সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পর্যটনকেন্দ্র সংলগ্ন রেলওয়ের রোপওয়ের (রজ্জুপথ) সংরক্ষিত এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে হাবিবুর রহমান (৩৫) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গত শনিবার রাতে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের বাংকার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হাবিবুর রহমান উপজেলার কলাবাড়ী গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি একইভাবে অবৈধভাবে পাথর তুলতে গিয়ে প্রাণ দেন আরেক শ্রমিক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো গত শনিবার রাতেও রেলওয়ের রোপওয়ের সংরক্ষিত এলাকায় গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করতে যান হাবিবুর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরো দুজন শ্রমিক।
হাবিবুর গর্ত থেকে পাথর উত্তোলন করছিলেন। বাকি দুজন মাথায় পাথর বহন করে নৌকায় নিয়ে রাখছিলেন।
কাজের এক পর্যায়ে হঠাৎ ওপর থেকে বালু ধসে পড়ে। এতে হাবিবুর বালুচাপা পড়েন। এ সময় তাঁর সঙ্গী দুজনের চিৎকারে আশপাশে থাকা লোকজন এগিয়ে এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় হাবিবুরের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। পরে নিহতের স্বজনরা বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে লাশ বাড়ি নিয়ে যান।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য লাশ বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।’
পুলিশ জানায়, গত ১৩ জানুয়ারি সকালে একই এলাকায় অবৈধভাবে পাথর তুলতে গিয়ে বালুধসে লিটন মিয়া নামের এক শ্রমিক প্রাণ হারান। এ নিয়ে চলতি বছর রেলওয়ের রোপওয়ে বাংকার এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে দ্বিতীয় প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।
ভোলাগঞ্জ পাথরকোয়ারি, শাহ আরেফিন টিলা ও বাংকার এলাকার পাথর লুটপাটের পর সাদা পাথর এলাকায় গত ২৩ এপ্রিল থেকে একটি চক্র পাথর লুট শুরু করেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র রজ্জুপথটি (রোপওয়ে) বাংকার এলাকায় অবস্থিত। রোপওয়ে এলাকাই সংরক্ষিত বাংকার হিসেবে পরিচিত। ১৯৬৪ সালে ভোলাগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জের ছাতকে পাথর পরিবহনের জন্য স্থল বা জলযানের বিকল্প হিসেবে ১১৯টি খুঁটির মাধ্যমে তৈরি হয় এই রোপলাইন। এ এলাকায় টিলার মতো সামান্য উঁচু ভূমি ও সমতল মাটির নিচে আছে ছোট-বড় অসংখ্য পাথর। জানা গেছে, রাতের বেলায় প্রশাসনের কোনো নজরদারি থাকে না। তখন পাথর লুট করে বিভিন্ন চক্রের সদস্যরা।