এই মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভূমিকা পালনে চীন বড় মাপের কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ইসলামাবাদের সঙ্গে ‘খুব ভালো সম্পর্ক’ থাকলেও বেইজিং প্রতিবেশীদের মধ্যে আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা কম। তারা মনে করেন, দেশটির কাছে বরাবরের মতো অর্থনৈতিক স্বার্থটাই মুখ্য। তাই সামরিক হামলার মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার পরও চীন সংযমের আহবান জানিয়েছে।
চীন অনন্তকাল নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ হারাচ্ছে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক লিন মিনওয়াং বলেছেন, ‘চীন আলোচনার নেতৃত্ব দিতে খুব কমই সক্ষম হবে’। তিনি বলেছেন, ‘ভারত সব সময় মনে করে যে তারা চীনের সমান আকারের এবং চীনের সমান স্তরের, তাই চীনের মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করা তাদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন।’
মেলবর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এশিয়ান স্টাডিজের সিনিয়র লেকচারার প্রদীপ তানেজা বলেছেন, চীন কূটনৈতিকভাবে ‘পাকিস্তানের মূল সমর্থক’, ‘যদি এই সংঘাত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে পরিণত হয়, তাহলে চীন অবশ্যই এর দ্বারা প্রভাবিত হবে, এই অর্থে যে চীনকে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে।
তিনি বলেন, ভারত তার দুই প্রতিবেশীর গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার এবং ‘গ্লোবাল সাউথকে রক্ষা করার’ ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতার কারণে এটি চীনের অবস্থানকে ‘অবশ্যই জটিল’ করে তুলবে।
তবে বিশ্লেষকরা এটাও বলছেন, পশ্চিমারা সামরিক সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে ভারতকে। আর চীন দিচ্ছে পাকিস্তানকে। এই সামরিক সাহায্য দিন দিন বাড়ছে।
এশিয়ার এই অংশ এমনিতেও ঝুঁকিপূর্ণ। তিনটি দেশ এখানে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী—চীন, ভারত ও পাকিস্তান। এদের মধ্যে অস্ত্র সরবরাহের প্রবাহ পুরোপুরি পাল্টে গেছে। ভারত ঐতিহ্যগতভাবে নিরপেক্ষ দেশ ছিল।
ওদিকে আফগানিস্তান যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রাসঙ্গিকতা আর আগের মতো নেই। পাকিস্তান এখন আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্রও কিনছে না। পাকিস্তান এখন ঝুঁকেছে চীনের দিকে। সেখান থেকে কিনছে তাদের বেশির ভাগ অস্ত্র। বিশ্লেষকরা তাই আশঙ্কা করছেন, এসব সম্পর্ক বদলের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশের সবচেয়ে পুরনো দুশমনি এক নতুন মোড় নিয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র একদিকে চীনকে মোকাবেলা করতে ভারতকে আশকারা দিচ্ছে। অন্যদিকে চীন নিজের বিনিয়োগ ও পৃষ্ঠপোষকতা বাড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের জন্য।
একই সময়ে সীমান্তে জায়গা নিয়ে চীন আর ভারতের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই দুই দেশের সেনারা জড়াচ্ছেন সংঘাতে। ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কযুদ্ধ শুরু করার পর দুই পরাশক্তি চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্মরণকালের মধ্যে খারাপ অবস্থার মধ্যে গিয়ে ঠেকেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সব মিলিয়ে এ অঞ্চলে শত্রু আর মিত্রের হিসাব একেবারে পাল্টে গেছে। ভারতের নিরাপত্তার স্বার্থে এখন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। অন্যদিকে পাকিস্তানের জন্য একই ভূমিকা নিচ্ছে চীন। ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র এতটা জোরালোভাবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়নি।
সম্পর্কিত খবর

ইউনিসেফের শোক
শিশুদের গোপনীয়তা রক্ষা ও দায়িত্বশীল সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ চলাকালে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত ও হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি বেঁচে যাওয়া শিশুদের পরিচয় ও গোপনীয়তা রক্ষা এবং দায়িত্বশীলভাবে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার শোক প্রকাশ করে ইউনিসেফ বাংলাদেশে তাদের ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতি পোস্ট করে। বিবৃতিতে বলা হয়, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতিসংঘের পতাকা অর্ধনমিত রেখে জাতির সঙ্গে শোক দিবস পালন করছে ইউনিসেফ।
আহতদের দ্রুত ও সম্পূর্ণ সুস্থতা কামনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণহানি হয়েছে, যার মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। আমরা আমাদের গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি সেই সব পরিবারের সদস্যদের প্রতি, যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন।’ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

‘বোনের কাছে আমার লাশটা পৌঁছে দিয়ো’
বিশ্বজিৎ পাল বাবু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মা সমিরন বেগম মারা গেছেন প্রায় ১৫ বছর আগে। একমাত্র ভাই থাকেন প্রবাসে। বাবা অসুস্থ। একমাত্র বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।
শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন মাসুকা (৪০)। বিমান দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন।

মাইলস্টোনে অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ে যা বলল আইএসপিআর
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উত্সুক জনতা ঘটনাস্থল ত্যাগ না করায় উদ্ধারকাজে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। একদল উত্সুক জনতার সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি ও বাদানুবাদের সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে আইএসপিআর। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআর জানায়, গত সোমবার দুপুর আনুমানিক ১টা ১৮ মিনিটে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়।
উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে দুর্ঘটনাস্থলে উত্সুক জনতার ব্যাপক ভিড় দেখা দেয়, যা ইভাকুয়েশন ও রেসকিউ কার্যক্রমকে বারবার ব্যাহত করে।
আইএসপিআর আরো জানায়, উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে বিকেলের দিকে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কিছু উত্সুক জনতা ঘটনাস্থল ত্যাগ না করায় উদ্ধারকাজে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
ফলে একদল উত্সুক জনতার সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি ও বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়, যা এক পর্যায়ে একটি অনভিপ্রেত ঘটনার অবতারণা করে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে থেকে পেশাদারি ও সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধের সঙ্গে কর্তব্য পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

শেওড়াপাড়ায় আবাসিক ভবনে আগুন, ৭ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শেওড়াপাড়ার একটি চারতলা আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে আগুন লেগে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে আধাঘণ্টার মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে দক্ষিণ শেওড়াপাড়ার ৫৩২ নম্বর ভবনের আগুনের তথ্য পায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৬টা ৪৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।