<p>স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি রংপুরের কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে। এ স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ২৭টি ট্রেন চলাচল করে। মালপত্র ও যাত্রী পরিবহনে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় হলেও সেই তিমিরেই রয়ে গেছে স্টেশনটি। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না বাড়লেও দিন দিন বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ আর নাগরিক বিড়ম্বনা।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেন যোগাযোগের ক্ষেত্রে উত্তরাঞ্চলের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে এর মূল কার্যক্রম। এখানে নেই আধুনিক গণশৌচাগার। বিশ্রামাগারে যাত্রীদের বসার কোনো পরিবেশ নেই। অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। হকারদের দখলে পুরো প্ল্যাটফর্ম। স্টেশন দিয়ে অবাধে চলাফেরা করছে গবাদি পশু। স্টেশন-সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে টিকিট।</p> <p>রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ৯টি আন্ত নগর, আটটি মেইল, চারটি লোকাল ও ছয়টি কমিউটার ট্রেন চলে এই রেল জংশন দিয়ে। অথচ কাউনিয়া জংশন স্টেশনটিতে জনবল সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে কার্যক্রম। বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে স্টেশনের মূল্যবান কাগজপত্র নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে। নানা সমস্যা থাকলেও গত অর্থবছরে স্টেশন থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় হয়েছে।</p> <p>যাত্রীদের অভিযোগ, গণশৌচাগার না থাকায় মহিলা যাত্রীদের বিড়ম্বনার শেষ থাকে না। একটি প্রথম শ্রেণির ওয়েটিং রুম থাকলেও কোনো আয়া নেই সেখানে। পরে দ্বিতীয় শ্রেণির একটি ওয়েটিং রুম তৈরি করা হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুজন সুইপার কাগজে-কলমে থাকলেও তাঁদের কাজে দেখা যায় না। খাবার পানির জন্য দুটি টিউবওয়েল থাকলেও বেশির ভাগ সময় তা নষ্ট থাকে। রেলওয়ে মেডিক্যালের অস্তিত্ব অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ট্রেনে কাটা রোগী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।</p> <p>অপেক্ষমাণ যাত্রী আবির হোসেন বলেন, কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে টিকিট কালোবাজারি তো আছেই, সেই সঙ্গে রয়েছে প্ল্যাটফরমজুড়ে নেশাখোরদের উৎপাত। স্থানীয়রা জানায়, বর্ষা মৌসুমে স্টেশনের চাল ও ছাদ চুইয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে।</p> <p>এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টিকিট কালোবাজারির কথা অস্বীকার করেন স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ। তবে জনবল সংকটের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ স্টেশনে ৩৭ জন স্টাফের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ২১ জন। সমস্যা আছে, তবে ধীরে ধীরে এর উন্নয়নও হচ্ছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’</p>