<p>করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে দেশের সবচেয়ে বড় গরুর হাট যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ার সাতমাইল বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফলে জমজমাট বিশাল এই গরুর হাটের চেহারা রাতারাতি পাল্টে গেছে। সারা বছর যশোর এবং সাতক্ষীরা অঞ্চলের গরু ব্যবসায়ী এবং খামারিরা অপেক্ষায় থাকেন কোরবানির এই সময়টার দিকে। সাতমাইলের হাট থেকে গরু কিনে ব্যবসায়ীরা সারা দেশে গরুর প্রায় অর্ধেক চাহিদা পূরণ করে থাকেন। কিন্তু হাট বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা।</p> <p>দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ এই হাটটি বন্ধ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন এই এলাকার গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভারতীয় এবং স্থানীয় চাষি ও খামারিদের গরুতে গড়ে ওঠা সাতমাইল হাট গরু ও ক্রেতার অভাবে এখন খাঁ খাঁ করছে। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে পাঁচ হাজার গরু কেনাবেচা হয়ে থাকে এই হাটে। কোরবানির সময়ে এই সংখ্যা তিন গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়।</p> <p>গরুর এই হাট থেকে বছরে সরকারের টোল আদায় হয় প্রায় আড়াই কোটি টাকা। গত ২৩ জুন থেকে জেলা প্রশাসন শার্শায় লকডাউন ঘোষণার পর গত ২৬ জুন থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় এই পশুর হাট। দেশে করোনার এই ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যে সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলার গরুর হাট বন্ধ করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলার শর্তে সাতমাইল গরুর হাট পরিচালনার অনুমতি বহাল রাখে প্রশাসন। কিন্তু হাটের দিন হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি কোনোভাবে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা সম্ভব হচ্ছিল না। এদিকে কিছু মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে মারা যায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে, অবশেষে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এই হাটটি আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।</p> <p>সাতমাইল হাটের ইজারাদার আব্দুল খালেক খতিব ধাবক বলেন, ‘ছয় কোটি ১৫ লাখ টাকা দিয়ে হাটটি ইজারা নিয়েছি। এর শেয়ার রয়েছে তিন হাজার। প্রায় ১২০ জন লোক নিয়ে প্রতি হাট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হচ্ছিল। করোনার জীবাণু যাতে হাটে প্রবেশ করতে না পারে এর জন্য প্রবেশদ্বারে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় স্প্রে মেশিন। রয়েছে শতাধিক স্প্রে বোতল। তা ছাড়া আজ পর্যন্ত এই হাট থেকে একজন লোকও করোনায় আক্রান্ত হয়নি এবং মারাও যায়নি। এখন হাট বন্ধ করে দেওয়ায় কিভাবে সরকারের রাজস্বের ছয় কোটি টাকা পরিশোধ করব।’</p> <p>এ বিষয়ে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবীর বলেন, ‘খুলনা বিভাগসহ এই অঞ্চলে করোনা আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হলে যত দিন শার্শাবাসীকে টিকার আওতায় না আনা যাবে তত দিন সাতমাইল পশুর হাট বন্ধ রাখা দরকার।’</p>