ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল

লিফটের অপেক্ষায় মারা যাচ্ছে রোগী

  • মেডিসিন ওয়ার্ডের সব লিফটই বিকল
  • কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৬টির মধ্যে ৬টি লিফট সচল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
শেয়ার
লিফটের অপেক্ষায় মারা যাচ্ছে রোগী
লিফট বন্ধ থাকায় রোগীকে স্ট্রেচারে করে সিঁড়ি ভেঙে ওপরে তুলছেন স্বজনরা। সম্প্রতি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছবি : কালের কণ্ঠ

পেটের যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন অঞ্জলী রানী। তাঁর মা সুমতী বালা সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন মেয়েকে। মাথায় হাত রেখে বলছিলেন, এই তো হাসপাতালে চলে এসেছি মা। কাছেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল (শেবাচিম) কলেজ হাসপাতাল।

অ্যাম্বুল্যান্সে পাশে থাকা বড় বোনের সান্ত্বনা, হাসপাতালে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আর একটু সহ্য করো। চালককে তরুণীর স্বামী বিমল কৃষ্ণের অনুরোধ, ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। ভাই আরেকটু জোরে চালান?

প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে কাউখালী থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে এসে থামল শেবাচিম হাসপাতালের সামনে।

গত সোমবার রাত তখন ৮টা ছুঁই ছুঁই। জরুরি বিভাগ থেকে অঞ্জলীকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো মেডিসিন ওয়ার্ডে। এসে দেখেন সব লিফট বন্ধ। রোগীকে কোনো রকমে স্ট্রেচারে (ট্রলি) চাপিয়ে সিঁড়ি ভেঙে তিনতলায় তুললেন তাঁর স্বজনরা।
ভর্তি করলেন মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে। আগৈলঝাড়া উপজেলার এক তরুণী বিষ পান করেছেন। ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। রাত তখন পৌনে ১০টা। জরুরি বিভাগে ভর্তি করার পর সেখানে রোগী বহনের ট্রলি ছিল না।
ট্রলির জন্য ছোটাছুটি করতে গিয়ে প্রায় ২০ মিনিট কেটে যায়। এরপর চারতলা থেকে ফেরত আসে একটি ট্রলি। তাতে তোলা হয় ছটফট করতে থাকা তরুণীকে।

কিন্তু বিপত্তি তখনো কাটেনি। টানা বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের বেশির ভাগ এলাকা ডুবে রয়েছে অন্ধকারে। তাই লিফট অচল। বাধ্য হয়ে স্বজন, ট্রলিবাহকসহ পাঁচ-ছয়জন ট্রলি তুলে নেন কাঁধে। মুঠোফোনের আলো জ্বেলে তাঁরা নিয়ে যান তিনতলার মেডিসিন ওয়ার্ডে। এতে আরো ১০ থেকে ১৫ মিনিট চলে যায়। ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। ওয়ার্ডে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানালেন, রোগী বেঁচে নেই। সম্প্রতি শেবাচিম হাসপাতালের ঘটনা এটি।

শুধু এই দুটি ঘটনা নয়; প্রতিদিন লিফট নিয়ে কোনো না কোনো অঘটন ঘটছেই। হাসপাতালের ১৬টি লিফটের মধ্যে ১২টি বিকল। মূল ভবনের ১০টি লিফটের মধ্যে আটটি অচল। মেডিসিন ওয়ার্ডের সব লিফটই বিকল। লোডশেডিংয়ের সময় অস্ত্রোপচার কক্ষ ও ব্ল্যাড ব্যাংক চালু রাখতে গিয়ে সচল থাকা সব লিফট বন্ধ থাকে। তখন রোগীকেও স্ট্রেচারে চাপিয়ে সিঁড়ি ভেঙে চারতলায় তোলেন তার স্বজনরা।

দরজা আছে, লিফট নেই : ২০১৯ সালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ও পুরনো ভবনে আলাদাভাবে ছয়টি লিফট স্থাপনে দরপত্র আহবান করে গণপূর্ত বিভাগ। লিফট সরবরাহ এবং স্থাপনের কাজ পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। তারা ২০২০ সালে লিফট স্থাপনের কাজ শুরু করে। এর মধ্যে পাঁচটি লিফট স্থাপন করেন। তবে হাসপাতালের মাঝের ই-ব্লকের ৫ নম্বর লিফটি স্থাপন করেনি। ক্রিয়েটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড লিফটির পরিবর্তে সেখানে শুধু গেট লাগিয়ে দিয়েই সব বিল তুলে নিয়েছে। ভেতরে কোনো ধরনের মেশিনারি নেই।

লিফট আছে, যাত্রী নেই : হাসপাতালের উত্তর দিকের চার তলার ভবনটি করোনার সময় করোনা ওয়ার্ড হিসেবে চালু করা হয়েছিল। সেটি এখন মেডিসিন ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবনের প্রবেশদ্বারে দুটি সচল লিফট রয়েছে। ভবনের অভ্যন্তরে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে চিকিৎসক আর নার্সদের জন্য আরো একটি সচল লিফট রয়েছে।

মেডিসিন ভবনের দোতলার উত্তর-পশ্চিম কোণে লিফটের সামনে রোগীদের শয্যা রয়েছে। সেই শয্যায় রোগী রয়েছে। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লিফটি ব্যবহার হচ্ছে না।

কর্তৃপক্ষ যা বলছে : লিফটের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম। তিনি বলেন, মেডিসিন ওয়ার্ডের তিনটি লিফটই তিন দিন ধরে বিকল। সেগুলো সচলের চেষ্টা চলছে। ওই ভবনে সচল থাকা একটি লিফট ব্যবহৃত হচ্ছে না। লিফটের সামনে তাই রোগীর জন্য শয্যা বিছানো রয়েছে। তাঁর দাবি ১৬টির মধ্যে ছয়টি লিফট সচল। 

প্রকৌশলী ফিরোজ আলম আরো বলেন, হাসপাতালে সার্ভিসের জন্য লিফট নেই। স্ট্রেচারে চাপিয়ে শুধু রোগী নয়, খাবার আর ওষুধ ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। এই কাজটি করতে গিয়ে লিফট বারবার বিকল হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, লোডশেডিংয়ের সময় অস্ত্রোপচার কক্ষ ও ব্ল্যাড ব্যাংক চালু রাখার জন্য হাসপাতালে দুটি পুরনো জেনারেটর আছে। সেগুলো প্রায়ই অচল থাকে। ফলে লোডশেডিংয়ের সময় লিফট বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

হাসপাতালের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, রোগীদের উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতালটি। এক হাজার শয্যার এই হাসপাতালে দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থাকে। সঙ্গে জনপ্রতি দুজন স্বজন থাকছেন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার রোগী চিকিৎসা নেয়। জরুরি বিভাগে ৫৫০ থেকে ৬০০ রোগী চিকিৎসা নেয়। এর বেশির ভাগই আবার ভর্তি হয়। সে তুলনায় লিফট খুবই নগণ্য। যেগুলোর আছে, তার বেশির ভাগই বিকল থাকছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মা বললেন ‘ও বাবা, আমার রায়েশা কই’

বিকেল ৩টা। চারদিকে হৈচৈ। একটির পর একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকছে আর বের হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঠিক সে সময় সন্তানের খোঁজে এক মা দৌড়ে স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। আর্মির ব্যারিকেডে তিনি আর সামনে আগাতে পারেননি। থেমে গিয়ে মা রাইমা হোসেন ওই সৈনিককে জিজ্ঞেস করেন, ও বাবা, আমার রায়েশা কই? গতকাল মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর সরেজমিনে এই চিত্র দেখা যায়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়েশা আলমকে খুঁজতে তার মা রাইমা হোসেন স্কুলের গেটের সামনে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরাই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়।

 

মন্তব্য

দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুর্ঘটনার খবর বিশ্ব গণমাধ্যমে

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের এ খবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের খবর জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। 

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি ঢাকায় স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৬ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৯, আহত হয়েছে শতাধিক। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে থাকা চীনের তৈরি একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়া চলাকালে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার বলেছে, বাংলাদেশে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঢাকার একটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইক, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে এক্সপ্রেস, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের এই বিমান বিধ্বস্তের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

মন্তব্য
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর অভিমত

৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৭ শিশুর পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, যে ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পেয়েছেন, তারা সবাই শিশু। এর মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা লাগবে।

তবে সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে মোট ২০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। সায়েদুর রহমান বলেন, তাঁদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রাথমিক মূল্যায়নে ২৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ সময় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, আজ তাদের রক্তের প্রয়োজন নেই। আগামীকাল (মঙ্গলবার) রক্তের প্রয়োজন হবে। তাই আজ আর কারো কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

নাসির উদ্দীন বলেন, ইনফেকশন (সংক্রমণ) হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়তে পারে।

তাই হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এলেও রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

 

মন্তব্য
মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়ে চিরবিদায় নিলেন শিক্ষিকা মেহরিন
মেহরিন চৌধুরী

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরীর বীরত্ব ও আত্মত্যাগ এখন দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করছে। প্রাণপণ চেষ্টা করে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর নিজের। তাঁর ভাই মানাফ এম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে টেলিফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

তাঁদের বেশির ভাগই ছুটে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

৪৬ বছর বয়সী মেহরিন চৌধুরী শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাঁর মৃত্যুর খবর সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ক্লাসরুম থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে ফেলেন মেহরিন। তাদের নিরাপদে বের করে দিতে গিয়ে নিজে আর সময়মতো বের হতে পারেননি। উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা সদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে গিয়ে বাচ্চাগুলারে বের করে দিছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষিকা মেহরিনের সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

মানবিকতা, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইলেন মেহরিন চৌধুরী। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচিয়ে নিজে হারিয়ে গেলেন। একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভোলার নয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ