<p>ঘাটাইলে অবাধে চলছে পাহাড় কাটা। বন ধ্বংসের পর লাল মাটির টিলা কাটার প্রতিযোগিতায় নেমেছে পাহাড়খেকোরা। তারা পাহাড়ের উঁচু উঁচু টিলা কেটে মাটি বিক্রি করছে। আর এ মাটি দিয়ে চলছে পুকুর-জমি ভরাট।</p> <p>অন্যদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে টিলা কেটে বাড়ি তৈরির ধুম। ক্ষমতাসীনদের ছত্রচ্ছায়ায় একটি চক্র বন বিভাগের সংরক্ষিত জমিতে ভ্যাকু (মাটিকাটা মেশিন) দিয়ে রাতদিন পাহাড় কাটলেও দেখার কেউ নেই।</p> <p>উপজেলার বন বিভাগের ধলাপাড়া রেঞ্জের চৌরাশা বিট, বটতলা বিট ও দেওপাড়া বিট এলাকার দেলুটিয়া, গৌরীশ্বর, বারইপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উঁচু উঁচু টিলা কেটে বন বিভাগের জমিতেই বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।</p> <p>একদিকে পাহাড়ি উঁচু টিলা কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে, অন্যদিকে বিরামহীনভাবে চলছে বাড়ি করার হিড়িক। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।</p> <p>উপজেলার পাহাড়িয়া অঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লাল মাটির টিলা কেটে অসংখ্য বসতি স্থাপন করা হয়েছে।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, সংরক্ষিত বন ধ্বংসের পর বন বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই পাহাড় কাটার মহাউৎসব চলছে। বন কর্মকর্তাদের হয়রানির ভয়ে এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে চাইছে না।</p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2019/05 May/12-05-2019/Kalerkantho_19-05-12-11.jpg" style="float:left; height:136px; margin:8px; width:150px" />উপজেলার কাছরা গ্রাম থেকে বারইপাড়া হয়ে দেওপাড়া বাজার পর্যন্ত গেলে চোখে পড়ে পাহাড় কাটার নানা দৃশ্য। এই এলাকায় অবস্থিত নানা উচ্চতার টিলাগুলো কাটা হচ্ছে দিবালোকে। আর মাটি নিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কাছরা গ্রামের সোনা মিয়ার পুকুর।</p> <p>এ ব্যাপারে সোনা মিয়া বলেন, ‘আমি আমার পুকুর ভরাট করতে ছামনা গ্রামের সাইদের সঙ্গে চার লাখ টাকায় চুক্তি করেছি। সে পাহাড় কেটে মাটি এনে পুকুর ভরাট করছে। পাহাড় কাটার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’</p> <p>ছামনা গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী সাইদ বলেন, ‘টিলাটি দেলুটিয়া গ্রামের মনসুরের রেকর্ডের জমি জেনেই মাটি কাটতে গিয়েছিলাম। স্থানীয় প্রশাসন নিষেধ করায় মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি।’</p> <p>এদিকে বটতলা বিটের গৌরীশ্বর মৌজার শাল-গজারি বনঘেরা জানেরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভ্যাকু দিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আ. হামিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিকাটা বন্ধ করে দিয়েছি। পাহাড় কাটার আইনি কোনো বৈধতা নেই, সেটা যে জমিই হোক। এলাকায় পাহাড় কাটা বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p> <p>ঘাটাইলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূর নাহার বেগম বলেন, ‘পাহাড় কাটা দণ্ডণীয় অপরাধ। দেলুটিয়ায় পাহাড় কাটা হচ্ছে—এ খবর পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাউকে পাইনি। তাই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পাহাড়খেকোদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’</p>