে প্রতিদিন একটি সেলাই মেশিন দিয়ে সালোয়ার-কামিজ, পেডিকোট, মেক্সি, শিশুদের প্যান্ট, ব্লাউজ তৈরি করে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করা সম্ভব প্রত্যেকের। এসব টাকায় তাঁরা সংসার ও নিজেদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নিতে পারবেন। সেলাই মেশিনের চাকায় ঘুরতে পারে তাঁদের ভ্যাগের চাকা। সেলাই মেশিন ক্রয় করার মতো সামর্থ্য এখানে কারো নেই। তাঁদের কাছে একটি সেলাই মেশিন ছিল স্বপ্নের মতো। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা শুভসংঘ বিনা মূল্যে তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছে একটি করে সেলাই মেশিন। এখন এই সেলাই মেশিন দিয়ে তাঁরা কাজ করে পরিবারের অনেককটা অভাব ঘোচাবেন। সুই-সুতায় স্বপ্ন বুনবেন।
সম্পর্কিত খবর

হার না মানা সুস্মিতা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ
বসুন্ধরা শুভসংঘ ডেস্ক

বাবা সমর চক্রবর্তী ছিলেন ব্যবসায়ী। তাঁর আয়েই চলত সংসার ও তিন সন্তানের লেখাপড়া। আকস্মিকভাবে তাঁর মৃত্যুতে স্ত্রী লক্ষ্মীরাণী চক্রবর্তী দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। দোকান চালানোর মতো আর কেউ না থাকায় বন্ধ হয়ে যায়।

রাশিদার সন্তানদের লেখাপড়াও চলবে নিশ্চিন্তে
বসুন্ধরা শুভসংঘ ডেস্ক

‘স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। না পারছি তাদের ঠিকভাবে খাওয়াতে, না পারছি লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে। এই বিষয়ে কাউকে কিছু না পারছি বলতে, পারছি না সহ্য করতে।’ তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন পেয়ে এভাবেই অনুভূতি জানাচ্ছিলেন রাশিদা বেগম।

দারিদ্র্য দূর করতে বসুন্ধরা গ্রুপের অনন্য উদ্যোগ
- ফারহান উদ্দিন আহমেদ পাশা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, বিএনপি কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট

গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের পাশে দাঁড়ানোর এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বসুন্ধরা গ্রুপ যে চিন্তা থেকে বাংলাদেশের একেবারে শেষ প্রান্তের জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জকে বেছে নিয়েছে, তাদের প্রতি অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পিছিয়ে পড়া এই উপজেলায় অসচ্ছল মানুষ যেমন আছে, তেমনি নদীভাঙন-বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যাও কম নয়। এসব পরিবারের অনেক ছেলেমেয়ে অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারছে না, নানাভাবে সমাজে লাঞ্ছিত হচ্ছে।

এই নারীরা একদিন সমাজের মডেল হবেন
- মাওলানা রুহুল আমিন, আমির, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট

আমাদের দেশের শিল্পপতিরা প্রতিদিন নাশতা খেতে বা সামান্য কাজে যত টাকা ব্যয় করেন, তা দিয়ে যদি সাধারণ মানুষের ভালো করার কথা চিন্তা করেন, তাহলে সমাজের জন্য তাঁরা অনেক কিছু করতে পারেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করেন। তাঁদেরই একজন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বসুন্ধরা গ্রুপ বা বসুন্ধরা শুভসংঘ ইচ্ছা করলে অসচ্ছল নারীদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন বিতরণ না করে এই টাকা অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারত।