ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫
৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ মহররম ১৪৪৭
রংপুরে ধান-চাল সংগ্রহে ভাটা

‘ধানেই হামার সম্বল’

স্বপন চৌধুরী, রংপুর
স্বপন চৌধুরী, রংপুর
শেয়ার
‘ধানেই হামার সম্বল’

‘এবার দাম কত বেশি হয় হউক, ধান বেচপার নও বাহে। করোনায় যে দিনকাল হইচে, কার ডাক কায় শোনে। আবাদি ধান ঘরোত থাউক, ধানেই হামার সম্বল। বউ-ছইল নিয়া নুন-ভাত খ্যায়া হইলেও তো বাঁচি থাকা যাইবে।

’ এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শহীদবাগের চাষি আকবর আলী।

শুধু তিনিই না, রংপুর অঞ্চলে এবার বোরো ধানের আশানুরূপ ফলন হলেও চাষিরা ধান না বেচে করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় ঘরে আটকে রাখার চেষ্টা করছেন। তাঁরা বলছেন, অন্য সব আয়ের পথ বন্ধ হয়েছে। তাই আপাতত কষ্ট হলেও উৎপাদিত ধানই তাঁদের ভরসা।

অন্যদিকে বিগত কয়েক বছরে ধানের দাম না থাকায় লোকসান গুনতে হয়েছে চাষিদের। এ বছর বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা খুশি। তাই তাঁরা নানা ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে সরকারি গুদামে ধান দিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কেউ কেউ খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা, অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানাবিধ কারণকে দায়ী করছেন।

ফলে শস্যভাণ্ডার বলে পরিচিত রংপুর অঞ্চলে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে ভাটা পড়েছে। তবে সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন খাদ্য কর্মকর্তারা।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল থেকে সারা দেশে বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু, কৃষকের তালিকা প্রস্তুতকরণসহ বিভিন্ন কারণে বিলম্ব হওয়ায় রংপুরে নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন পর এই কার্যক্রম শুরু হয়। এ বছর ৩৬ টাকা দরে সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা দরে আতপ চাল ও ২৬ টাকা দরে ধান কিনবে সরকার।

সংগ্রহ অভিযান চলবে আগস্ট পর্যন্ত। খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগের আট জেলায় দুই লাখ ৩২ হাজার ২২৮ টন চাল এবং এক লাখ ৪৩ হাজার টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে গত ২ জুলাই পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার টন এবং চাল সংগ্রহ হয়েছে আট হাজার টন। তবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চলবে।

সরেজমিনে এই অঞ্চলের হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় ধানের দাম বেশি হলেও বিক্রেতা কম। চাষিরা জানান, করোনাকালে নিজেদের জন্য মজুদ করায় একান্ত দায়ে না পড়লে তাঁরা ধান বিক্রি করছেন না। বর্তমান সময়ে প্রায় সর্বত্র প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকা থেকে ৯২০ টাকা দরে বেচা হচ্ছে। একইভাবে মোটা চালের খুচরা বাজারে এলাকা ভেদে ৩৯ থেকে ৪১ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। অথচ এই চালের সরকারি সংগ্রহ মূল্য কেজি প্রতি ৩৬ টাকা। এই হিসাবে দেখা যায় প্রতি মণ চালের সরকারি সংগ্রহ মূল্য প্রতি কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা কম। সে কারণে তালিকাভুক্ত অনেক চাষিই এখন পর্যন্ত সরকারি গুদামে ধান-চাল সরবরাহ করেনি।

গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টার চাষি শরিফুল ইসলাম, জোনাব আলী, পীরগাছা উপজেলার কল্যাণীর সাইদুর রহমান, মহিবুল ইসলাম, রংপুর সদরের গঞ্জিপুরের নয়া মিয়া ও শুকুর আলী অভিযোগ করেন, খাদ্যগুদাম কর্মকর্তারা ধান কেনার চেয়ে মিলারদের কাছ থেকে চাল কিনতে বেশি উৎসাহী। গুদামে ধান নিয়ে গেলে ময়েশ্চারের দোহাই দিয়ে তা কিনতে অনীহা প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ‘উপরি’ তো দিতেই হয়। অন্যদিকে হাসকিং মিল ও অটোমেটিক রাইস মিলের কয়েকজন জানিয়েছেন, এবার বাজারে ধানের দাম বেশি। ফলে গুদামে চাল সরবরাহ করতে গেলে কেজিপ্রতি দুই টাকা লোকসান হয়। ফলে তাঁরা ইচ্ছে থাকলেও চাল দিতে পারেননি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রংপুর অঞ্চলের খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরাও মহাবিপদে আছি। ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান নিয়ে ওপর মহলের চাপ আছে।’ পরিস্থিতি যথেষ্ট অনুকূলে থাকায় সংগ্রহ অভিযান সফল হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নির্যাতনে হাসপাতালে মুমূর্ষু মাদরাসাছাত্রী

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
নির্যাতনে হাসপাতালে মুমূর্ষু মাদরাসাছাত্রী

বরগুনার আমতলীর আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের চাউলা গ্রামে এক মাদরাসাছাত্রীকে এক বখাটে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় নির্যাতিত মেয়েটির বাবা গত সোমবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক বলে জানা গেছে। নির্যাতিত মেয়েটির বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিবেশী প্রভাবশালী নুর জামাল হাওলাদারের বখাটে ছেলে আমার মেয়েকে আটকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

এতে মেয়েটি গুরুতর আহত হয়ে এখন পটুয়াখালী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।’ আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন বলেন, ‘এখনো আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পাইনি। পাওয়া গেলে আদালতের নির্দেশমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

 

মন্তব্য

বজ্রপাতে দুই শ্রমিক নিহত

ধামইরহাট-পত্নীতলা ও ক্ষেতলাল প্রতিনিধি
ধামইরহাট-পত্নীতলা ও ক্ষেতলাল প্রতিনিধি
শেয়ার
বজ্রপাতে দুই শ্রমিক নিহত

নওগাঁর পত্নীতলায় জমি চাষ করার সময় বজ্রপাতে স্বাধীন (২৬) নামের এক ট্রলির চালকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার  সকালে উপজেলার পাটিচরা ইউনিয়নের পশ্চিম পাটিচরা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের রহমান সোনারের ছেলে। জানা গেছে, স্বাধীন সকাল থেকে পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) চালিয়ে আমন ধানের জমিতে হালচাষ করছিলেন।

এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এদিকে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শ্রমিকের কাজ করতে এসে বজ্রপাতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন (২৫) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ক্ষেতলাল উপজেলার সুলতানপুর পশ্চিম মাঠে ছকরতলীতে শ্রমিকের কাজ করা অবস্থায় বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলেই জসিমের মৃত্যু হয়। জসিম উদ্দিন গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের আনিছুল হকের ছেলে।

 

 

মন্তব্য

পানিতে ডুবে শিশুসহ দুজনের মৃত্যু

খুলনা অফিস ও শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
খুলনা অফিস ও শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
শেয়ার
পানিতে ডুবে শিশুসহ দুজনের মৃত্যু

খুলনা থেকে রূপসা নদী পার হওয়ার সময় অজ্ঞাতপরিচয় একটি শিশু নদীতে পড়ে মারা গেছে। গত বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ট্রলারের মাঝিরা অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার কারণে ওই শিশু নদীতে পড়ে যায়। ট্রলারটি পশ্চিম রূপসা খেয়াঘাট থেকে পূর্বপারে ভিড়লে আরো এক যুবক নদীতে পড়ে যান।

তখন ওই ট্রলারের যাত্রী রায়হান অতিরিক্ত লোক বোঝাই করার প্রতিবাদ করলে ঘাটের মাঝিরা একত্র হয়ে রায়হানকে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেন। অজ্ঞাতপরিচয় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে শিরিনা বেগম নামের এক গৃহবধূ পানিতে ডুবে মারা গেছেন। তিনি উপজেলার কায়েশপুর ইউনিয়নের বাতিয়ারপাড়ার নুর ইসলামের স্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশে ডোবায় কাপড় ধুতে গিয়ে ডোবার পানিতে পড়ে তিনি মারা যান।

মন্তব্য
সংক্ষিপ্ত

মাদকের বিরুদ্ধে ৯০০ শিক্ষার্থীর লাল কার্ড

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
শেয়ার
মাদকের বিরুদ্ধে ৯০০ শিক্ষার্থীর লাল কার্ড
রাউজান আরআরএসি মডেল সরকারি হাই স্কুলের মাঠে গতকাল মাদকের বিরুদ্ধে ৯০০ শিক্ষার্থীর লাল কার্ড। ছবি : কালের কণ্ঠ

‘আমি কখনো মাদক সেবন করব না, আমি কখনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়াব না। আমি সময় নষ্ট করে স্মার্টফোনে আসক্ত হব না।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এই শপথে মুখরিত হয় রাউজান আরআরএসি মডেল সরকারি হাই স্কুলের মাঠ। জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত সচেতনতামূলক এ কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিদ্যালয়ের প্রায় ৯০০ শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা একযোগে মাদক, দুর্নীতি, বাল্যবিবাহ ও স্মার্টফোন আসক্তির বিরুদ্ধে লাল কার্ড প্রদর্শন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ, লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি কাওসার আলম সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ ভূঁইয়া, দেবীদ্বার শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ সরকারসহ অন্যরা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ