সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশের ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের দ্রুত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।
এ সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগারে এখনো যেসব প্রবাসী বন্দি রয়েছেন, তাঁদের দ্রুত মুক্তি ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী সাবেক কনসাল জেনারেল বি এম জামালসহ জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতফেরত প্রবাসী খালেদ সাইফুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীরা স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে মিছিল এবং রেমিট্যান্স বন্ধের কর্মসূচি পালন করেন। মিছিলকে কেন্দ্র করে আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে অনেক প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাজা দেওয়া হয়। এ ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন কনসাল জেনারেল জামালের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ওই তালিকার সূত্র ধরে আমাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর দীর্ঘদিন তাদের হেফাজতে ও পরবর্তী সময়ে জেলে রাখে। জেলে নেওয়ার পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ১০ থেকে ২৫ বছর বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। পরে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা কয়েক শ প্রবাসী মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পেরেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি তুলে ধরে খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আরব আমিরাতসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের মধ্যে যাঁরা বিদেশে যেতে চান, তাঁদের সরকারি উদ্যোগে বিনা খরচে বিদেশে পাঠাতে হবে।
যাঁদের দেশে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে, যোগ্যতা অনুসারে তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রবাসী দেশে যাঁরা ব্যবসায়ী ছিলেন এবং নতুন করে যাঁরা উদ্যোক্তা হতে চান, তাঁদের ব্যাংক অথবা যেকোনো সংস্থার মাধ্যমে বিনা সুদে প্রয়োজনীয় লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বয়স্ক ব্যক্তিদের বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’ আরব আমিরাতফেরত এই প্রবাসী বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশফেরত প্রবাসীদের দেওয়া নো-এন্ট্রি তুলে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মতো একটি ট্রাস্ট গঠন করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ফিরে আসা প্রবাসী মুহাম্মদ পারভেজ, ফরিদ শাহিন, মিজানুর রহমান, রাজিব খান, তপু সরকার প্রমুখ।