বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী পদত্যাগ করেছেন। গতকাল সোমবার সংস্কৃতিসচিব খলিল আহমদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।
২০১১ সালের ৭ এপ্রিল শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান লাকী। এরপর টানা এক যুগের বেশি সময় এই পদে ছিলেন।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ সপ্তমবারের মতো তাঁর মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ানো হয়। এত দীর্ঘ সময় শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে থাকার নজির আর কারো নেই।
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় লিয়াকত আলী লাকীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল দুদক। তাঁর অপসারণ দাবিতে আন্দোলনও করেছে সংস্কৃতিকর্মীদের একাংশ।
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যখন পদত্যাগ করছিলেন, তখনো অনড় ছিলেন লাকী। যদিও এই কয়েক দিন তিনি শিল্পকলা একাডেমিতে যাননি। ৬ আগস্ট একাডেমিতে মহাপরিচালকের দপ্তরসহ অন্তত ১৫ জন কর্মকর্তার কক্ষে তালা দেয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষুব্ধ একটি অংশ। মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর ‘দুর্নীতির’ অভিযোগের নথি যেন সরিয়ে ফেলা না হয়, বিক্ষুব্ধরা সেটি প্রতিহত করার কথাও বলেন।
এই কয়েক দিন সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করেননি লাকী।
লাকী নাট্যকর্মীদের বৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতির পদেও রয়েছেন। অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েন লাকী। এর প্রতিক্রিয়ায় ফেডারেশন ছাড়ে নাসির উদ্দীন ইউসুফের নাট্যদল ঢাকা থিয়েটার।
গত রবিবার লাকীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তারা শিল্পকলা একাডেমিতে গেলে ধাওয়া ও মারধরের শিকার হন।
অন্যদিকে সোমবার লিয়াকত আলী লাকীর একাডেমির মহাপরিচালকের পদত্যাগ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান এবং পথনাটক পরিষদের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দাবিতে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ’-এর ব্যানারে ‘থিয়েটারকর্মী সমাবেশ’ ডাকা হয়। বিকেল ৫টায় জাতীয় নাট্যশালার ফটকের সামনে এই সমাবেশ হওয়ার আগেই শিল্পকলা একাডেমি থেকে লাকীর পদত্যাগের খবর আসে।